সলমন-সঞ্জয়ের প্রত্যাখ্যান!
বলিউডের সুপারহিট সিনেমার তালিকায় ‘ধুম’ (২০০৪)-এর নাম বরাবরই বিশেষ জায়গা দখল করে রেখেছে। কিন্তু জানেন কি, এই ছবির প্রধান খলনায়কের চরিত্রে প্রথমে ভাবা হয়েছিল সলমন খান এবং সঞ্জয় দত্তকে? দু’জনেই ছবিতে কাজ করতে রাজি হননি, আর তাঁদের সেই না বলা থেকেই এক নবাগত নায়কের ভাগ্য খুলে যায়। তিনি জন আব্রাহাম, যিনি এই ছবির মাধ্যমেই বলিউডে নিজের জায়গা পাকা করে ফেলেন।
সলমন-সঞ্জয়ের না, দুশ্চিন্তায় নির্মাতারা
‘ধুম’-এর কাহিনি এক চতুর চোর এবং পুলিশের মধ্যে লুকোচুরির লড়াই নিয়ে। যশরাজ ফিল্মস যখন এই ছবির পরিকল্পনা করে, তখন পুলিশের চরিত্রের জন্য অভিষেক বচ্চন এবং তাঁর সঙ্গীর চরিত্রে উদয় চোপড়াকে বেছে নেয় তারা। নায়িকাদের চরিত্রে নেওয়া হয় রিমি সেন এবং এষা দেওলকে। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র ছিল খলনায়ক কবীর, যে অত্যন্ত বুদ্ধিমান এবং সাহসী।
প্রথমে এই চরিত্রের জন্য সলমন খানকে প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি খলনায়কের চরিত্রে অভিনয়ে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেননি এবং ছবিটি ফিরিয়ে দেন। এরপর নির্মাতারা যান সঞ্জয় দত্তের কাছে, কিন্তু তিনিও কোনও অজানা কারণে প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন।
দুই শীর্ষস্থানীয় অভিনেতার না বলার পর বিপাকে পড়ে যান নির্মাতারা।
নবাগতদের দিকে নজর, সুযোগ পেলেন জন আব্রাহাম
দুই তারকা যখন রাজি হলেন না, তখন নতুন মুখের সন্ধান শুরু করলেন নির্মাতারা। সেই সময় তাঁদের নজরে আসে জন আব্রাহাম এবং দিনো মোরিয়া।
যেহেতু জন আব্রাহাম তখন বলিউডে সদ্য পা রেখেছিলেন এবং মাত্র ‘জিস্ম’ (২০০৩) নামে একটি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন, তাই নির্মাতারা প্রথমে তাঁকেই সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। জনের লুক, ব্যক্তিত্ব এবং অ্যাকশন ফিল্মের জন্য তাঁর চেহারা একেবারে পারফেক্ট মনে হয়েছিল নির্মাতাদের কাছে।
জনের কাছে যখন ‘ধুম’-এর প্রস্তাব যায়, তখন তিনি এক মুহূর্তও দেরি না করে ছবিটি করতে রাজি হয়ে যান। আর এটাই তাঁর কেরিয়ারের অন্যতম সেরা সিদ্ধান্ত হয়ে ওঠে।
বক্স অফিসে সুপারহিট, জনের কেরিয়ার নতুন দিশা পেল
২০০৪ সালে মাত্র ১১ কোটি টাকার বাজেটে তৈরি হয় ‘ধুম’। ছবিটি মুক্তির পর প্রায় ৭০ কোটি টাকার ব্যবসা করে, যা সেই সময়ের জন্য ছিল এক বিরাট সাফল্য।
জন আব্রাহামের অভিনয় দর্শকদের এতটাই মুগ্ধ করেছিল যে, রাতারাতি তিনি বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় নায়ক হয়ে ওঠেন। তাঁর স্মার্ট চেহারা, স্টাইলিশ বাইক চালানো এবং নেগেটিভ চরিত্রে দুর্দান্ত অভিনয় দর্শকদের মনে দাগ কেটে যায়।
‘ধুম’-এর উত্তরাধিকার, পরবর্তী খলনায়করা
‘ধুম’-এর সাফল্যের পরই যশরাজ ফিল্মস আরও দুই সিক্যুয়েল বানানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
✔ ‘ধুম ২’ (২০০৬)-এ খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করেন হৃতিক রোশন, এবং ছবিটি আগেরটির থেকেও বেশি জনপ্রিয়তা পায়।
✔ ‘ধুম ৩’ (২০১৩)-তে দেখা যায় আমির খানকে, যিনি দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের তাক লাগিয়ে দেন।
তবে সব কিছুর শুরুটা হয়েছিল জন আব্রাহামের হাত ধরেই। সলমন-সঞ্জয় যদি ‘ধুম’ করতেন, তাহলে হয়তো বলিউড একজন স্টাইলিশ খলনায়ক পেত না, এবং জনের কেরিয়ারও অন্য দিকে মোড় নিত।
শেষ কথা
‘ধুম’-এর সাফল্য প্রমাণ করে, সুযোগ কখনোই হাতছাড়া করা উচিত নয়। সলমন ও সঞ্জয় এই ছবি প্রত্যাখ্যান করলেও, জন সেটাকে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়েছিলেন এবং বলিউডে নিজের জায়গা শক্ত করেছিলেন। বলিউডে এমন অনেক উদাহরণ আছে, যেখানে বড় তারকারা না বলায় নতুনদের ভাগ্য খুলে গেছে, আর ‘ধুম’ তার অন্যতম চমৎকার নিদর্শন!
“রাজ্যের বাজেট দিশাহীন!”— এক সুরে আক্রমণ শানালেন শুভেন্দু, নওশাদ ও বাম-কংগ্রেস