একের পর এক হারে বিধ্বস্ত ইস্টবেঙ্গল!
একশো বছরের ঐতিহ্য, গর্বের ইতিহাস— সব কিছু থাকা সত্ত্বেও ইস্টবেঙ্গলের মাঠে যেন এখন শুধুই অন্ধকার। কলকাতা ময়দানের এই লাল-হলুদ বাহিনী এক সময় ছিল ভারতীয় ফুটবলের শীর্ষে। আর ইংল্যান্ডের ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড? তাদের নামই ইতিহাস। তবু আজকের দিনে এই দুই ক্লাব যেন দাঁড়িয়ে একই সঙ্কটের মুখে। ব্যর্থতা, অনিশ্চয়তা আর ভাঙা স্বপ্ন— এতটাই মিল যে, দু’টি ক্লাবের মাঝে ৮ হাজার কিলোমিটার দূরত্ব থাকলেও মানসিক অবস্থান যেন একেবারে কাছাকাছি।
বিনিয়োগ আর দ্বন্দ্বের ফাঁদে
২০১৮ সাল থেকে শুরু। কোয়েস, শ্রী সিমেন্ট, তারপর ইমামি— একের পর এক বিনিয়োগকারী বদলেছে ইস্টবেঙ্গলে। মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব, চুক্তি ভাঙন আর মাঠে হতাশাজনক পারফরম্যান্স যেন নিত্যসঙ্গী। আইএসএলে পাঁচ বছর পার করেও কখনও নবম স্থানের উপরে উঠতে পারেনি তারা। একই দৃশ্যপট ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডেও। গ্লেজার পরিবারের পর মালিক হয়েছেন জিম র্যাটক্লিফ, কিন্তু সাফল্য কোথায়? খরচ কমাতে গিয়ে দলগঠনই হয়ে উঠেছে দুর্বল।
কোচ বদল— সমাধান না সমস্যার জন্ম?
ইস্টবেঙ্গলে ২০১৮ থেকে আট কোচ বদল। কার্লেস কুয়াদ্রাত একমাত্র যিনি ট্রফি দিয়েছিলেন, কিন্তু তাকেও মরসুমের শুরুতে বিদায় নিতে হয়। ব্রুজ়ো এসেও জিততে পারেননি। ওদিকে ইউনাইটেডে স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের পর থেকে যেন শুরু হয়েছে কোচ-পরীক্ষার পালা। একের পর এক নাম, কিন্তু সাফল্য নেই কারোরই।
নামী ফুটবলার, কিন্তু ফল শূন্য
দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোস, মাদিহ তালাল থেকে শুরু করে আনোয়ার আলি— অনেক নাম এসেছে লাল-হলুদ শিবিরে। কিন্তু মাঠে পারফরম্যান্স নেই। ইউনাইটেডের অবস্থাও তাই। ব্রুনো ফের্নান্দেস, কাসেমিরো, ম্যাসন মাউন্ট— কোটি কোটি টাকার তারকাও ক্লাবের হাল ফেরাতে পারেননি।
ফাঁকা গ্যালারি, হতাশ সমর্থক
এক সময় ইস্টবেঙ্গলের খেলা মানেই গ্যালারিতে উপচে পড়া ভিড়। এখন দশ হাজার সমর্থকও পাওয়া যায় না। একই ছবি ইউনাইটেডেও। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের ফাঁকা আসন দেখে প্রশ্ন উঠছে, এই কি সেই ইউনাইটেড?
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর সাফল্যে দগ্ধ হৃদয়
ইস্টবেঙ্গল যখন খাদের কিনারে, তখন মোহনবাগান ট্রফির পর ট্রফি জিতছে। ইউনাইটেড যখন হোঁচট খাচ্ছে, তখন ম্যানচেস্টার সিটির জয়রথ থামছেই না। ‘বন্ধু ফেল করলে দুঃখ হয়, বন্ধু প্রথম হলে আরও বেশি’— এই সংলাপ যেন এদের গল্পেই মানায়।
শেষ কথা— ইতিহাসে থাকা যায় না। গৌরব ফিরিয়ে আনতে হলে প্রয়োজন ধারাবাহিকতা, দূরদর্শী পরিকল্পনা এবং সবচেয়ে বড় কথা, ক্লাব ও বিনিয়োগকারীর মধ্যে স্বচ্ছতা। নইলে শতবর্ষের ক্লাবও শুধুই স্মৃতির নাম হয়ে থাকবে।
আর আপনি কী মনে করেন— ইস্টবেঙ্গল ঘুরে দাঁড়াতে পারবে?
পহেলগাঁও হামলা: বলিউডের তারকাদের ক্ষোভের মুখে কেন্দ্রীয় সরকারকে তীব্র বার্তা

