দেশে ফিরতে চান হাসিনা!
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখনো অস্থির। এমন সময় আওয়ামী লীগের নেত্রী ও দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানালেন, পরিস্থিতি অনুকূল হলে তিনি দেশে ফিরবেন। সোমবার রাতে এক ভার্চুয়াল বার্তায় তিনি এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পাতা থেকে তাঁর বক্তৃতা সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। বক্তৃতার পর তিনি কিছু সাধারণ মহিলার সঙ্গেও কথা বলেন, যারা আন্দোলনের সময় আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের পরিবার থেকে এসেছিলেন। হাসিনা তাঁদের ধৈর্য ধরতে বলেন এবং আশ্বাস দেন, সুবিচার পেতে তারা একদিন সক্ষম হবেন।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, গত বছরের জুলাই-অগস্ট মাসের রাজনৈতিক আন্দোলনের সময় যেসব পুলিশ সদস্য হামলার শিকার হয়েছিলেন, তাঁদের পরিবার এখনো সুবিচার পায়নি। এক বিধবা পুলিশ সদস্যের স্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে কষ্টের কথা শেয়ার করেন। তিনি জানান, তাঁর স্বামী কোনো আর্থিক সহায়তা রেখে যাননি, সন্তানদের নিয়ে তিনি চরম কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে তিনি হাসিনার সাহায্য চান। উত্তরে হাসিনা বলেন, “অবশ্যই আমি সাহায্য করব। আমি দেশে ফিরব।”
হাসিনা আরও বলেন, “আমি আছি, আমি অবশ্যই সুবিচার করব। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যতই দায়মুক্তি দিক, হত্যার দায়মুক্তি হতে পারে না। আমি আমার বাবা-মা ও তিন ভাইকে হত্যার পর তাদের বিচার করেছি। পুলিশ হত্যারও বিচার হবে একদিন।”
রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্ট ও বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি
বাংলাদেশের গত বছরের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সম্প্রতি একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। এতে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য ‘মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড’ ঘটিয়েছিল। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশনের হাইকমিশনার ফলকার টুর্কের মতে, “আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা ধরে রাখতে দমনমূলক ও নৃশংস ব্যবস্থা নিয়েছিল।”
এ পরিস্থিতি বিবেচনা করে ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম’ পাঁচ দফা সুপারিশ করেছে, যাতে বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্বচ্ছতা এবং শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা যায়।
ঠিক এই সময় শেখ হাসিনা তাঁর বক্তব্যে বলেন, “ধৈর্য ধরুন, অপেক্ষা করুন। আমি দেশে ফিরে প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সাহায্য করব। হত্যাকারীদেরও বিচারের আওতায় আনা হবে।”
‘শয়তানের খোঁজ’ অভিযান নিয়ে কটাক্ষ
সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘শয়তানের খোঁজ’ (অপারেশন ডেভিল হান্ট) নামে একটি অভিযান চালু করেছে, যেখানে হাজার হাজার মানুষকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। সরকার বলছে, দুষ্কৃতীদের খুঁজে বের করতেই এই অভিযান।
শেখ হাসিনা এই অভিযানের কড়া সমালোচনা করে বলেন, “এখন শুরু হয়েছে অপারেশন ডেভিল হান্ট! কিন্তু প্রশ্ন হলো, কে ডেভিল? কাকে খুঁজছে? দেশ চালাতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ সরকার এখন মানুষের দৃষ্টি ভিন্নদিকে ঘোরাতে এসব করছে।”
হাসিনার বার্তা: অপেক্ষা করুন, সুবিচার আসবেই
আওয়ামী লীগের নেত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি বাংলাদেশে ফিরে আবার রাজনৈতিক লড়াইয়ে নামবেন। তিনি তাঁর সমর্থকদের ধৈর্য ধরতে বলেছেন এবং আশ্বাস দিয়েছেন, অন্যায় ও হত্যার বিচার তিনি নিশ্চিত করবেন।
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নানা কার্যকলাপ এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের সাম্প্রতিক রিপোর্টের আলোকে হাসিনার এই বক্তব্যকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যত কোন দিকে মোড় নেবে, তা নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। তবে হাসিনার এই বার্তা তাঁর সমর্থকদের নতুন করে আশার আলো দেখাচ্ছে।
মাটির নীচ থেকে গর্জনের শব্দ! ভূমিকম্পের নতুন অভিজ্ঞতায় আতঙ্কিত দিল্লিবাসী— কেন হল এমন?