Friday, February 7, 2025

ফের ভূস্বর্গে রক্তাক্ত সংঘর্ষের আশঙ্কা: হামাসের সঙ্গে পাকিস্তানি জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির ‘মহাজোট’

Share

ফের ভূস্বর্গে রক্তাক্ত সংঘর্ষের আশঙ্কা!

কাশ্মীরের ভূখণ্ডে সন্ত্রাসের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হচ্ছে। ৫ ফেব্রুয়ারি, ‘কাশ্মীর সংহতি দিবস’ উপলক্ষে পাকিস্তান মদতপুষ্ট দুই জঙ্গি গোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈবা ও জইশ-ই-মহম্মদ নিজেদের মধ্যে নতুন জোট গঠন করল। এবং এবার এই জোটে যুক্ত হয়েছে প্যালেস্টাইনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসও। পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে (পিওকে) অনুষ্ঠিত একটি বিশাল সমাবেশে এক মঞ্চে দেখা গিয়েছে এই তিন সংগঠনের নেতাদের। এর ফলে কাশ্মীর উপত্যকায় সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

প্রতিবছর ৫ ফেব্রুয়ারি ইসলামাবাদ কাশ্মীর সংহতি দিবস পালন করে এবং এ বছরও এর ব্যতিক্রম হয়নি। পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের রাউলাকোটে লস্কর ও জইশের এই সম্মেলন আয়োজন করা হয়। এ উপলক্ষে হামাসের একটি শীর্ষনেতা উপস্থিত ছিলেন। তাদের এই ঐতিহাসিক সমাবেশের নামকরণ করা হয় ‘কাশ্মীর সংহতি এবং আল-আকসা ফ্লাড সম্মেলন’। এই নামটি গত দেড় বছর ধরে চলা ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের সঙ্গে সম্পর্কিত, যেখানে হামাস ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালায়।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস গাজা থেকে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে এক বড় আক্রমণ চালায়, যাতে প্রায় ১,২০০ নিরীহ মানুষের প্রাণহানি ঘটে। হামাসের এই আক্রমণকে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নাম দেওয়া হয়, যা কাশ্মীর সংহতি দিবসের সম্মেলনে ব্যবহার করা হয়েছিল, যা আন্তর্জাতিক মহলে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

এই সম্মেলনে জইশের প্রধান মাসুদ আজহারের ভাই তাল্‌হা সইফ এবং কম্যান্ডার আজগর খান কাশ্মিরি ছাড়াও লস্কর-ই-তৈবার একাধিক নেতা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া হামাসের তরফ থেকে ইরানের প্রতিনিধি খালিদ আল-কাদুমি উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনের আলোচনায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

পাকিস্তান মদতপুষ্ট জইশ ও লস্কর ভারতে একাধিক সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ২০০১ সালের সংসদ ভবন হামলা, ২০০৮ সালের মুম্বই হামলা, এবং ২০১৯ সালে কাশ্মীরে পুলওয়ামায় সিআরপিএফ কনভয়ে আত্মঘাতী হামলা। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত এই দুই সংগঠন হামাসের সঙ্গে জোট বাঁধায় ভারতের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, হামাসের সঙ্গে এই নতুন জোট গঠন, বিশেষত ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ শিরোনাম ব্যবহার করার ফলে কাশ্মীরের ভূখণ্ডে বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। একসাথে রকেট হামলার ঘটনা ঘটতে পারে এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইও এই সংগঠনগুলোকে ভূস্বর্গে সন্ত্রাসবাদী পাঠানোর জন্য সুড়ঙ্গ তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

এদিকে, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ৪ ও ৫ ফেব্রুয়ারি জম্মু-কাশ্মীরের নিরাপত্তা বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিশেষ গুরুত্ব দেন। তার ভাষায়, “আমরা উপত্যকায় সন্ত্রাসবাদীদের শিকড় উপড়ে ফেলতে চাই এবং অনুপ্রবেশের হার শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করছি।”

পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে প্যালেস্টাইনের স্বাধীনতার পক্ষে সমর্থন জানিয়ে আসছে এবং ইজরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। এই পরিস্থিতিতে ভারতের কৌশলগত অবস্থানও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, কারণ ইজরায়েলের সঙ্গে ভারত সম্পর্ক আরও গভীর করেছে।

বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, হামাসের সঙ্গে এই নতুন জোট গঠন পাকিস্তান ও তার মিত্রদের জন্য কাশ্মীর উপত্যকায় এক নতুন সন্ত্রাসী অভিযান শুরুর প্রস্তুতি হতে পারে, যা ভারতীয় নিরাপত্তার জন্য এক বিপজ্জনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে।

শিবলিঙ্গে দুগ্ধস্নান, মহাকুম্ভে কি এবার পুণ্যের পথে ভিকি কৌশল?

Read more

Local News