Monday, December 1, 2025

বাংলাদেশে উৎসবের মরসুমে অপরাধ রুখতে নতুন কৌশল, বাতিল ‘শয়তানের খোঁজ’ অভিযান

Share

বাংলাদেশে উৎসবের মরসুমে অপরাধ রুখতে নতুন কৌশল!

রমজান মাস শুরু হতেই বাংলাদেশে শুরু হয়েছে ঈদের প্রস্তুতি, আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অপরাধের হার। চুরি, ছিনতাই, ডাকাতির মতো অপরাধ ঠেকাতে আরও কড়াকড়ি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তবে, ‘শয়তানের খোঁজ’ নামে বিশেষ অভিযানটি আর চলবে না। রবিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নতুন কৌশলে অভিযান চালাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, তবে তার জন্য আলাদা কোনও নাম রাখা হবে না।


🔍 অপরাধ ঠেকাতে বদলানো হচ্ছে পুলিশের কৌশল

বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রমজানের সময় আরও কঠোর করতে চায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বিশেষ করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, খুলনা এবং অন্যান্য বড় শহরে ব্যাঙ্ক, মার্কেট ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হচ্ছে।

📌 ‘শয়তানের খোঁজ’ অভিযান বন্ধ হলেও যৌথ অভিযান চলবে আগের মতোই।
📌 বিভিন্ন স্পর্শকাতর এলাকায় পুলিশের টহলদারি আরও বাড়ানো হবে।
📌 সড়কপথ, ব্যাঙ্ক, বড় বাজার ও শপিং মলের আশেপাশে নজরদারি জোরদার করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সূত্রে জানা গেছে, রমজানের সময় প্রতিবারই অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধি পায়। এবারও জাল টাকার কারবার, ছিনতাই, চুরি ও ডাকাতির ঘটনা বাড়ছে। এজন্যই বিশেষ নজরদারি চালাচ্ছে পুলিশ ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী।


📌 কেন বাতিল হলো ‘শয়তানের খোঁজ’ অভিযান?

গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ‘শয়তানের খোঁজ’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করেছিল বাংলাদেশ পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ১ মার্চ পর্যন্ত এই অভিযানে ১১,৮৮২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

কিন্তু কেন বন্ধ করা হলো এই অভিযান?

📌 প্রথমত, অভিযানের নাম নিয়ে বিতর্ক। ‘শয়তানের খোঁজ’ নামটি অনেকের কাছে আপত্তিকর মনে হয়েছে। বিশেষ করে ধর্মীয় সংবেদনশীলতার কারণে, এটি পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
📌 দ্বিতীয়ত, অভিযানকে আরও সুচারুভাবে পরিচালনা করতে নতুন পরিকল্পনা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধুমাত্র ‘শয়তানের খোঁজ’ নয়, বরং আরও কার্যকর পদ্ধতিতে অপরাধ দমন করাই সরকারের মূল লক্ষ্য।
📌 তৃতীয়ত, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজের স্বচ্ছতা এবং আন্তর্জাতিক মহলে ইতিবাচক বার্তা পাঠানোর জন্যও এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।


🛑 রমজানে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে?

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, রমজানের সময় সাধারণ মানুষ যাতে নিরাপদে কেনাকাটা ও অন্যান্য কাজ করতে পারেন, সেজন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ব্যাঙ্ক ও এটিএম বুথগুলোর নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
বড় শপিং মল ও বাজার এলাকায় সাদা পোশাকের পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে।
সড়কপথ ও পরিবহনে নজরদারি চালাতে সিসিটিভি ক্যামেরা ও ইলেকট্রনিক নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
ঈদের সময় বাস, ট্রেন ও লঞ্চ টার্মিনালগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে।

সরকারের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রমজান ও ঈদের সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ‘শয়তানের খোঁজ’ অভিযানের বদলে আরও সংগঠিত ও পরিকল্পিত উপায়ে অভিযান চালানো হবে।


⚖️ রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও অপরাধ প্রবণতা

বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ৮ অগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়। তবে সেই সময় থেকেই অপরাধের হার বেড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

🔹 প্রকাশ্যে ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা বেড়েছে।
🔹 আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
🔹 প্রাক্তন সরকারের অনুগামীরা বিভিন্নভাবে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ।

অন্তর্বর্তী সরকার নিশ্চিত করতে চায় যে এবারের রমজান এবং ঈদ শান্তিপূর্ণভাবেই উদযাপন করা যাবে।


🔚 শেষ কথা

‘শয়তানের খোঁজ’ নামে অভিযানের অবসান হলেও, বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আরও কঠোর অবস্থানে যেতে চলেছে। বিশেষ করে রমজান ও ঈদের সময়ে অপরাধ রোধে সজাগ থাকবে প্রশাসন।

নতুন অভিযানের মাধ্যমে কীভাবে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা হয়, তা দেখার জন্য দেশবাসী এখন সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপের অপেক্ষায়। আপনাদের মতে, অপরাধ দমনে সরকারের এই নতুন কৌশল কতটা কার্যকর হবে? মতামত জানাতে ভুলবেন না!

‘প্যাক-ফ্যাক’ থেকে ‘আমার আইপ্যাক’— কেন বদলে গেল মমতার অবস্থান?

Read more

Local News