শক্ত পিচে ‘মাস্টারক্লাস’ কোহলির!
চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের কড়া পিচে বল উঠছিল বুকসমান, বাউন্সার ছুটছিল গলা বরাবর। এমন কঠিন উইকেটে ব্যাটিং কি সহজ? সেই প্রশ্নের উত্তর নিজেই দিলেন বিরাট কোহলি। তাঁর ধৈর্য, মাপা শট, আর সময় জেনে খেলার কৌশল এই ম্যাচে জয় এনে দিল বেঙ্গালুরুকে। আর সেই সঙ্গে ১৪ বছরের বৈভব সূর্যবংশীর জন্য রেখে গেলেন এক অমূল্য পাঠ—শক্ত উইকেটে ব্যাটিং মানে শুধু বড় শট নয়, বরং সঠিক সময়, পজিশন আর বুদ্ধির খেলা।
চতুর্থ ম্যাচে আইপিএলের আসরে ২০৫ রানের পাহাড় গড়ল বেঙ্গালুরু। সেই রানের ভিত গড়ে দিলেন কোহলি একাই। পিচে বল থেমে আসছিল, জফ্রা আর্চারের গতিময় বাউন্সারে ব্যাটে লাগছিল কানায়। তখনই কোহলি বুঝলেন, মারতে গেলে বিপদ। তাই তিনি ফিরে গেলেন নিজের ক্লাসিক স্টাইলে—ভালো বল বেছে বেছে, সময় নিয়ে খেলা। যেটা মারার মতো, সেটাকেই বাউন্ডারিতে রূপান্তর। বাকি সময় স্ট্রাইক ঘোরানো, রান নেওয়া। আর সেই দক্ষতায় ৪২ বলে ৭০ রান করলেন তিনি।
অন্যদিকে, তরুণ বৈভব সূর্যবংশী যেন উত্তেজনায় ভুলে গেলেন পরিস্থিতির গুরুত্ব। মাত্র ১৪ বছর বয়সে আইপিএল অভিষেক তাঁর কাছে স্বপ্নপূরণ, কিন্তু সেই স্বপ্নকেই বাস্তবে বদলাতে গেলে চাই ধৈর্য। দ্বিতীয় ম্যাচে নামার পর প্রতিটি বলেই ছক্কার চেষ্টা! দুটো মারলেন ঠিকই, কিন্তু বাকি সময়ে ছন্দ হারালেন, উইকেটও দিলেন সহজে।
ডাগ আউটে বসে কোহলিকে দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন বৈভব। কীভাবে পেস বোলিং সামলে নিতে হয়, কীভাবে শিশিরের সুবিধাকে কাজে লাগাতে হয়—সবই লাইভ টিউটোরিয়াল ছিল ওর সামনে। তবু, মাঠে নেমে ভুল করলেন বৈভব। ভুবনেশ্বর কুমার, হেজ়লউডদের মতো সিনিয়রদের সামলানোর বদলে ওভার অ্যাগ্রেসিভ শট খেলে আউট হলেন দ্রুত।
সাবেক ক্রিকেটার সুনীল গাভাস্কর যেমন বললেন, “বোলারের নাম শুনে খেলতে হয়। বিশ্বসেরা পেসারদের বিরুদ্ধে একটু সময় নিয়ে খেলাই সবচেয়ে বড় বুদ্ধিমানের কাজ।”
যশস্বী জয়সওয়াল সেটা করে দেখালেও বৈভব শিখল না। উইকেট ছেড়ে মারার ঝোঁকে হারিয়ে ফেলল নিজের জায়গা পাকা করার সুযোগ। যাঁর বদলে দলে এসেছে, সেই অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন ফিরলে ফের বেঞ্চেই বসতে হবে তাকে।
তবে এখানেই গল্পের শেষ নয়। কারণ বৈভব পেয়েছে এক জীবন্ত পাঠশালা—বিরাট কোহলি নামের ক্রিকেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সরাসরি ক্লাস! শিখতে পারলে এই ভুলই একদিন তার সাফল্যের ভিত গড়বে।
অন্যদিকে, রাজস্থান ম্যাচ জয়ের মতো পরিস্থিতিতে থেকেও আবার হারল। শেষ আট ওভারে ৮০ রান করতে না পারার দায় মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায়। জুরেল-হেটমেয়ারদের অনিয়মিত ব্যাটিংই ডুবিয়ে দিল দলকে।
সব মিলিয়ে, কোহলির ব্যাটিং যেমন অনুপ্রেরণা, তেমনই বৈভবের হঠকারিতা তরুণ ক্রিকেটারদের জন্য এক শিক্ষণীয় বার্তা—ট্যালেন্ট গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু টেম্পারামেন্ট আরও বড়।
পহেলগাঁও হামলা: বলিউডের তারকাদের ক্ষোভের মুখে কেন্দ্রীয় সরকারকে তীব্র বার্তা

