ফ্লরিডার বিশ্ববিদ্যালয়ে রক্তাক্ত দুপুর!
আবারও বন্দুকের গর্জনে কেঁপে উঠল আমেরিকা। এ বার ভয়াবহ গুলির ঘটনাটি ঘটেছে ফ্লরিডার এক বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। বৃহস্পতিবার দুপুরে হঠাৎই সেখানে ঢুকে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে এক যুবক। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দু’জনের। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আরও পাঁচজন। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা ক্যাম্পাসে।
জানা গিয়েছে, ওই বন্দুকবাজের নাম ফিনিক্স ইকনার। বয়স মাত্র কুড়ি বছর। চমকে দেওয়ার মতো তথ্য হল— সে এক ডেপুটি শেরিফের ছেলে এবং সেই বিশ্ববিদ্যালয়েরই প্রাক্তন ছাত্র। পুলিশ জানিয়েছে, গুলি চালানোর সময় তার হাতে ছিল মায়ের পুরনো বন্দুক। সেই অস্ত্রেই নির্বিচারে গুলি চালাতে শুরু করে সে।
বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে হঠাৎ গুলির শব্দ শুনে আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করেন ছাত্রছাত্রীরা। অনেকেই আত্মরক্ষার জন্য আশ্রয় নেন ক্লাসরুম বা লাইব্রেরিতে। পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনী। পুলিশের পালটা গুলিতে আহত হয় অভিযুক্ত ফিনিক্স। বর্তমানে সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, যে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে তাঁরা কেউই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া নন। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঘটনাটি কেন ঘটল, কী উদ্দেশ্য ছিল ফিনিক্সের— তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত কিছুদিন আগে শেরিফ অফিসে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল। ফলে আগ্নেয়াস্ত্র সম্পর্কে সে প্রশিক্ষিত ছিল, আর সেই সুযোগকেই কাজে লাগিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠন আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের নিরাপদ জায়গায় সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। ঘটনার পরেই সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে একটি ভিডিও, যেখানে দেখা যায়, এক যুবক হাতে বন্দুক নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে হাঁটছেন এবং পালাতে থাকা মানুষজনের দিকে গুলি ছুঁড়ছেন। যদিও এই ভিডিওর সত্যতা এখনো যাচাই হয়নি।
এই ঘটনায় আমেরিকায় আবারও নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে আগ্নেয়াস্ত্র আইন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার বাস্তবতা নিয়ে। বারবার বন্দুক হামলার সাক্ষী থেকেও কার্যকর কোনও পদক্ষেপ না হওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
পুনরায় এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি বোঝায়, শুধুমাত্র নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতা যথেষ্ট নয়— প্রয়োজন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণে কঠোর আইন ও সামাজিক সচেতনতা। এখন শুধু অপেক্ষা, ফিনিক্সের জবানবন্দিতে উঠে আসে এমন কোনও সত্য যা ভবিষ্যতে এমন মর্মান্তিক ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে সাহায্য করতে পারে।
ফ্লরিডার এই ঘটনার পর আমেরিকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে আরও কড়া নজরদারি চালু হতে চলেছে বলেই অনুমান। তবে ততদিনে হারিয়ে গিয়েছে দুটি তরতাজা প্রাণ— যাদের আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।
জয়ী সিংহ ফতেহ্সিন! ৮ বছরের অপেক্ষার পর বাবা হলেন জাহির খান, খুশির হাওয়া লখনউ শিবিরে

