অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের পর দেশবাসীকে আশ্বস্ত করলেন মমতা!
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে চলমান উত্তেজনার আবহে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক সেরে মুখ খুললেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক মতপার্থক্য ভুলে দেশের স্বার্থে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার বার্তা দিলেন তিনি। পাশাপাশি, জনগণকে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থাকার পরামর্শও দেন।
মঙ্গলবার রাতভর ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মাধ্যমে পাকিস্তান এবং পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে ভারতীয় সেনার জঙ্গি ঘাঁটিতে প্রিসিশন স্ট্রাইক চালানোর পর থেকেই সীমান্ত অঞ্চলে উত্তেজনা তুঙ্গে। তার পরদিনই ভারতের সীমান্তবর্তী ১০টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন অমিত শাহ। সেই বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার।
বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। কিন্তু অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একসঙ্গে কাজ করব— এই সিদ্ধান্তে আমরা সবাই ঐক্যমত।” তিনি আরও জানান, প্রশাসন ও পুলিশকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। রাজ্যের প্রতিটি থানাকে সজাগ থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, বাড়ানো হয়েছে নজরদারিও।
সাম্প্রতিক ঘটনাবলির পেছনে রয়েছে পহেলগাঁওয়ে ভারতীয় জওয়ানদের উপরে হওয়া সন্ত্রাসবাদী হামলা, যার পাল্টা জবাব হিসেবেই এই সামরিক অভিযান চালানো হয়। এই পরিস্থিতিতে গুজব বা প্ররোচনামূলক তথ্য ছড়ানো রুখতে কড়া অবস্থান নিয়েছে রাজ্য সরকার। মমতা বলেন, “যে কোনও খবর যাচাই না করে বিশ্বাস করা উচিত নয়। বিভ্রান্তিমূলক বা উস্কানিমূলক প্রচারের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তিনি আরও জানান, রাজ্যের সমস্ত প্রশাসনিক দফতরের ছুটি বাতিল করা হয়েছে, যাতে প্রয়োজনে সবাই মাঠে নেমে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে পারে।
এতকিছুর মধ্যেও মমতা একজোট হওয়ার ডাক দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “আমরা সবাই দেশের পক্ষে। এই মুহূর্তে রাজনীতি নয়, দেশের নিরাপত্তা এবং জনগণের শান্তিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।”
অন্যদিকে, বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সীমান্তবর্তী অঞ্চলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাজ্য প্রশাসনগুলিকে বেশ কিছু দিকনির্দেশ দেন। বলা হয়েছে, সীমান্তে যদি পরিস্থিতি আরও জটিল হয়, তবে যেন দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানানো যায়।
এই পুরো পরিস্থিতিতে মমতার বার্তা সাধারণ মানুষের মধ্যে খানিকটা আশ্বাসের সুরই বয়ে আনে। আতঙ্ক নয়, সচেতনতা—এটাই এখন সময়ের দাবি।

