২৬/১১ মুম্বই হামলায় দাউদের ছায়া?
২৬/১১ মুম্বই হামলার এক ভয়ঙ্কর অধ্যায় নিয়ে ফের চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার (এনআইএ) হাতে। এই ঘটনার মূল চক্রীদের অন্যতম তাহাউর রানাকে বর্তমানে জিজ্ঞাসাবাদ করছে এনআইএ, আর সেই জেরায় উঠে আসছে এক বিস্ফোরক নাম—আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন দাউদ ইব্রাহিম।
রবিবার ছিল এনআইএ হেফাজতে রানার তৃতীয় দিন, আর সেই দিনেই সামনে আসছে এমন ইঙ্গিত যে, শুধু লস্কর-ই-তৈবা বা আইএসআই নয়, দাউদের সঙ্গেও সংযোগ থাকতে পারে রানার। এনআইএ ইতিমধ্যেই রানার বহু ফোনালাপ ঘেঁটে দেখছে, যেগুলোর বেশিরভাগই মুম্বই হামলার আরেক মূল চক্রী ডেভিড হেডলির সঙ্গে।
২০০৫ সাল থেকেই চলছিল হামলার ছক?
তদন্তকারীদের অনুমান, মুম্বই হামলার ছক কষা শুরু হয়েছিল ২০০৫ সাল থেকেই। রানার বিভিন্ন ফোনালাপ থেকে উঠে আসছে পরিকল্পনার সুস্পষ্ট ইঙ্গিত। এসব ফোনালাপকে ঘিরে তদন্তকারীরা এখন নানারকম সূত্র একত্র করার চেষ্টা করছেন—কাদের নির্দেশে এই হামলার পরিকল্পনা, কারা ছিল নেপথ্যে, আর কীভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল সেই জাল।
নতুন এক রহস্যজনক চরিত্রের খোঁজ
রানাকে জেরা করতে গিয়েই তদন্তে উঠে এসেছে দুবাইয়ের এক ব্যক্তির নাম। জানা যাচ্ছে, ডেভিড হেডলির অনুরোধে এই ব্যক্তি রানার সঙ্গে দেখা করেছিলেন এবং সম্ভবত তিনিও মুম্বই হামলার বিষয়ে ওয়াকিবহাল ছিলেন। এনআইএ অনুমান করছে, এই ব্যক্তির দাউদ বা ডি-কোম্পানির সঙ্গেও যোগাযোগ ছিল। এখন তাঁকেও নজরে রেখেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।
শুধু দাউদই নয়, পাকিস্তানের আইএসআই-র দিকেও নজর
তাহাউর রানার বিরুদ্ধে এনআইএ আগে থেকেই অভিযোগ করছিল যে, তাঁর যোগ রয়েছে জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবা-র সঙ্গে। এবার উঠে আসছে আইএসআই-এর সংযোগের সম্ভাবনাও। রানার কণ্ঠস্বর নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়েছে পরীক্ষার জন্য, যাতে ফোনালাপগুলির সঙ্গে মিলিয়ে দেখা যায় তাঁর সম্পৃক্ততা কতটা।
তাছাড়া, জানা গিয়েছে হামলার কয়েক দিন আগেই রানা ভারতে এসেছিলেন সস্ত্রীক, এবং ঘুরে বেড়িয়েছিলেন একাধিক শহরে। কেন এই সফর? এনআইএ জোরালোভাবে মনে করছে, এটি একটি রেকি মিশন ছিল—পরবর্তী হামলার পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই।
আমেরিকা থেকে ভারতে প্রত্যর্পণ, এখন নজরদারিতে
পাকিস্তান বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক রানা এত দিন ছিলেন আমেরিকার জেলে বন্দি। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর অবশেষে গত বৃহস্পতিবার তাঁকে ভারতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এনআইএ তাঁকে ১৮ দিনের হেফাজতে পেয়েছে এবং কড়া নিরাপত্তায় রাখা হয়েছে দিল্লির সিজিও কমপ্লেক্সে। সূত্র বলছে, আপাতত রানা শুধু কাগজ, কলম আর কোরান নিয়েই সময় কাটাচ্ছেন।
উপসংহার:
২০০৮-এর সেই বিভীষিকাময় রাতে মুম্বই শহর যেভাবে রক্তাক্ত হয়েছিল, তার নেপথ্যের চরিত্ররা একে একে সামনে আসছে। এখন দেখার, এনআইএ-র এই জেরায় রানার মুখে কতটা সত্য উন্মোচিত হয়—আর সেই সঙ্গে দাউদ, হেডলি, ও আইএসআই-এর মধ্যে সম্পর্কের কতটা জট খুলতে পারে ভারতের গোয়েন্দা বাহিনী।
অগ্নিগর্ভ মুর্শিদাবাদ, আর ইউসুফ পঠান ‘ফুরফুরে চা’-এ মশগুল! ক্ষোভে ফুঁসছে জনতা

