Monday, December 1, 2025

কাশ্মীর ট্র্যাজেডির পর পাশে রাজ্য সরকার—বিতান ও সমীরের পরিবারের হাতে আর্থিক সহায়তা তুলে দিলেন দুই মন্ত্রী

Share

বিতান ও সমীরের পরিবারের হাতে আর্থিক সহায়তা!

কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে বেড়াতে গিয়ে মর্মান্তিক জঙ্গি হানায় প্রাণ হারিয়েছিলেন বাংলার তিন সন্তান—বেহালার সমীর গুহ, পাটুলির বিতান অধিকারী ও পুরুলিয়ার মণীশরঞ্জন মিশ্র। দেশের গর্ব হয়ে ওঠা এই তিন সাধারণ মানুষ পরিণত হলেন দেশের নিঃশব্দ শহিদে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই ঘোষণা করেছিলেন, এই বিপুল ক্ষতির মুখে দাঁড়িয়ে সরকার নিহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াবে। সেই প্রতিশ্রুতিই বাস্তবায়িত হল মঙ্গলবার।

সমবেদনা নয়, বাস্তব সাহায্যের হাত

ঘটনার ঠিক এক সপ্তাহের মাথায় নিহত বিতান অধিকারী ও সমীর গুহর বাড়িতে পৌঁছন রাজ্যের দুই মন্ত্রী—ফিরহাদ হাকিম ও অরূপ বিশ্বাস। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো দুই পরিবারকে তুলে দেওয়া হয় আর্থিক সহায়তার চেক—প্রতিজনের জন্য ১০ লক্ষ টাকা করে। মন্ত্রীরা জানান, এটি শুধুই দুঃখের সান্ত্বনা নয়, বরং পরিবারের পাশে থাকার বাস্তব প্রয়াস।

বিতানের নিঃশব্দ সংগ্রামের গল্প

বিতান অধিকারী ছিলেন আমেরিকার ফ্লোরিডার একজন সফল পেশাজীবী। সপরিবারে বেড়াতে এসেছিলেন কাশ্মীরে। তাঁর স্ত্রী ও সাড়ে তিন বছরের ছেলেকে নিয়ে ছুটি কাটাতে গিয়ে জঙ্গি গুলিতে প্রাণ হারান তিনি। কলকাতার পাটুলিতে স্ত্রী থাকলেও, তাঁর বৃদ্ধ বাবা-মা থাকেন শহরের অন্য একটি প্রান্তে। বিতান ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্য।

এই বিবেচনায় মুখ্যমন্ত্রীর তরফে একটি মানবিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়—বিতানের স্ত্রী ও বাবা-মাকে সমানভাবে ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, বিতানের বাবা-মাকে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা করে পেনশনও দেবে রাজ্য সরকার।

সমীর ও মণীশর অকাল প্রয়াণেও শোকস্তব্ধ বাংলা

বিতানের মতোই সমীর গুহ ও মণীশরঞ্জন মিশ্র কাশ্মীরে পরিবার নিয়ে গিয়েছিলেন ছুটি কাটাতে। পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় যখন জঙ্গিদের গুলি বৃষ্টি শুরু হয়, তখন তাঁরা ছিলেন সেই প্রাণঘাতী হামলার কেন্দ্রে। দু’জনই ঘটনাস্থলেই নিহত হন।

মুখ্যমন্ত্রী আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, রাজ্য সরকার তাঁদের পরিবারের জন্যও ১০ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেবে। মণীশের পরিবারের প্রতিও সেই প্রতিশ্রুতি পালনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে বলে জানা গেছে।

রাজ্য সরকারের মানবিক বার্তা

এই মর্মান্তিক ঘটনার পর শুধু অর্থসাহায্য নয়, নিহতদের পরিবারের পাশে থাকার মানবিক দায়ও তুলে ধরেছে রাজ্য প্রশাসন। দুঃসময়ে রাজ্যের তরফে এমন সহানুভূতি ও বাস্তব পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে এক আশার বার্তা—বাংলা হারালে কাঁদে, কিন্তু ফেলে রাখে না।

পহেলগাঁওয়ের রক্তাক্ত সকাল হয়তো ফিরিয়ে দিতে পারবে না হারানো প্রিয়জনদের, কিন্তু রাজ্যের এই সহানুভূতির হাত অন্তত বুঝিয়ে দেয়—তাঁরা একা নন।

বিহারের বিধানসভা নির্বাচনে মহাগঠবন্ধন: একসঙ্গে সব আসনে লড়াইয়ের ঘোষণা তেজস্বী যাদবের

Read more

Local News