Tuesday, March 4, 2025

শিল্পে বাধা নয়, ‘টাকা চাওয়া’ বরদাস্ত নয়! দল ও প্রশাসনকে কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

Share

দল ও প্রশাসনকে কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর!

রাজ্যে শিল্পের পরিবেশ স্বচ্ছ ও অনুকূল রাখতে কড়া অবস্থান নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ‘টাকা চাওয়া’ চলবে না, দলীয় নেতাদের উদ্দেশে স্পষ্ট বার্তা দিলেন তিনি। শুধু রাজনৈতিক নেতারাই নন, সরকারি দফতরের একাংশকেও সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়ে দিলেন, এমন কিছু হলে সরাসরি তাঁকে জানানো হোক, তিনি নিজে ব্যবস্থা নেবেন।


🔵 শিল্প বৈঠকে কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী?

সোমবার নবান্ন সভাঘরে শিল্প সংক্রান্ত এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশ নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি জানান—

রাজ্যে বিনিয়োগকারীদের কাজে কোনও বাধা বরদাস্ত করা হবে না।
স্থানীয় কোনও নেতা বা সংগঠন শিল্পপ্রকল্প আটকে দিলে সরাসরি তাঁর কাছে অভিযোগ জানানো যেতে পারে।
সরকারি দফতরের যাঁরা কাজের বিনিময়ে টাকা চান, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শ্রমিক স্বার্থের বিষয়েও নজর রাখা হবে, যাতে সংস্থাগুলি হঠাৎ কর্মী ছাঁটাই করতে না পারে।

এছাড়াও, মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন যে, কেউ দলীয় নাম ব্যবহার করে টাকা তুললে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


🔴 ‘টাকা চাওয়া’ বন্ধ করতেই প্রশাসনিক নজরদারি

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, জমির নামপত্তন এবং চরিত্র পরিবর্তন সংক্রান্ত কাজের ক্ষেত্রে দুর্নীতি এখনও পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। প্রশাসনের কিছু কর্মী বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে নিয়ম বহির্ভূত অর্থ দাবি করছেন বলে অভিযোগ এসেছে।

📌 মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য: “টাকা চাওয়া আগের তুলনায় কমেছে, তবে এখনও কিছু কিছু ক্ষেত্রে হচ্ছে। এটা বন্ধ করতে হবে।”

📌 তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, এই দুর্নীতির রাশ টানতে স্বাধীন সংস্থা দিয়ে নজরদারি চালানো হবে।

📌 “পুলিশের অনেক কাজ থাকে। আর আমাদের যে সব এজেন্সি রয়েছে, তারা খুব একটা কাজের নয়। তাই স্বাধীন সংস্থা চাই, যারা মাঝেমধ্যে সরকারি দফতর পরিদর্শন করবে,”— বলেন মুখ্যমন্ত্রী।


🔵 শ্রমিক সংগঠনেও আসছে বড় বদল

শুধু প্রশাসন নয়, নিজের দলীয় শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-কেও সতর্ক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে এই সংগঠনের কাজ নিয়ে তিনি সন্তুষ্ট নন।

📌 মুখ্যমন্ত্রী জানান:
✔️ দুর্গাপুরের আইএনটিটিইউসি সভাপতি বদলানো হবে।
✔️ হলদিয়ার দায়িত্বেও আসছে পরিবর্তন।
✔️ গ্রাফাইট ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে।

📌 তিনি শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটককে স্পষ্ট নির্দেশ দেন:
✔️ শ্রমিক সংগঠনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের বদল আনতে হবে।
✔️ শ্রমিক স্বার্থের সঙ্গে শিল্পের স্বার্থের সামঞ্জস্য রাখতে হবে।


🔴 বিনিয়োগ ও উন্নয়নে জোর দিচ্ছে রাজ্য

‘বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন ২০২৫’-এ প্রায় সাড়ে চার লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি মিলেছে। মুখ্যমন্ত্রী চান, এই প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবে রূপ পাক। তাই প্রশাসনিক স্তরে কোনও বাধা বা দুর্নীতি বরদাস্ত করতে রাজি নন তিনি।

📌 “ট্রেড ইউনিয়নগুলোকে বলব, অযথা বাড়াবাড়ি করবেন না। দরকারি কোনও বিষয় হলে সরাসরি কথা বলে সমস্যা মিটিয়ে নিন। ব্যক্তিগত স্বার্থে কেউ অন্যায় করবেন না,”— স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী।


🔵 শিল্পবান্ধব পরিবেশ গড়তে তৎপর রাজ্য সরকার

📌 বিনিয়োগকারীদের স্বস্তি দিতে এবং শিল্পে বাধা দূর করতে এই কঠোর অবস্থান নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
📌 ‘টাকা চাওয়া’ বন্ধ করতে সরকারি নজরদারি আরও জোরদার করা হচ্ছে।
📌 দলীয় সংগঠনের মধ্যে গঠনতন্ত্র ও শৃঙ্খলা আনতে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

🔎 শেষ কথা

শিল্পায়ন ও বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য রাজ্যের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখা জরুরি। মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তার পর দলীয় নেতাদের ভূমিকা কী হয়, প্রশাসন কতটা সক্রিয় হয়— সেটাই এখন দেখার।

📢 আপনার মতামত কী? শিল্পায়নের পথে দুর্নীতি বন্ধ করতে আরও কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত? জানান কমেন্টে!

‘প্যাক-ফ্যাক’ থেকে ‘আমার আইপ্যাক’— কেন বদলে গেল মমতার অবস্থান?

Read more

Local News