আরজি কর-কাণ্ড!
কলকাতার আরজি কর হাসপাতালের মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার তদন্ত নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে নির্যাতিতার পরিবার। সিবিআইয়ের করা তদন্তে তাঁরা পুরোপুরি সন্তুষ্ট নন এবং পুনরায় তদন্তের দাবি তুলেছেন। সেই কারণেই তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে দ্রুত শুনানির আবেদন জানিয়েছিলেন। তবে শুক্রবার শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না জানিয়েছেন, এই মামলায় তাড়াহুড়োর কোনো প্রয়োজন নেই। আগামী ১৭ মার্চ নির্ধারিত তারিখেই শুনানি হবে।
পরিবারের অভিযোগ: একা সঞ্জয় কি সত্যিই দোষী?
সিবিআইয়ের তদন্ত অনুযায়ী, এই ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়। তদন্ত শেষে সংস্থাটি চার্জশিটে তাঁর নাম উল্লেখ করেছে এবং শিয়ালদহ আদালত সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করে শাস্তির নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু নির্যাতিতার পরিবারের বিশ্বাস, এই ঘটনায় সঞ্জয় একা দায়ী নন, আরও কেউ বা কোনো প্রভাবশালী গোষ্ঠী এর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।
তাঁদের দাবি, সিবিআই-এর তদন্তে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। ফলে তাঁরা চাইছেন, তদন্ত আরও একবার নতুন করে খতিয়ে দেখা হোক। এই কারণেই তাঁরা কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তবে সেখান থেকে জানানো হয়, এই মামলাটি শুনতে হলে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ বা সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি প্রয়োজন।
এরপর তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন এবং মামলার দ্রুত শুনানির আবেদন জানান। কিন্তু শুক্রবার প্রধান বিচারপতি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, এই মামলায় কোনও জরুরি ভিত্তিতে শুনানির প্রয়োজন নেই এবং নির্ধারিত ১৭ মার্চেই মামলাটি শোনা হবে।
সিবিআই তদন্ত নিয়ে অসন্তোষ কেন?
নির্যাতিতার মা-বাবার বক্তব্য অনুযায়ী, তদন্তের একাধিক গাফিলতি রয়েছে এবং সিবিআই আরও গভীরে না গিয়ে ঘটনাটিকে সীমিত গণ্ডির মধ্যে আটকে ফেলেছে। তাঁদের মতে:
- সঞ্জয়ের পক্ষে একা এই ভয়ঙ্কর অপরাধ ঘটানো সম্ভব নয়।
- তদন্তে অন্যান্য সম্ভাব্য অভিযুক্তদের ভূমিকা সঠিকভাবে খতিয়ে দেখা হয়নি।
- মামলার একাধিক দিক এখনও অজানা রয়ে গেছে।
এ কারণে তাঁরা মনে করেন, তদন্ত নতুন করে শুরু করা প্রয়োজন এবং সমস্ত তথ্য পুনরায় বিশ্লেষণ করা উচিত।
১৭ মার্চের শুনানির গুরুত্ব
এই মামলার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে ১৭ মার্চের সুপ্রিম কোর্টের শুনানির উপর। সেদিন আদালত সিদ্ধান্ত নেবে:
- হাই কোর্টে মামলাটির নতুন করে শুনানি হবে কি না।
- সিবিআই তদন্ত নতুন করে শুরু করা হবে কি না।
- নতুন কোনো তথ্যপ্রমাণ আদালতে উপস্থাপন করা প্রয়োজন কিনা।
পরিবারের আশা, ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে
নির্যাতিতার বাবা-মা এখন আশায় রয়েছেন যে, ১৭ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট তাঁদের আবেদন গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে এবং প্রকৃত দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করবে। তাঁদের বক্তব্য, ন্যায়বিচার যেন কেবল একটি নামমাত্র বিষয় না হয়ে যায়, বরং সত্য উদঘাটন করে প্রকৃত অপরাধীদের সামনে নিয়ে আসতে পারে।
এই ঘটনাটি আইনের স্বচ্ছতা, সঠিক তদন্ত ও ন্যায়বিচারের দাবিতে এক গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হতে চলেছে। ১৭ মার্চের শুনানিতে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তা এখন সবার নজরে।
শিবলিঙ্গে দুগ্ধস্নান, মহাকুম্ভে কি এবার পুণ্যের পথে ভিকি কৌশল?