Saturday, February 22, 2025

শনির চাঁদে প্রাণের সন্ধান! টাইটানে ‘ফড়িং যান’ পাঠাচ্ছে নাসা

Share

শনির চাঁদে প্রাণের সন্ধান!

পৃথিবীর বাইরে প্রাণের অস্তিত্ব আছে কি না, সেই রহস্য উন্মোচনের লক্ষ্যে নতুন এক মিশনে নামছে নাসা। এবার তাদের নজর শনির সবচেয়ে বড় চাঁদ টাইটান। সেখানে প্রাণের সম্ভাবনা আছে কিনা তা খুঁজে দেখতে নাসা পাঠাচ্ছে ড্রাগনফ্লাই” (Dragonfly) নামের অত্যাধুনিক মহাকাশযান, যা দেখতে অনেকটা ফড়িংয়ের মতো।


কেন টাইটানে যাচ্ছে ‘ড্রাগনফ্লাই’?

২০২৮ সালের জুলাই মাসে এই ৮ পাখাবিশিষ্ট ড্রোনের মতো মহাকাশযানটি টাইটানের উদ্দেশে যাত্রা করবে। প্রায় ৩৩৫ কোটি ডলার ব্যয়ে নির্মিত এই যান ২০৩৪ সালে সেখানে অবতরণ করবে এবং এরপর কমপক্ষে দুই বছর ধরে টাইটানের রহস্যময় পরিবেশের তথ্য পাঠাবে।

🔹 টাইটান সৌরজগতের অন্যতম রহস্যময় উপগ্রহ
🔹 এর বায়ুমণ্ডলে পৃথিবীর মতোই নাইট্রোজেন রয়েছে
🔹 পৃষ্ঠে তরল নদী ও হ্রদ থাকায় প্রাণের সম্ভাবনা উজ্জ্বল
🔹 টাইটানের ভূগর্ভস্থ সমুদ্র বিশাল এবং পৃথিবীর মহাসাগরের মতো গভীর

নাসার বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, টাইটান হয়তো সেই জগৎ, যা একসময় পৃথিবীর মতো বাসযোগ্য ছিল বা ভবিষ্যতে হতে পারে।


টাইটান কতটা রহস্যময়?

টাইটানকে নিয়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের আগ্রহের কারণ একাধিক। ১৯৪৪ সালে প্রথম শনির এই চাঁদের সন্ধান পাওয়া যায়। এটি বুধ গ্রহের চেয়েও বড় এবং এর বায়ুমণ্ডল পৃথিবীর চেয়েও ঘন

🌍 এর আবহাওয়ায় নাইট্রোজেনের আধিক্য রয়েছে
💨 মিথেন ও ইথেনের মতো গ্যাস পাওয়া গেছে, যা পৃথিবীর জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ
🌊 বরফের চাঁদের নিচে বিশাল জলাধার থাকতে পারে
☁️ পৃথিবীর মতোই সেখানে বৃষ্টিপাত হয়, তবে তা হয় তরল মিথেন ও ইথেনের

বিজ্ঞানীরা বলছেন, টাইটানের রাসায়নিক গঠন পৃথিবীর আদি যুগের মতো হতে পারে। ফলে সেখানে জীবনের উপাদান গঠনের সম্ভাবনা প্রবল


‘ড্রাগনফ্লাই’-এর বিশেষত্ব কী?

এই বিশেষ মহাকাশযানটি টাইটানে পৌঁছানোর পর সেখানে প্রায় ২০০ কিলোমিটার ভ্রমণ করবে, যা পূর্বের যে কোনো মহাকাশ অভিযানের তুলনায় অনেক বেশি।

🚀 ৮টি রোটর ব্লেডের সাহায্যে এটি উড়তে পারবে
🔬 টাইটানের পৃষ্ঠে রাসায়নিক বিশ্লেষণ চালাবে
🌍 জীবনের সম্ভাব্য লক্ষণ ও মাইক্রোবায়োলজিক্যাল উপাদান খুঁজবে
🔋 পারমাণবিক শক্তিচালিত ব্যাটারি ব্যবহার করবে

এটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে টাইটানের পুরু বায়ুমণ্ডলে অনায়াসে চলাফেরা করতে পারে।


টাইটানে প্রাণের অস্তিত্ব? বিজ্ঞানীদের আশা

পৃথিবীর বাইরে জীবনের অস্তিত্বের সম্ভাবনা নিয়ে বহু গবেষণা হয়েছে। তবে টাইটান সেই বিরল উপগ্রহগুলোর মধ্যে একটি, যেখানে প্রাণের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ থাকতে পারে।

💡 বিজ্ঞানীদের মতে, যদি টাইটানে আদিম ধরনের কোনও প্রাণী বা জৈব রাসায়নিক চিহ্ন পাওয়া যায়, তবে তা পৃথিবীর বাইরের প্রাণের সন্ধানে যুগান্তকারী আবিষ্কার হবে।

পৃথিবীর মতো জলচক্র, বৃষ্টিপাত ও স্রোত রয়েছে টাইটানে। তবে সেখানে বৃষ্টির ফোঁটা জলের পরিবর্তে তরল মিথেন ও ইথেন! বিজ্ঞানীরা অনুমান করছেন, টাইটানের গভীরে লুকিয়ে থাকা বরফের নিচে তরল পানির সমুদ্র থাকতে পারে, যা প্রাণের বিকাশে সহায়ক হতে পারে।


শেষ কথা

নাসার এই ‘ড্রাগনফ্লাই’ মিশন যদি সফল হয়, তাহলে আমরা হয়তো প্রথমবারের মতো সৌরজগতের বাইরে প্রাণের অস্তিত্বের ইঙ্গিত পেতে পারি।

২০২৮ সালে যখন এটি যাত্রা শুরু করবে, তখন বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীদের নজর থাকবে এই ঐতিহাসিক অভিযানের দিকে। ২০৩৪ সালে ড্রাগনফ্লাই টাইটানে পৌঁছালে আমরা হয়তো মহাবিশ্বের অন্যতম বড় প্রশ্নের উত্তর পেতে পারি— আমরা কি একা?

মাটির নীচ থেকে গর্জনের শব্দ! ভূমিকম্পের নতুন অভিজ্ঞতায় আতঙ্কিত দিল্লিবাসী— কেন হল এমন?

Read more

Local News