Monday, February 24, 2025

মহাশূন্যে নতুন বিপ্লব! ক্যাটাপল্ট প্রযুক্তিতে কি ইলন মাস্কের স্পেসএক্স হার মানবে?

Share

মহাশূন্যে নতুন বিপ্লব!

মহাকাশ গবেষণায় এক নতুন যুগের সূচনা হতে চলেছে। কৃত্রিম উপগ্রহ ও মহাকাশযান উৎক্ষেপণের প্রচলিত পদ্ধতিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এসেছে মার্কিন স্টার্টআপ স্পিনলঞ্চ। এই সংস্থা রকেটের পরিবর্তে সম্পূর্ণ নতুন এক প্রযুক্তি—ক্যাটাপল্ট উৎক্ষেপণ ব্যবস্থা—উদ্ভাবন করেছে, যা মহাকাশ অভিযানের খরচ কমিয়ে আনবে এবং পরিবেশবান্ধব হবে। বিশ্লেষকদের মতে, এই নতুন প্রযুক্তি যদি পুরোপুরি সফল হয়, তবে এটি ইলন মাস্কের স্পেসএক্স-এর জন্য বড়সড় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়ে উঠতে পারে।

ক্যাটাপল্ট: মহাশূন্যে উপগ্রহ পাঠানোর অভিনব উপায়

ক্যাটাপল্ট প্রযুক্তির মূল ধারণা হলো শক্তিশালী ঘূর্ণন শক্তির মাধ্যমে মহাকাশযানকে উৎক্ষেপণ করা। এতে কোনো রকম রাসায়নিক জ্বালানির প্রয়োজন নেই। প্রচলিত রকেট প্রযুক্তিতে উৎক্ষেপণের জন্য লক্ষ লক্ষ পাউন্ড জ্বালানি পোড়ানো হয়, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু স্পিনলঞ্চের ক্যাটাপল্ট সম্পূর্ণ বিদ্যুৎচালিত, তাই এটি অনেক বেশি সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব

স্পিনলঞ্চ জানিয়েছে, তাদের ক্যাটাপল্ট উৎক্ষেপণ ব্যবস্থা হাইপারসোনিক গতিতে (শব্দের চেয়ে ৫ গুণ দ্রুত) কৃত্রিম উপগ্রহকে নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৌঁছে দিতে পারে। এতে রয়েছে বিশাল একটি ঘূর্ণায়মান চক্র, যা উচ্চ গতিতে ঘুরে প্রচণ্ড শক্তি সঞ্চয় করে এবং উপগ্রহকে মহাশূন্যে নিক্ষেপ করে।

নাসা ও প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলোর আগ্রহ

স্পিনলঞ্চের এই প্রযুক্তি ইতিমধ্যেই নাসার বিজ্ঞানীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এয়ারবাস ও মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগও এতে আগ্রহী। শোনা যাচ্ছে, ২০২৬ সালের মধ্যে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে একাধিক কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা রয়েছে।

ইলন মাস্কের জন্য কী বিপদ?

বর্তমানে মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে ইলন মাস্কের স্পেসএক্স শীর্ষস্থানীয় সংস্থা। তাদের ফ্যালকন রকেট ও স্টারলিঙ্ক প্রকল্পের মাধ্যমে কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণে বিপুল সাফল্য এসেছে। তবে স্পেসএক্স-এর প্রতিটি উৎক্ষেপণ ব্যয়বহুল এবং এর জন্য বিপুল পরিমাণ জ্বালানি প্রয়োজন।

অন্যদিকে, স্পিনলঞ্চের ক্যাটাপল্ট প্রযুক্তি যদি সফল হয়, তবে স্বল্প ব্যয়ে ও কম সময়ের মধ্যে একাধিক কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করা সম্ভব হবে। ফলে ইলন মাস্কের বাজার হারানোর আশঙ্কা তৈরি হতে পারে। বিশ্লেষকদের মতে, ক্যাটাপল্ট প্রযুক্তি কম খরচে ইন্টারনেট সেবা দেওয়ার সুযোগ তৈরি করতে পারে, যা মাস্কের স্টারলিঙ্ক প্রকল্পের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।

সীমাবদ্ধতা ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

ক্যাটাপল্ট প্রযুক্তির কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। এটি আপাতত ২০০ কেজির বেশি ওজনের পেলোড উৎক্ষেপণে সক্ষম নয়। মহাকাশে বড় মিশনের জন্য এই সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠা প্রয়োজন। তবে স্পিনলঞ্চ ইতিমধ্যেই ক্যাটাপল্টের উন্নত সংস্করণ তৈরির পরিকল্পনা করছে, যা আরও শক্তিশালী হবে।

শেষ কথা

ক্যাটাপল্ট উৎক্ষেপণ ব্যবস্থা মহাকাশ গবেষণার ভবিষ্যৎ বদলে দিতে পারে। এটি যদি কার্যকর প্রমাণিত হয়, তাহলে প্রচলিত রকেট প্রযুক্তির বিকল্প হয়ে উঠতে পারে এবং ইলন মাস্কের স্পেসএক্স-এর একাধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানাবে। তবে এর সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন ও বাণিজ্যিক সাফল্য পেতে হয়তো আরও কয়েক বছর অপেক্ষা করতে হবে।

মাটির নীচ থেকে গর্জনের শব্দ! ভূমিকম্পের নতুন অভিজ্ঞতায় আতঙ্কিত দিল্লিবাসী— কেন হল এমন?

Read more

Local News