Tuesday, February 11, 2025

জলাভূমির পাশে বাড়ি? এবার চাই মৎস্য দফতরের অনুমতি!

Share

জলাভূমির পাশে বাড়ি?

সম্প্রতি কলকাতা ও সংলগ্ন অঞ্চলে একাধিক বহুতল হেলে পড়ার ঘটনা প্রশাসনের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। বাঘাযতীন, ট্যাংরা, হাওড়া, সল্টলেক— সর্বত্রই বাড়ির ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার খবর মিলেছে। এই পরিস্থিতিতে জলাভূমির পাশে নির্মাণকাজের ক্ষেত্রে নতুন নিয়ম জারি করল রাজ্য সরকার।

এখন থেকে নদী, খাল-বিল বা জলাভূমি সংলগ্ন এলাকায় কোনো নতুন নির্মাণ করতে হলে মৎস্য দফতরের ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ (NOC) বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী জানালেন, “সম্প্রতি যেভাবে একের পর এক বাড়ি হেলে পড়ছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগের। এই কারণেই আমরা কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছি।”


🏗️ কেন এই সিদ্ধান্ত?

🔹 আইন অনুযায়ী জলাভূমিকে কখনোই বাস্তুজমিতে পরিণত করা যায় না।
🔹 কিন্তু একাধিক জায়গায় জলাভূমি ভরাট করে খাতায়-কলমে জমির ধরন বদলানো হচ্ছে।
🔹 যার ফলে ভবন নির্মাণের পর ধীরে ধীরে মাটি বসে যাচ্ছে, ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।
🔹 প্রাকৃতিক ভারসাম্যও নষ্ট হচ্ছে, যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি।

মৎস্য দফতর এখন থেকে নির্মাণকাজের আগে নিরীক্ষা করবে, সংশ্লিষ্ট এলাকা আসলেই বাস্তুজমি কি না।


📜 কীভাবে কাজ করবে এই নতুন নিয়ম?

জেলায় জেলায় ‘টাস্ক ফোর্স’ গঠন করা হবে, যারা জলাভূমি সংলগ্ন নির্মাণকাজের ওপর নজর রাখবে।
✅ কোনো নিয়মভঙ্গকারী নির্মাণ দেখলেই তা গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে।
✅ নির্মাণের জন্য আগে জমির প্রকৃতি খতিয়ে দেখতে হবে। যদি আগে সেখানে জলাভূমি থাকে, তাহলে অনুমতি মিলবে না।
✅ এই নিয়ম শুধু বর্তমান জলাভূমির জন্য নয়, যেসব জায়গা একসময় জলাভূমি ছিল, সেসব এলাকাও এই নিয়মের আওতায় আসবে।


🌍 বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন?

💬 পূর্ত দফতরের অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার বিমলেন্দু দত্তগুপ্ত বলেন,
“যে এলাকাকে এখন স্থলভূমি মনে হচ্ছে, সেখানে হয়তো কয়েক দশক আগেও জলাভূমি ছিল। সে ক্ষেত্রে সেখানে নির্মাণ হলে ভবিষ্যতে বিপদের আশঙ্কা থাকবে। প্রশাসনের উচিত এই নিয়ম কঠোরভাবে কার্যকর করা।”

তবে তিনি এটাও মনে করিয়ে দেন, “নিয়ম করা এক জিনিস, কিন্তু বাস্তবায়নই আসল।”


🏠 নিয়ম ভাঙলেই ব্যবস্থা!

📌 ইএম বাইপাসের ধারে, হাওড়া, রাজারহাটসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাভূমি ভরাটের একাধিক অভিযোগ উঠেছে।
📌 এক শ্রেণির প্রোমোটার ও সরকারি আধিকারিকের যোগসাজশে জলাভূমি বুজিয়ে জমি বানানোর প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে।
📌 মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও বলেছেন, “ভূমি ও ভূমিসংস্কার দফতরের কিছু অসাধু আধিকারিক এ কাজে জড়িত।
📌 এর ফলে রাজ্য সরকার বড় সংখ্যায় বিএলআরও (ভূমি ও ভূমিসংস্কার আধিকারিক)-দের বদলি করেছে।


⚠️ পরিবেশের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ এই সিদ্ধান্ত?

জলাভূমি কেবল জল ধরে রাখার জায়গা নয়, এটি পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

🌱 জলাভূমি সংলগ্ন এলাকায় নির্মাণ হলে:
🔹 ভূগর্ভস্থ জলস্তর কমতে থাকে।
🔹 অবকাঠামোর ভার সহ্য করতে না পেরে জমি বসে যায়।
🔹 ভবনগুলোর ভিত দুর্বল হয়ে পড়ে, যা দীর্ঘমেয়াদে বিপজ্জনক।
🔹 বন্যা ও জলাবদ্ধতার সমস্যা বাড়ে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এখনই যদি এই প্রবণতা রোখা না যায়, তাহলে আগামী দশকে কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকার অবকাঠামো ভয়াবহ বিপদের মুখে পড়বে।

৩০০ কিলোমিটার যানজটে অচল কুম্ভযাত্রা! ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে পুণ্যার্থীরা, বন্ধ রেলস্টেশনও

Read more

Local News