Monday, February 24, 2025

বিধানসভায় বিক্ষোভ, শুভেন্দু-সহ চার বিজেপি বিধায়ক সাসপেন্ড!

Share

বিধানসভায় বিক্ষোভ!

পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক অঙ্গনে আবারও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। বিধানসভার অধিবেশন চলাকালীন বিক্ষোভ ও কাগজ ছিঁড়ে প্রতিবাদ করার অভিযোগে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীসহ চারজন বিজেপি বিধায়ককে সাসপেন্ড করা হয়েছে।

সোমবার বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেন্দুকে ৩০ দিনের জন্য বিধানসভা থেকে সাসপেন্ডের ঘোষণা করেন। তাঁর পাশাপাশি অগ্নিমিত্রা পাল, বিশ্বনাথ কারক এবং বঙ্কিম ঘোষকেও সাসপেন্ড করা হয়েছে। এই নিয়ে গত সাড়ে তিন বছরে চতুর্থবারের মতো বিধানসভা থেকে বহিষ্কার হলেন শুভেন্দু।


“কেন সাসপেন্ড করা হল শুভেন্দু অধিকারীকে?”

বিজেপির পক্ষ থেকে সরস্বতী পুজো সংক্রান্ত বিষয়ে মুলতুবি প্রস্তাব পেশ করা হয় বিধানসভায়। বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল প্রস্তাব উত্থাপন করেন এবং এ নিয়ে আলোচনা চান। কিন্তু বিধানসভার অধ্যক্ষ সেই আবেদন খারিজ করে দেন। এর পরই বিজেপি বিধায়কেরা প্রতিবাদ শুরু করেন এবং ওয়েলে নেমে কাগজ ছিঁড়ে বিক্ষোভ দেখান।

অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এই আচরণকে “অত্যন্ত নিন্দনীয়” বলে উল্লেখ করেন এবং বিধানসভার তৃণমূল পরিষদীয় দলের নেতা নির্মল ঘোষের প্রস্তাব মেনে চারজন বিধায়ককে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেন।


“বিজেপির প্রতিক্রিয়া: আমরা বয়কট করব!”

বিধানসভা থেকে সাসপেন্ড হওয়ার পরেই শুভেন্দু অধিকারী বিজেপি বিধায়কদের নিয়ে জরুরি বৈঠক ডাকেন। বৈঠকে তিনি বলেন—

“আমি একা ওয়েলে নেমেছিলাম, কিন্তু অগ্নিমিত্রা পাল ও বঙ্কিম ঘোষ তা করেননি। তা-ও তাঁদের সাসপেন্ড করা হলো!”

বিজেপির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিধানসভায় ভাষণের দিন বিজেপির বিধায়করা অধিবেশনে যোগ দেবেন না। বরং “শেম শেম” স্লোগান দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণ বয়কট করা হবে।

বিজেপি বিধায়করা বিধানসভার মূল ফটকের সামনে বসে প্রতিবাদ করবেন এবং শুভেন্দু সমাজমাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখবেন।


“তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ”

বিধানসভার কার্যসূচি ছিঁড়ে ফেলা এবং ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখানোর জন্য শুভেন্দুর কড়া সমালোচনা করেছে তৃণমূল।

পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন—

“স্পিকারের চেয়ারকে অপমান করার অধিকার কারও নেই। শুভেন্দুর আজকের আচরণ বিধানসভার শৃঙ্খলাকে চ্যালেঞ্জ করেছে।”

তৃণমূলের অন্য বিধায়কেরাও শুভেন্দুর বিরুদ্ধে “নিয়মভঙ্গ ও অশোভন আচরণের” অভিযোগ তুলেছেন।


“বিধানসভায় বিক্ষোভ: কী বলছে সংবিধান?”

বিধানসভায় শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য স্পিকারের কাছে ক্ষমতা থাকে যে কোনও বিধায়কের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার। সংবিধানের নিয়ম অনুযায়ী—

✔️ বিধায়ক বিধানসভার শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে তাঁকে সাসপেন্ড করা যেতে পারে।
✔️ কাগজ ছিঁড়ে ফেলা, ওয়েলে নেমে স্লোগান দেওয়া বিধানসভার নিয়মবিরুদ্ধ।
✔️ কোনও দল যদি সাসপেন্ডের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করতে চায়, তাহলে তারা উচ্চ আদালতে যেতে পারে।

“শেষ কথা”

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় রাজনৈতিক টানাপোড়েন আরও এক ধাপ বাড়ল। শুভেন্দু অধিকারীর সাসপেনশন নিয়ে বিজেপি ও তৃণমূল মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে।

এই ঘটনায় রাজ্যের রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। বিজেপি দাবি করছে এটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র, আর তৃণমূল বলছে বিধানসভার নিয়ম মানতে হবে।

এই পরিস্থিতি আগামী দিনে বিধানসভার কার্যক্রমে কতটা প্রভাব ফেলবে, তা সময়ই বলবে!

মাটির নীচ থেকে গর্জনের শব্দ! ভূমিকম্পের নতুন অভিজ্ঞতায় আতঙ্কিত দিল্লিবাসী— কেন হল এমন?

Read more

Local News