নয়াদিল্লি স্টেশনে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু!
নয়াদিল্লি রেল স্টেশনে শনিবার রাতে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে শিশু, নারী ও বৃদ্ধরাই ছিলেন বেশি। রবিবার সকালে দিল্লি পুলিশ মৃতদের নাম ও পরিচয় প্রকাশ করেছে। নিহতদের অধিকাংশই বিহার ও দিল্লির বাসিন্দা।
🚉 কী ঘটেছিল সেদিন?
শনিবার রাত ৮টার পর নয়াদিল্লি স্টেশনে মহাকুম্ভযাত্রীদের বিপুল ভিড় জমে। অভিযোগ, পর পর দুটি ট্রেন অনেকটা দেরিতে আসায় প্ল্যাটফর্মে ভিড় আরও বাড়তে থাকে। তখনই স্টেশনে প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস এসে পৌঁছায়।
এই ট্রেন ধরার জন্য হুড়োহুড়ি শুরু হয়। প্ল্যাটফর্মে ধাক্কাধাক্কির ফলে অনেকে পড়ে যান, এরপর বাকি যাত্রীরা অজান্তেই তাদের উপর দিয়ে হাঁটতে থাকেন। এর ফলে ঘটনাস্থলেই ১৮ জনের মৃত্যু হয় এবং অনেকে গুরুতর আহত হন।
📝 দিল্লি পুলিশের প্রকাশিত নিহতদের তালিকা:
দিল্লি পুলিশ যে ১৮ জনের নাম প্রকাশ করেছে, তাঁদের মধ্যে সাত বছরের শিশু থেকে ৭৯ বছরের বৃদ্ধা পর্যন্ত রয়েছেন।
- আহা দেবী (৭৯), বক্সার, বিহার
- পিঙ্কি দেবী (৪১), সঙ্গম বিহার, দিল্লি
- শীলা দেবী (৫০), সরিতা বিহার, দক্ষিণ-পূর্ব দিল্লি
- ব্যোম (২৫), বাওয়ানা, উত্তর-পশ্চিম দিল্লি
- পুনম দেবী (৪০), সারণ, বিহার
- ললিতা দেবী (৩৫), পটনা, বিহার
- সুরুচি (১১), মুজফ্ফরপুর, বিহার
- কৃষ্ণা দেবী (৪০), সমস্তিপুর, বিহার
- বিজয় শাহ (১৫), সমস্তিপুর, বিহার
- নীরজ (১২), বৈশালী, বিহার
- শান্তি দেবী (৪০), নওয়াদা, বিহার
- পূজা কুমার (৮), নওয়াদা, বিহার
- সঙ্গীতা মালিক (৩৪), ভিওয়ানি, হরিয়ানা
- পুনম (৩৪), মহাবীর এনক্লেভ, দিল্লি
- মমতা ঝা (৪০), নাঙ্গলোই, পশ্চিম দিল্লি
- রিয়া সিংহ (৭), সাগরপুর, দিল্লি
- বেবি কুমারী (২৪), বিজওয়াসন, দিল্লি
- মনোজ (৪৭), নাঙ্গলোই, পশ্চিম দিল্লি
💰 নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা
রেল কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছে:
✅ মৃতদের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
✅ গুরুতর আহতদের ২.৫ লাখ টাকা করে দেওয়া হবে।
✅ সামান্য আহতদের ১ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
দিল্লি পুলিশের তরফে এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে রেলওয়ে মন্ত্রণালয় দুই সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে দুর্ঘটনার আসল কারণ জানতে।
⚠️ ট্রেনের সময় সূচি নিয়ে ক্ষোভ, যাত্রীদের প্রশ্ন
এই ঘটনার পর যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। অনেকের অভিযোগ—
📌 প্রতি ঘণ্টায় দেড় হাজারের বেশি জেনারেল টিকিট বিক্রি করা হয়েছিল।
📌 ট্রেন দেরি হওয়ায় যাত্রীদের ধৈর্য হারিয়ে ফেলেন।
📌 স্টেশনে পর্যাপ্ত পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মী না থাকায় বিশৃঙ্খলা আরও বেড়ে যায়।
এই দুর্ঘটনা এড়ানো যেত কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তবে রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যাতে না ঘটে, তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
🔎 তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত দায় কার?
এই মুহূর্তে তদন্ত চলছে। তবে যাত্রীদের অভিযোগ, রেলের অব্যবস্থাই এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। দিল্লি পুলিশ এবং রেলওয়ে প্রশাসন আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করবে।
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা পুরো দেশকে নাড়া দিয়েছে। বিশেষ করে মহাকুম্ভে যোগ দিতে আসা সাধারণ মানুষদের এমন করুণ পরিণতি সকলকেই ব্যথিত করেছে।
একদিনেই ২০ লাখ অনুগামী হারালেন! বিতর্কের কেন্দ্রে ইউটিউবার রণবীর ইলাহাবাদিয়া, কত আয় করেন তিনি?