মহাকাশে আটকে থাকার পর অবশেষে ফিরলেন সুনীতা!
নয় মাস পর অবশেষে পৃথিবীর মাটিতে পা রাখলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস এবং তাঁর সহযাত্রী বুচ উইলমোর। টানা ২৮৬ দিন মাধ্যাকর্ষণহীন মহাকাশে কাটানোর পর বুধবার ভোরে তাঁরা নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরে আসেন। তবে এই দীর্ঘ অপেক্ষার নেপথ্যে ছিল এক অপ্রত্যাশিত বিপত্তি— তাঁদের মহাকাশযানে ধরা পড়েছিল যান্ত্রিক ত্রুটি, যার ফলে নির্ধারিত সময়ের অনেক পর তাঁরা ফিরে আসতে বাধ্য হন।
৪৫ দিনের নিভৃতবাস, কঠোর পর্যবেক্ষণ
ফিরলেও এখনই সাধারণ জীবনে ফেরার অনুমতি নেই তাঁদের। আগামী ৪৫ দিন সুনীতা ও বুচকে চিকিৎসকদের বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। দীর্ঘ সময় মাধ্যাকর্ষণহীন পরিবেশে কাটানোর ফলে শরীরে নানা ধরনের পরিবর্তন হতে পারে, যা মোকাবিলা করতেই এই বিশেষ নজরদারি। চিকিৎসকরা লক্ষ্য রাখবেন, তাঁরা পৃথিবীর পরিবেশের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে খাপ খাইয়ে নিতে পারছেন কি না।
কত টাকা খরচ হল এই উদ্ধার অভিযানে?
মহাকাশে আটকে পড়া নভোচারীদের ফিরিয়ে আনার জন্য যে অভিযান চালানো হয়, তার খরচ শুনলে চোখ কপালে উঠবে!
✅ রকেট উৎক্ষেপণের খরচ: ৬৯ কোটি মার্কিন ডলার (প্রায় ৫৯৫ কোটি ভারতীয় টাকা)
✅ ড্রাগন ক্যাপসুলের খরচ: ১৪০০ কোটি মার্কিন ডলার (প্রায় ১২ হাজার কোটি ভারতীয় টাকা)
এই বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা, আর অভিযানের নেতৃত্বে ছিল ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেসএক্স।
কীভাবে আটকে গেলেন সুনীতারা?
২০২৪ সালের জুন মাসে বোয়িং স্টারলাইনার মহাকাশযানে চড়ে তাঁরা মহাকাশ স্টেশনের উদ্দেশে রওনা দেন। পরিকল্পনা ছিল, মাত্র আট দিনের মধ্যেই তাঁরা ফিরে আসবেন। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে তাঁদের ফিরে আসার সময় বারবার পিছিয়ে যায়।
প্রথমে বেশ কয়েকবার তাঁদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়, কিন্তু প্রতিবারই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় নাসাকে। শেষমেশ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হস্তক্ষেপ করেন এবং ইলন মাস্ককে নির্দেশ দেন দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। তারপরই স্পেসএক্স-এর ড্রাগন ক্যাপসুল পাঠিয়ে তাঁদের পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা হয়।
এই অভিযান নতুন দিগন্ত খুলে দিল
মহাকাশ অভিযানের ইতিহাসে এটি অন্যতম দীর্ঘ সময়ের আটকে থাকার ঘটনা। তবে প্রযুক্তিগত সমস্যা মোকাবিলা করে নভোচারীদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার এই অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতের মহাকাশ গবেষণার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হয়ে থাকবে।
শেষ কথা
টানা ৯ মাস মহাকাশে কাটানোর পর পৃথিবীতে ফেরার স্বস্তি পেলেন সুনীতা উইলিয়ামস ও তাঁর সহযাত্রীরা। কিন্তু এর পেছনে যে বিশাল অর্থ ও প্রযুক্তিগত জটিলতা কাজ করেছে, তা সত্যিই বিস্ময়কর।
আপনার কী মত? এমন বিপুল অর্থ খরচ করে মহাকাশচারীদের উদ্ধার করা উচিত, নাকি আরও নিরাপদ প্রযুক্তির ওপর জোর দেওয়া দরকার?

