Monday, December 1, 2025

দিলীপের পাশে ‘সহযোদ্ধা’ রিঙ্কু: আশীর্বাদ না নতুন অস্বস্তির কারণ?

Share

দিলীপের পাশে ‘সহযোদ্ধা’ রিঙ্কু!

দু’সপ্তাহ আগে দিলীপ ঘোষের জীবনে এক বড় মোড় ঘুরল—তিনি বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হলেন রিঙ্কু মজুমদারের সঙ্গে। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বহু সহকর্মী পেয়েছেন তিনি, কিন্তু এই প্রথম বার একজন “সহধর্মিণী” হয়ে উঠলেন তার “সহযোদ্ধা”। দিঘার সফরকালে এই নতুন সম্পর্কের রাজনৈতিক প্রতিফলন স্পষ্ট হয়ে উঠল। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, রিঙ্কু কি সত্যিই দিলীপের জন্য আশীর্বাদ? না কি নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন?

দিঘা সফরের সময় দিলীপের একটি নির্ধারিত চা-চক্র বাতিল হয়ে যায় বিজেপির জেলা নেতৃত্বের আপত্তিতে। অভিযোগ, জেলা সভাপতির অনুমতি ছাড়াই দিলীপ সেখানে হাজির হন। তখনই নজরে আসেন সদ্য বিবাহিতা রিঙ্কু মজুমদার। আত্মবিশ্বাসী ভঙ্গিতে তিনি বিক্ষুব্ধ কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে এগিয়ে যান। যেন বলছেন, “দিলীপ না পারলেও আমি পারব!” কিন্তু বাস্তবে তেমন কিছুই হয়নি। স্থানীয় কর্মীরা বুঝিয়ে দেন—এই বিষয়ে কথা বলার অধিকার তাঁর নেই।

এখানেই প্রশ্ন উঠছে—কে রিঙ্কু মজুমদার? কেন তিনি দিলীপের হয়ে মুখ খুলছেন? বিজেপির অন্দরেই এই নিয়ে অসন্তোষ দানা বাঁধছে।
এক রাজ্য কমিটির সদস্য বলছেন, “রিঙ্কু তমলুক জেলার দায়িত্বে নেই। তিনি দক্ষিণ কলকাতার মহিলা মোর্চার এক সেলের দায়িত্বে ছিলেন। অতএব কোলাঘাটের ঘটনায় তার হস্তক্ষেপ অনুচিত।” তাঁর আরও বক্তব্য, “বিজেপিতে পরিবারের সদস্যদের সাংগঠনিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ কংগ্রেসি সংস্কৃতি। এটা আমাদের দলে হয় না।”

তবে রিঙ্কু নিজে দাবি করেছেন, তিনি ২০১৩ সাল থেকে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত। যদিও বিজেপির অন্য সূত্র বলছে, তিনি দলে যোগ দিয়েছেন ২০১৭-১৮ নাগাদ। শুরুতে ছিলেন রাজারহাটে মণ্ডল স্তরের পদে, পরে হ্যান্ডলুম সেলের জেলা দায়িত্বে আসেন। নিজের গাড়িতে ঘুরে বেড়ানো, চাঁদা দেওয়া—সবই করতেন তিনি। কিন্তু মহিলা মোর্চার কোনও শীর্ষ নেত্রী তাঁকে আগে চিনতেন না।

এই পরিস্থিতিতে দলের একাংশ বলছে, রিঙ্কুর হঠাৎ উত্থান এবং রাজনৈতিক সক্রিয়তা অনেকেরই অস্বস্তির কারণ। কারণ, একজন নেতার স্ত্রী হিসাবে তাঁর ভূমিকা ও এক্সপোজার স্বাভাবিক, কিন্তু সেটি যদি সাংগঠনিক ভারে পরিণত হয়, তখন প্রশ্ন ওঠে—এই কি ‘পরিবারতন্ত্রের’ সূচনা?

আবার অন্য একটি অংশ বলছে, দিলীপের পাশে একজন বিশ্বস্ত এবং রাজনৈতিকভাবে সচেতন জীবনসঙ্গিনী থাকায় তাঁর অনেক সুবিধাও হচ্ছে। দলে যখন কোন্দল চলছে, তখন রিঙ্কু কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াতে পারছেন, এটাই বা কম কী?

শেষমেশ, দিলীপ নিজে অবশ্য বলে দিয়েছেন—“কোনও সুবিধা বা অসুবিধা হয়নি, দিলীপ ঘোষ একাই লড়তে পারে।” কিন্তু বাস্তব বলছে, তাঁর একার লড়াইতে এখন যুক্ত হয়েছে আরেকটি কণ্ঠস্বর। এখন দেখার, সেই কণ্ঠস্বর দলে নয়া শক্তি আনে, না কি তৈরি করে নতুন বিভাজন।

কাশ্মীরে টানা ৮ দিন সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন, পাঁচ জায়গায় গুলি পাক সেনার! পাল্টা জবাব দিল ভারতীয় সেনাও

Read more

Local News