Monday, December 1, 2025

১০৫ বছরের ঐতিহ্যে থমকে ইস্টবেঙ্গল: নেতৃত্ব বনাম লগ্নিকারী টানাপোড়েনে কোথায় মুক্তির রাস্তা?

Share

১০৫ বছরের ঐতিহ্যে থমকে ইস্টবেঙ্গল!

এক সময় বাংলার ফুটবলের রাজা ছিল ইস্টবেঙ্গল। মাঠে নামলেই সমর্থকেরা গলা ছেড়ে গাইত—‘আমরা ইস্টবেঙ্গল, লাল-হলুদের ঝড়।’ কিন্তু সেই সোনালি অতীত আজ শুধু স্মৃতি। বছরের পর বছর ট্রফির মুখ না দেখা, মাঠে দর্শকের সংখ্যা কমে যাওয়া, আর ক্লাবের অন্দরে বিরোধের আগুনে ধুঁকছে ১০৫ বছরের ইতিহাস।

সমস্যা কোথায়? দায় কার?

নেতৃত্বে দ্বন্দ্ব না কি অর্থের টানাপোড়েন?

‘ইমামি হটাও, ক্লাব বাঁচাও’ স্লোগানের উত্তরে শোনা যায়, ‘‘নীতুদা যত দিন আছেন, ক্লাব বাঁচবে!’’—এই ‘নীতুদা’ হলেন দেবব্রত সরকার, ইস্টবেঙ্গলের বহু পুরনো কর্তা। তাঁর অনুরাগীরা মনে করেন, তিনিই ক্লাবকে আইএসএলে টিকিয়ে রেখেছেন। অথচ এক বিরাট অংশ সমর্থকের দাবি, নীতু থাকলেই ক্লাব চলবে না। বিনিয়োগকারী সংস্থার কোটি কোটি টাকার বিনিময়ে মাঠে আধিপত্য তৈরি হওয়া উচিত, সেখানে কর্তারা গায়ে পড়ে হস্তক্ষেপ করলে ফল হয় ইস্টবেঙ্গলের মতো ধারাবাহিক ব্যর্থতা।

গত তিন বছরে আইএসএলে নবম স্থান—এই ‘সাফল্য’ই ইস্টবেঙ্গলের বর্তমান অবস্থার প্রতিচ্ছবি। একই সময়ে মোহনবাগান জিতে নিচ্ছে আইএসএলের ট্রফি। কিছু ইস্টবেঙ্গল সমর্থক যদিও বলেন, ‘‘ওরা তো বিকিয়ে গেছে। আমরা এখনও ক্লাবের আত্মা ধরে রেখেছি।’’

ব্যর্থতার খতিয়ান: মাঠে ফাঁকা গ্যালারি আর ট্রফির শূন্যতা

মাঠে সাফল্য নেই। যুবভারতীতে ইস্টবেঙ্গলের খেলা মানেই অর্ধেকেরও কম দর্শক। আই লিগের নাম পরিবর্তনের পর থেকে কোনো বড় ট্রফি ক্লাবের ক্যাবিনেটে আসেনি। দু’টি ফেডারেশন কাপই শেষ অর্জন, যেগুলি এসেছে সুব্রত ভট্টাচার্য ও মর্গ্যানের কোচিংয়ে।

রাজনৈতিক প্রভাব বনাম ক্লাব রাজনীতি

দীর্ঘদিন ধরে ক্লাব কার্যত বিরোধীশূন্য। সিপিএমের মানস মুখোপাধ্যায় থেকে শুরু করে একাধিক প্রাক্তন কর্তারাও নীতুর বিরুদ্ধে টিকতে পারেননি। ফল, ‘ফাঁকা মাঠে গোল’ করে নিজের ঘনিষ্ঠদের নিয়ে একচেটিয়া দখল রেখেছেন তিনি। সমালোচকেরা একে বলছেন ‘সরকার-রাজ’।

কিছু বছর আগে যুবভারতীতে ঝুলেছিল পোস্টার—‘দড়ি ধরে মারো টান, সরকার-রাজ খান খান।’ পুলিশ এসে সেই ব্যানার খুলে দিয়েছিল, কিন্তু সুর যেন থেকেই গিয়েছে।

নীতুর জবাব: “টাকা আছে, কিন্তু গড়ার ক্ষমতা নেই!”

আনন্দবাজারের প্রশ্নের উত্তরে দেবব্রত সরকার বলেন, “আমি কোনও পদে নেই, শুধু একজন কর্তা। ক্লাবের জন্যই কাজ করি। আগে টাকা ছিল না, তাই দল গড়া কঠিন ছিল। এখন টাকা আছে, কিন্তু আমরা দল গড়তে পারি না—এটাই দুঃখ।”

উপসংহার: কে বাঁচাবে ইস্টবেঙ্গল?

নেতৃত্ব পালটে, না কি সম্পূর্ণ বিনিয়োগকারীর হাতে ক্লাব ছেড়ে দিয়েই ঘুরে দাঁড়াবে ইস্টবেঙ্গল? সমর্থকের হৃদয়ের দল কি আবার ফিরে পাবে তার হারানো গৌরব? উত্তর সময়ই দেবে, তবে প্রশ্নটা এখনই জ্বলন্ত—“ক্লাব আগে, না কর্তার ইগো?”

কাশ্মীরে টানা ৮ দিন সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন, পাঁচ জায়গায় গুলি পাক সেনার! পাল্টা জবাব দিল ভারতীয় সেনাও

Read more

Local News