Tuesday, February 11, 2025

নীরজের পরামর্শ মেনে সোনার হাসি, হুগলির মেয়ে মৌমিতার অনন্য কীর্তি

Share

নীরজের পরামর্শ মেনে সোনার হাসি!

হুগলির ছোট্ট শহর জিরাট থেকে দেশের সেরা মঞ্চে পৌঁছনোর লড়াইটা সহজ ছিল না। বাবা রেলস্টেশনের কাছে ছোট্ট চায়ের দোকান চালান, মা গৃহবধূ। স্বপ্ন ছিল ক্রিকেটার হওয়ার, কিন্তু খেলার সরঞ্জাম কেনার মতো সামর্থ্য ছিল না পরিবারের। তাই অ্যাথলেটিক্সের দিকে ঝুঁকেছিলেন মৌমিতা মণ্ডল— আর আজ সেই সিদ্ধান্তই তাঁকে এনে দিল জাতীয় গেমসে সোনার পদক!

🥇 লংজাম্পে স্বপ্নপূরণ, হার্ডলসে হতাশা মুছে দিল সোনা

রবিবার জাতীয় গেমসের ১০০ মিটার হার্ডলস ইভেন্টে রুপো জেতার পর খানিকটা হতাশ ছিলেন মৌমিতা। কিন্তু নিজেকে দমতে দেননি! পরের ইভেন্ট ছিল লংজাম্প— যেখানে তিনি ৬.২১ মিটার লাফিয়ে সোনার পদক জিতে নিলেন।

🏆 “১০০ মিটার হার্ডলসে রুপো পাওয়ার পর মনটা খারাপ ছিল, কিন্তু লংজাম্পে সোনা জেতার পর সব হতাশা উড়ে গেছে। এটা আমার কেরিয়ারের সবচেয়ে বড় সাফল্য,” বলছিলেন ২৩ বছরের এই তরুণী।

🏃 ছোটবেলার স্বপ্ন ছিল ক্রিকেট, বাধা হয়ে দাঁড়াল অর্থ

একসময় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে দেখে বড় হয়েছেন মৌমিতা। স্বপ্ন ছিল মাঠে চার-ছক্কার ঝড় তোলার। কিন্তু ক্রিকেটের ব্যাট-প্যাড কেনার সামর্থ্য ছিল না পরিবারে। তাই বাধ্য হয়েই অ্যাথলেটিক্স বেছে নেওয়া।

👉 প্রথমে শ্রীরামপুরে হার্ডলস শুরু করেন, পরে চলে যান ভুবনেশ্বরে প্রশিক্ষণের জন্য।
👉 সেখান থেকে দুই বছর পর সুযোগ পান মুম্বইয়ের রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন অ্যাকাডেমিতে।
👉 প্রশিক্ষণের সুযোগ পেয়ে রাজ্য ছাড়তে হলেও বাংলা দলে খেলার স্বপ্ন ছাড়েননি কখনও।

🎯 নীরজ চোপড়ার পরামর্শে বদলে গেল লক্ষ্য

গত বছর ভুবনেশ্বরে ফেডারেশন কাপ অ্যাথলেটিক্স মিটে হার্ডলস এবং লংজাম্পে জোড়া ব্রোঞ্জ পেয়েছিলেন মৌমিতা। সেখানেই সাক্ষাৎ হয় টোকিও অলিম্পিক্সে সোনাজয়ী নীরজ চোপড়ার সঙ্গে।

🇮🇳 নীরজ তাঁকে কী পরামর্শ দিয়েছিলেন?

🗣️ “তিনি বলেছিলেন – সাফল্যের কোনো শর্টকাট নেই। মাঠের ভেতর যেমন কঠোর পরিশ্রম করতে হয়, মাঠের বাইরেও তেমন শৃঙ্খলাপরায়ণ হতে হবে। লক্ষ্যে স্থির থাকতে হবে।”

🎯 মৌমিতা বলেন, “নীরজের সেই কথাই মেনে চলার চেষ্টা করি। আজকের এই সাফল্যের পেছনে তাঁর পরামর্শ অনেকটাই অনুপ্রেরণা দিয়েছে।”

💰 চাকরি পেয়েও স্বীকৃতি পেলেন না! অভিমান ঝরল কণ্ঠে

রাজ্য সরকার পদকজয়ী খেলোয়াড়দের চাকরি ও আর্থিক পুরস্কারের ঘোষণা করেছে। কিন্তু মৌমিতার কণ্ঠে কিছুটা অভিমান, “আমি পূর্ব রেলে চাকরি করছি, কিন্তু এতদিন ধরে জাতীয় পর্যায়ে বাংলার হয়ে পদক জিতেও তেমন কোনো স্বীকৃতি পাইনি।”

🗣️ “বাংলার জন্য বহুদিন ধরে লড়াই করছি, কিন্তু প্রচারের আলো কখনো আমাদের দিকে পড়ে না। বাধ্য হয়ে মুম্বইয়ে চলে যেতে হয়েছে,” বলেন তিনি।

🚀 পরবর্তী লক্ষ্য – এশিয়ান গেমস ও চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা

🥇 সোনাজয়ের পর এখন মৌমিতার নজর এশিয়ান গেমসের দিকে। তিনি বলেন—

🔥 “আগামী বছর এশিয়ান গেমসে ভারতের হয়ে পদক আনতে চাই। তার আগে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ ও ফেডারেশন কাপে সোনা জয় করতে চাই।”

দেশকে পদক এনে দেওয়ার স্বপ্নে বিভোর হুগলির এই মেয়ে জানিয়ে দিলেন – পথ যত কঠিনই হোক, তিনি হার মানতে রাজি নন!

✨ বাংলার জন্য স্বর্ণযুগ – জিমন্যাস্টিকসেও সোনার হাসিরবিবার বাংলার ক্রীড়াঙ্গনের জন্য এক উজ্জ্বল দিন ছিল। শুধু মৌমিতা নন, বাংলার মেয়েরা জিমন্যাস্টিক্সেও দলগত বিভাগে সোনা জিতেছে।

🎖️ সোনাজয়ী বাংলার জিমন্যাস্টরা:
প্রণতি দাস
প্রতিষ্ঠা সামন্ত
বিদিশা গায়েন
ঋতু দাস
জিনিয়া দেবনাথ
স্বস্তিকা গঙ্গোপাধ্যায়

এছাড়াও লন টেনিসের মিক্সড ডাবলসে নীতিন সিংহ ও যুবরানি বন্দ্যোপাধ্যায় ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছেন।

বাংলার মেয়েরা একের পর এক সাফল্য এনে দিচ্ছে, শুধু দরকার উপযুক্ত স্বীকৃতি ও সমর্থনের। যদি সঠিক সুযোগ পান, তাহলে আন্তর্জাতিক মঞ্চেও দেশকে গর্বিত করতে পারেন মৌমিতার মতো প্রতিভারা!

গুরুতর অসুস্থ ওড়িয়া অভিনেতা উত্তম মহান্তি, ভেন্টিলেশনে রেখে দিল্লিতে স্থানান্তর

Read more

Local News