নতুন মুখ্যমন্ত্রী খুঁজে পেল না বিজেপি!
প্রায় দুই বছর ধরে চলা অশান্তির পর অবশেষে মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করল কেন্দ্র। এন বীরেন সিংহের ইস্তফার পর নতুন মুখ্যমন্ত্রী ঠিক করতে ব্যর্থ হয়েছে বিজেপি, যার ফলে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংঘর্ষ-বিধ্বস্ত রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করাই এখন সরকারের মূল লক্ষ্য।
কেন জারি হলো রাষ্ট্রপতি শাসন?
📌 ৯ ফেব্রুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়েন এন বীরেন সিংহ।
📌 বিজেপি নতুন নেতা বাছতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রশাসনিক অচলাবস্থা তৈরি হয়।
📌 মণিপুরের রাজ্যপাল কেন্দ্রকে রিপোর্ট পাঠান, যেখানে সংকটের কথা উল্লেখ করা হয়।
📌 রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সংবিধানের ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করে রাষ্ট্রপতি শাসনের অনুমোদন দেন।
বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রাজ্যপালের রিপোর্ট এবং অন্যান্য তথ্য বিশ্লেষণ করে রাষ্ট্রপতি মনে করেছেন, সংবিধান অনুযায়ী রাজ্য সরকার পরিচালনা সম্ভব নয়। তাই কেন্দ্রীয় সরকার এখন মণিপুরের আইনশৃঙ্খলা ও প্রশাসনের দায়িত্ব নেবে।
বিজেপির অচলাবস্থা: কেন মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন করতে পারল না দল?
✅ বীরেন সিংহের পদত্যাগের পর বিজেপি নেতৃত্ব নতুন মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন নিয়ে দোটানায় পড়ে।
✅ উত্তর-পূর্বে বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সম্বিত পাত্র একাধিকবার বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করেও সমাধান বের করতে পারেননি।
✅ রাজ্যপালের সঙ্গে দু’দিন ধরে আলোচনা করেও বিজেপি রাজ্য সভাপতি এ সারদা দেবী কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেননি।
✅ এই অচলাবস্থার ফলেই রাষ্ট্রপতি শাসনের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলো কেন্দ্র।
মণিপুরে দেড় বছর ধরে চলা অশান্তি: কী ঘটেছিল?
২০২৩ সালের মে মাসে মেইতেই ও কুকি-জো জনগোষ্ঠীর মধ্যে জাতিগত সংঘর্ষ শুরু হয়।
🔸 বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়, হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হন।
🔸 কয়েকশো মানুষের মৃত্যু হয়, বহু পরিবার আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে।
🔸 সরকারের নিয়ন্ত্রণ দুর্বল হয়ে পড়লে মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
🔸 ২০২৪ সালের শেষ দিকে বীরেন সিংহ প্রকাশ্যে ক্ষমা চান এবং ২০২৫ সালের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার প্রতিশ্রুতি দেন।
কিন্তু, বাস্তবে অশান্তি বাড়তেই থাকে এবং রাজ্যে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয় সরকার।
বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া: ‘দেরিতে হলেও সঠিক সিদ্ধান্ত’
📢 তৃণমূলের লোকসভার মুখ্য সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রাষ্ট্রপতি শাসন দেরিতে এলেও অবশেষে সরকার সঠিক সিদ্ধান্ত নিল। কিন্তু এখন শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী মোদীর সফর যথেষ্ট নয়, তিনি সর্বদলীয় সাংসদদের নিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখুন।”
📢 কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, “মণিপুরের সংকট বিজেপির ব্যর্থ প্রশাসনের চূড়ান্ত উদাহরণ। কেন্দ্র শুরু থেকেই নিষ্ক্রিয় ছিল, আর আজ এতদিন পর রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করতে বাধ্য হলো।”
এরপর কী? রাষ্ট্রপতি শাসনে কী হবে?
📌 রাজ্য সরকার কার্যত বিলুপ্ত, কেন্দ্রীয় সরকার সরাসরি প্রশাসন চালাবে।
📌 রাজ্যপালের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, বিধানসভা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত।
📌 পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত কোনো নির্বাচনের সম্ভাবনা নেই।
📌 রাজ্যে সেনা ও আধা-সামরিক বাহিনীর উপস্থিতি আরও বাড়তে পারে।
শেষ কথা: বিজেপির বড় রাজনৈতিক ধাক্কা?
মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হওয়া বিজেপির জন্য বড় রাজনৈতিক ব্যর্থতা।
✔️ দীর্ঘ দেড় বছর ধরে চলা অশান্তি থামাতে পারেনি রাজ্য প্রশাসন।
✔️ নিজেদেরই শাসিত রাজ্যে নতুন নেতা খুঁজে পেতে ব্যর্থ হয়েছে দল।
✔️ এটি কেন্দ্রের উপর প্রশাসনিক দায় বাড়াবে, যা আগামী নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে।
এখন দেখার, রাষ্ট্রপতি শাসনের অধীনে কত দ্রুত মণিপুরে শান্তি ফিরে আসে, আর কবে রাজ্যে নতুন সরকার গঠনের পথ সুগম হয়।
একদিনেই ২০ লাখ অনুগামী হারালেন! বিতর্কের কেন্দ্রে ইউটিউবার রণবীর ইলাহাবাদিয়া, কত আয় করেন তিনি?