কালীঘাট থেকে মুর্শিদাবাদে বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর
অশান্ত মুর্শিদাবাদে সম্প্রতি যে উত্তেজনা ছড়িয়েছে, তার সরাসরি উল্লেখ না করেই, সোমবার কালীঘাট থেকে গভীর বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওয়াকফ আইন নিয়ে প্রতিবাদের আবহে কালীঘাট স্কাইওয়াক উদ্বোধনের মঞ্চে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী সকলকে সতর্ক করলেন, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া যাবে না— নাম না করেও তার ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট।
💬 “আঘাত এলে আমরা পাশে থাকি”— মানবিক বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর
মমতা বলেন, “কারও উপর আঘাত এলে, সে যেই ধর্মের হোক না কেন— অবহেলিত, শোষিত, বঞ্চিত বা নির্যাতিত— আমরা পাশে দাঁড়াই। মানুষের প্রতি ভালোবাসা যদি না থাকে, তবে ধর্মের কী মূল্য?” তাঁর এই বক্তব্যে মানবতার বার্তা স্পষ্টভাবে উঠে আসে।
🙏 “ধর্ম নয়, ভালোবাসাই আসল ধর্ম”
তিনি বলেন, “জন্ম ও মৃত্যু— দুটোতেই মানুষ একা। তাহলে কিসের জন্য দাঙ্গা? কিসের জন্য যুদ্ধ? আমরা যদি একে-অপরকে ভালোবাসি, তাহলে সবকিছু জয় করা সম্ভব। কিন্তু যদি বিভাজনের পথে হাঁটি, তাহলে কেউ কাউকে জয় করতে পারবে না।”
⚖️ “আইন হাতে নয়, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করুন”
ওয়াকফ (সংশোধনী) আইন ঘিরে সংখ্যালঘু সমাজের বিক্ষোভের প্রেক্ষিতে, মমতা সরাসরি আবেদন জানান:
“গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করুন, তবে অনুমতি নিয়ে। কিন্তু কেউ যেন প্ররোচনায় পড়ে আইন হাতে না তুলে নেয়। আইন রক্ষার জন্য আইনরক্ষক আছেন, আইন ভক্ষকের দরকার নেই।”
তিনি আরও বলেন, “কে কী বলছে, সেটা শোনার প্রয়োজন নেই। মাথা ঠান্ডা রাখুন। যে উত্তেজনায় না ভেসে শান্ত থাকে, সেই-ই শেষমেশ জয়ী হয়।”
🕊️ “ধর্মের আসল রূপ— শান্তি ও সৌহার্দ্য”
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ধর্ম মানে ভক্তি, স্নেহ, শান্তি, সৌহার্দ্য, মানবতা ও ঐক্য। কারও প্রতি ঘৃণা নয়, বরং ভালোবাসা— সেটাই সবচেয়ে বড় ধর্ম। আমাদের লড়াই হোক উন্নয়নের জন্য, ঘৃণার জন্য নয়।”
🔍 পটভূমি: মুর্শিদাবাদের অশান্তি
সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের কিছু অঞ্চলে ওয়াকফ আইন ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায়। কিছু জায়গায় বিক্ষোভ, রাস্তা অবরোধ, এমনকি আইন ভাঙার ঘটনাও ঘটে। প্রশাসন সেখানে মোতায়েন করেছে বাহিনী ও চালু রেখেছে টহলদারি। সেই পটভূমিকেই সামনে রেখে মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য গুরুত্বপূর্ণ বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা।
📝 উপসংহার
নাম না করেই যে কৌশলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অশান্ত মুর্শিদাবাদে শান্তির বার্তা পাঠালেন, তা একদিকে যেমন মানবিক, অন্যদিকে রাজনৈতিক বিচক্ষণতারও নিদর্শন। তিনি যেন স্পষ্ট করে দিলেন— গণতন্ত্রের পথে হাঁটুন, কিন্তু আইন নিজের হাতে তুলবেন না।
📌 এই বার্তাই এখন রাজ্যবাসীর সামনে সবচেয়ে জরুরি— ধর্ম নয়, মানুষের পাশে থাকা ও ভালোবাসাই আমাদের সবচেয়ে বড় পরিচয়।
মুর্শিদাবাদে ধীরে ধীরে স্বস্তির হাওয়া, ঘরছাড়াদের ফেরাতে প্রশাসনের বিশেষ উদ্যোগ

