দেশে নিষিদ্ধ হোক আমিষ খাবার, শত্রুঘ্ন সিনহার দাবি!
বাংলাদেশের মতো বৃহত্তর ভারতবর্ষের নানা সংস্কৃতি ও খাবারের পার্থক্য এখনও খুব স্পষ্ট। তবে এবার সেই পার্থক্যের ওপর সওয়াল করেছেন তৃণমূলের আসানসোলের সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা। তিনি দাবি করেছেন, গো-মাংস ও অন্যান্য আমিষ খাবার পুরো দেশেই নিষিদ্ধ করা উচিত। কিন্তু তাঁর এই বিতর্কিত মন্তব্যের সঙ্গে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতামত একেবারে আলাদা।
গত মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে শত্রুঘ্ন সিনহা অভিন্ন দেওয়ানি বিধি (ইউনিফর্ম সিভিল কোড বা ইউসিসি) সম্পর্কে তার প্রশংসা করেছিলেন এবং উত্তরাখণ্ডের এই বিধি প্রবর্তনকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, ‘‘দেশে শুধু গো-মাংসই নয়, সমস্ত আমিষ পদ নিষিদ্ধ করা উচিত।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘উত্তর-পূর্ব ভারতে এই খাবার সহজেই পাওয়া যায়, কিন্তু উত্তর ভারতে সেই সুবিধা নেই।’’ এর মাধ্যমে শত্রুঘ্ন একটি নতুন বিতর্ক তৈরি করেছেন, যেখানে ভারতীয় অঞ্চলের মধ্যে খাবারের সংস্কৃতি এবং আইনগত পার্থক্য নিয়ে সওয়াল করা হয়েছে।
শত্রুঘ্ন এর পাশাপাশি ইউসিসি কার্যকর করার প্রক্রিয়া নিয়েও আলোচনা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘‘উত্তর ভারত ও উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য একই আইন থাকা উচিত। দেশের এক নিয়ম হওয়া উচিত, আর এই নিয়মের প্রতি সমর্থন জানানো উচিত সবার।’’
এদিকে, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য এ বিষয়ে ভিন্ন মতামত পোষণ করেছেন। তিনি মনে করেন, ‘‘প্রত্যেক রাজ্যের আলাদা বিশেষত্ব রয়েছে। কেউ আমিষ খান, কেউ নিরামিষাসী—এটাই ভারত।’’ কিছুদিন আগে, তিনি জানিয়েছিলেন, ‘‘আমরা কোন জাতের বা কোন রাজ্য থেকে এসেছি, সেটা নিয়ে বিভেদ তৈরি করা উচিত নয়।’’ তাঁর এই মন্তব্যের পর, শত্রুঘ্নের বিতর্কিত বক্তব্য আরও গুরুত্ব পেয়েছে, কারণ মমতা বরাবরই সামাজিক অখণ্ডতা ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের পক্ষে।
শত্রুঘ্ন সিনহার বক্তব্যের পর, তৃণমূলের মধ্যে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া আসবে তা এখন দেখার বিষয়। মমতার দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর আগেও বলেছিলেন, ‘‘মাছ খেলে দেশের শত্রু হওয়া যায় না!’’—এটা স্পষ্ট করে দেখিয়েছে যে তৃণমূল দলের মধ্যে আমিষ ও নিরামিষ নিয়ে কোনও ধরণের বিধিনিষেধ নেই।
উত্তরাখণ্ডে গত ২৭ জানুয়ারি থেকে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হওয়ায় দেশে এক নতুন রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। শত্রুঘ্ন এই অভিন্ন আইনকে সমর্থন জানিয়েছেন, তবে তিনি মনে করেন, এমন আইনের প্রবর্তনকে আগেভাগে সবার সঙ্গে আলোচনা করা উচিত। ‘‘আইন গঠন করতে হবে, কিন্তু তা আগে যথাযথ আলোচনা করা উচিত।’’—এটাই তাঁর মূল বক্তব্য।
এছাড়া, গুজরাত রাজ্যও ইউসিসি প্রয়োগ করতে চলেছে। তবে, শত্রুঘ্ন সিনহা মনে করেন, গোটা দেশে এই বিধি কার্যকরী করতে হলে একত্রে রাজনৈতিক দলগুলির মতামত নিতে হবে। সব মিলিয়ে, ভারতের আইন ও সামাজিক সংস্কৃতি নিয়ে শত্রুঘ্নের বক্তব্য বর্তমানে তৃণমূলের পক্ষ থেকে সংশয় সৃষ্টি করছে।
বিয়ের মাস দুয়েকের মধ্যে স্বামীর সঙ্গে মন কষাকষি শোভিতার, কোথায় ভুল করেছিলেন নাগা চৈতন্য?