সুতন্দ্রার মৃত্যু দুর্ঘটনা নাকি খুন?
হুগলির চন্দননগরের বাসিন্দা, পেশায় নৃত্যশিল্পী ও ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার কর্ণধার সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুকে ঘিরে রহস্য আরও ঘনীভূত হচ্ছে। পুলিশের তদন্তে এটি নিছকই একটি দুর্ঘটনা বলে দাবি করা হলেও, সুতন্দ্রার মা তনুশ্রী চট্টোপাধ্যায় তা মানতে রাজি নন। তাঁর দাবি, মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। এই দাবিকে সামনে রেখেই তিনি কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেছেন।
কী ঘটেছিল ২৪ ফেব্রুয়ারি?
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পূর্ব বর্ধমানের পানাগড়ে একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় সুতন্দ্রার। পুলিশের তদন্তে উঠে আসে, সুতন্দ্রার গাড়ি একটি সাদা গাড়িকে ধাওয়া করছিল এবং সেই প্রতিযোগিতার জেরেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাঁর গাড়ি উল্টে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সুতন্দ্রার।
এই ঘটনায় সুতন্দ্রার গাড়িচালক রাজদেও শর্মাকে গ্রেফতার করা হয়, যিনি পরে নিজের বক্তব্য বদলে দাবি করেন, সুতন্দ্রার নির্দেশেই তিনি গাড়ির গতি ১০০ কিমি প্রতি ঘণ্টায় নিয়ে গিয়েছিলেন। অপরদিকে, দুর্ঘটনার জন্য দায়ী সাদা গাড়ির চালক বাবলু যাদবকেও আগেই গ্রেফতার করেছিল কাঁকসা থানার পুলিশ।
মায়ের দাবি: এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়!
শুরু থেকেই পুলিশের তদন্ত নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন সুতন্দ্রার মা তনুশ্রী। তাঁর বক্তব্য, সত্য আড়াল করা হচ্ছে। তাঁর মূল অভিযোগ:
✔ ইভটিজিং-এর শিকার হয়েছিলেন সুতন্দ্রা – সাদা গাড়িতে থাকা কিছু যুবক তাঁকে কটূক্তি করছিলেন।
✔ সাদা গাড়ির চালক মত্ত অবস্থায় ছিলেন, যার ফলে এই ঘটনা ঘটে।
✔ এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়, পরিকল্পিত খুন।
পুলিশ যদিও ইভটিজিং-এর তত্ত্বকে উড়িয়ে দিয়েছে, তবে তনুশ্রীর দাবি, ঘটনার সময় সুতন্দ্রার গাড়িতে থাকা সহকর্মীরা প্রথম থেকেই বলেছিলেন যে সাদা গাড়িটি বারবার ধাক্কা দিচ্ছিল। কিন্তু পরে গাড়িচালক তাঁর বয়ান বদলান।
আদালতের দ্বারস্থ পরিবার
এই ঘটনাকে ঘিরে এখন আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তনুশ্রী। বুধবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ মামলাটি গ্রহণ করেছেন এবং শিগগিরই এই বিষয়ে শুনানি হবে।
তনুশ্রীর আবেদন:
🔹 সঠিক তদন্ত হোক, যাতে প্রকৃত সত্য সামনে আসে।
🔹 কীভাবে দুর্ঘটনা ঘটল, তা সিসিটিভি ফুটেজ, প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান এবং ফরেনসিক পরীক্ষার মাধ্যমে পুনরায় খতিয়ে দেখা হোক।
🔹 পুলিশের তদন্তে যদি কোনো গাফিলতি থাকে, তবে তা খতিয়ে দেখা হোক।
তাহলে কী সত্য?
এখন প্রশ্ন একটাই— এটি কি সত্যিই দুর্ঘটনা, নাকি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড? পুলিশের তদন্তে যদি কোনো গোপন সত্য লুকিয়ে থাকে, তবে তা কি আদালতের নির্দেশে প্রকাশ্যে আসবে?
এই ঘটনার পর সমাজে নারীদের নিরাপত্তা ও ইভটিজিং-এর মতো অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা আবারও সামনে এলো। এখন দেখার, আদালত কী সিদ্ধান্ত নেয় এবং সত্যের সন্ধান কোথায় নিয়ে যায় এই মামলা!
ভারতের উপর পাল্টা শুল্ক চাপাচ্ছেন ট্রাম্প! ঘোষণা করলেন নির্দিষ্ট তারিখও