আনন্দপুরে রহস্যঘেরা অভিযানে ধৃত ৮!
আবারও আতঙ্কের ছায়া কলকাতার আনন্দপুরে। এই এলাকাতেই ফের একবার ধরা পড়ল একটি সন্দেহজনক দল। হাতে আগ্নেয়াস্ত্র, ধারালো অস্ত্র, আর সঙ্গে ছিল দু’টি হাতে আঁকা মানচিত্র। পুলিশের সন্দেহ, বড়সড় কোনও ‘অপরাধমূলক’ কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা ছিল তাদের।
কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (STF) গোপন সূত্রে খবর পেয়েই নেমে পড়ে মাঠে। বৃহস্পতিবার রাতে আনন্দপুর থানার অন্তর্গত বাসন্তী হাইওয়েতে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় আটজনকে। পুলিশ বলছে, ধৃতরা কিছু একটা ঘটানোর পরিকল্পনায় ছিল, যদিও ঠিক কী তা স্পষ্টভাবে জানানো হয়নি। তবে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র আর মানচিত্র সন্দেহের মাত্রা অনেকটাই বাড়িয়েছে।
ধৃতদের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে:
- তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র
- একাধিক রাউন্ড গুলি
- একটি কুঠার
- একটি বড় ছুরি
- দড়ি
- দু’টি হাতে আঁকা মানচিত্র
তারা একটি গাড়িতে ছিল, সঙ্গে চলছিল একটি বাইকও। গাড়ির ভেতর থেকেই উদ্ধার হয় ওই ছুরি। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, এই দলটি কোথাও হানা দেওয়ার পরিকল্পনা করছিল এবং মানচিত্রের মাধ্যমে লক্ষ্যবস্তু চিহ্নিত করা হয়েছিল।
ধৃতদের মধ্যে অন্যতম কার্তিক রাম, যিনি দক্ষিণদাড়ির (লেকটাউন) বাসিন্দা। তাঁর বয়স ৪৮ বছর। বাকিরা—সুরজ চৌধুরী, অঙ্কিত চৌধুরী, শঙ্কর চৌধুরী (৫৩), মহম্মদ তাহির আলি, নেতাই সিংহ, হায়দর আলি এবং মিজানুর জমাদার—হাওড়ার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। এঁদের বয়স ২১ থেকে ৩৬ বছরের মধ্যে। শুক্রবার ধৃতদের আদালতে তোলা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে আনন্দপুর এলাকায় উদ্বেগ বাড়ছে। কারণ, গত মার্চ মাসের শেষদিকেও এই একই এলাকায় ধরা পড়েছিল এক দম্পতি, যাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছিল ১১টি আগ্নেয়াস্ত্র! একের পর এক এমন ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে, আনন্দপুর কি ক্রমেই হয়ে উঠছে অপরাধের আঁতুড়ঘর?
যদিও পুলিশের তৎপরতায় বড় কোনও বিপদ এড়ানো গেছে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। তবে স্থানীয়দের মনে আতঙ্ক কাটেনি এখনও। এরা কোন চক্রের সঙ্গে যুক্ত, বা এদের পেছনে কে আছে—এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে পুলিশ শুরু করেছে জোরালো তদন্ত। উদ্ধার হওয়া মানচিত্র খতিয়ে দেখা হচ্ছে, খুঁজে দেখা হচ্ছে কোথায় হানা দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের।
এই গ্রেপ্তারের পর আনন্দপুর এবং সংলগ্ন এলাকায় পুলিশি নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে। কোনও অস্বাভাবিক গতিবিধি চোখে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানানোর জন্য স্থানীয়দেরও অনুরোধ জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, কলকাতার মতো শহরের বুকেই যদি বারবার এমন অস্ত্র ও চক্রান্তের জাল ধরা পড়ে, তবে নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে ভাবনা জরুরি। পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপ স্বস্তি দিলেও, এর পেছনে লুকিয়ে থাকা বড় ষড়যন্ত্র কতটা গভীর, তা খুঁজে বার করাই এখন চ্যালেঞ্জ।
পহেলগাঁও হামলা: বলিউডের তারকাদের ক্ষোভের মুখে কেন্দ্রীয় সরকারকে তীব্র বার্তা

