Saturday, February 22, 2025

বাইডেনের ছায়া সরিয়ে পরিষ্কার শুরু, আইন বিভাগের রদবদল ট্রাম্পের

Share

বাইডেনের ছায়া সরিয়ে পরিষ্কার শুরু!

আমেরিকার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও এক বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে শিরোনামে। এবার তার লক্ষ্য আইন বিভাগ। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নির্দেশ দিয়েছেন, জো বাইডেনের প্রশাসনের সময়ে নিযুক্ত সমস্ত মার্কিন অ্যাটর্নিকে বরখাস্ত করতে হবে। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের হাউস পরিষ্কার করতে হবে। পুরনো আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে হবে। আমেরিকার স্বর্ণযুগের জন্য একটি ন্যায্য বিচার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যার কাজ আজ থেকেই শুরু হচ্ছে।’’ ট্রাম্পের এই ঘোষণার পরপরই বেশ কয়েকজন অ্যাটর্নিকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার চিঠি পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইন বিভাগের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

নতুন প্রেসিডেন্ট তার প্রশাসনে পরিবর্তন আনতে গেলে সাধারণত কিছু মার্কিন অ্যাটর্নিকে পদত্যাগ করতে বলা হয়, তবে এভাবে সরাসরি বরখাস্তের নির্দেশ আগে কখনও জারি হয়নি বলে জানিয়েছেন বর্তমান ও প্রাক্তন বেশ কয়েকজন আইনজীবী। এই সিদ্ধান্তের ফলে বাইডেন-যুগের সব নিয়োগপ্রাপ্ত আইন কর্মকর্তারা সরতে বাধ্য হবেন। এই ঘটনাকে অনেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এক ধরনের রাজনৈতিক প্রতিশোধ হিসেবেও দেখছেন।

গত সপ্তাহেই বেশ কয়েকজন মার্কিন অ্যাটর্নিকে বরখাস্তের নোটিস পাঠানো হয়েছে, এবং সোমবার কয়েকজন স্বেচ্ছায় ইস্তফা দিয়েছেন। প্রশাসনে নতুন সরকার এলে শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পরিবর্তন নতুন কিছু নয়, কিন্তু এই ধরনের হঠাৎ বরখাস্তের নির্দেশ বিরল। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তকে ডেমোক্র্যাটরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলেই ব্যাখ্যা করছেন।

এখানেই শেষ নয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছেন, যা সরাসরি জো বাইডেনকে লক্ষ্য করে। তিনি বাইডেনের নিরাপত্তার ছাড়পত্র প্রত্যাহার করেছেন, যার ফলে আমেরিকার গোপন নথি বা নিরাপত্তা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আর বাইডেনের কাছে পৌঁছবে না। সাধারণত, ক্ষমতা হারালেও প্রাক্তন প্রেসিডেন্টরা কিছু নির্দিষ্ট নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্য পাওয়ার সুযোগ পান। কিন্তু ট্রাম্প সেই নিয়ম ভেঙে বাইডেনকে এই সুবিধা থেকে সরিয়ে দিলেন।

তবে এটি নতুন কোনো ঘটনা নয়। ২০২১ সালে বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তিনিও ট্রাম্পের নিরাপত্তা ছাড়পত্র প্রত্যাহার করেছিলেন। ট্রাম্প সেই প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন, ‘‘এই উদাহরণটি তৈরি করেছেন বাইডেন নিজেই। তিনি ২০২১ সালে আমার নিরাপত্তার ছাড়পত্র তুলে নিয়েছিলেন এবং গোয়েন্দা সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, যেন আমাকে জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোনো তথ্য না দেওয়া হয়। এখন আমি শুধু সেই একই নিয়ম অনুসরণ করছি।’’

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তগুলো তার ভবিষ্যৎ কৌশলেরই অংশ। ২০২৪ সালের নির্বাচনের প্রচারের সময় তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, বাইডেন প্রশাসনের যেকোনো ‘অবশিষ্টাংশ’ তিনি মুছে ফেলবেন এবং প্রশাসনকে নতুনভাবে ঢেলে সাজাবেন। তাই প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই তিনি দ্রুত ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছেন।

এই সিদ্ধান্তে আমেরিকার রাজনৈতিক অঙ্গন সরগরম হয়ে উঠেছে। ডেমোক্র্যাটদের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, এটি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে প্রতিশোধের রাজনীতি। অন্যদিকে, রিপাবলিকান শিবির বলছে, এটি প্রশাসনের স্বাভাবিক পরিবর্তনেরই একটি অংশ।

ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে কী প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। তবে এটুকু স্পষ্ট, তার শাসনকালে প্রশাসনে যে বড়সড় পরিবর্তন আসছে, তার ইঙ্গিত আগেই পাওয়া গেছে।

মাটির নীচ থেকে গর্জনের শব্দ! ভূমিকম্পের নতুন অভিজ্ঞতায় আতঙ্কিত দিল্লিবাসী— কেন হল এমন?

Read more

Local News