Friday, February 7, 2025

গাজা দখলের ঘোষণা ট্রাম্পের! মধ্যপ্রাচ্যে নতুন অস্থিরতার ইঙ্গিত?

Share

গাজা দখলের ঘোষণা ট্রাম্পের!

মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বুধবার এক বিস্ফোরক ঘোষণা করলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প—গাজা ভূখণ্ডের দখল নেবে আমেরিকা! শুধু তাই নয়, গাজাকে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করে তোলার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি। এই ঘোষণার পরই আন্তর্জাতিক মহলে শুরু হয়েছে জল্পনা—ট্রাম্প কি নতুন কোনো যুদ্ধের সূচনা করতে চলেছেন?

নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক, গাজা নিয়ে চরম সিদ্ধান্ত

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বর্তমানে আমেরিকা সফরে রয়েছেন। মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল ইসরায়েল-হামাস সংঘর্ষ এবং গাজার ভবিষ্যৎ। বৈঠকের পর যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে ট্রাম্প স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করেন, “আমেরিকা গাজার দখল নেবে, আমরা ওই ভূখণ্ডের মালিক হব। সেখানে থাকা সমস্ত বিপজ্জনক অস্ত্র ধ্বংস করা হবে।”

ট্রাম্পের বক্তব্যের মধ্যে একটি চমকপ্রদ দিক ছিল—তিনি দাবি করেন, “গাজা একদিন পশ্চিম এশিয়ার গর্ব হবে।” তাঁর পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাজায় ব্যাপক উন্নয়ন হবে, হাজার হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, এবং এটি বিশ্বের মানুষের বাসস্থান হিসেবে গড়ে উঠবে। তবে তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান—গাজা থেকে বাস্তুচ্যুত হওয়া ফিলিস্তিনিদের ভবিষ্যৎ কী হবে?

আঞ্চলিক উত্তেজনার ইঙ্গিত?

ট্রাম্পের ঘোষণার পরই নতুন প্রশ্ন উঠেছে—এই সিদ্ধান্ত কি মধ্যপ্রাচ্যে নতুন অস্থিরতা সৃষ্টি করবে? কারণ, দীর্ঘদিন ধরেই গাজা ভূখণ্ড নিয়ে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। হামাস ইতিমধ্যেই ট্রাম্পের ঘোষণার তীব্র বিরোধিতা করেছে এবং জানিয়েছে, “বিনাযুদ্ধে আমরা গাজা ছাড়ব না।”

ট্রাম্পের পরিকল্পনায় ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে সরিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলিতে পুনর্বাসনের কথাও বলা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এটি কতটা সম্ভব? এর আগে বহুবার ফিলিস্তিনিরা নিজেদের ভূখণ্ড ছেড়ে যেতে অস্বীকার করেছে। ফলে এই পরিকল্পনা আদৌ সফল হবে কি না, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা সন্দিহান।

নেতানিয়াহুর সমর্থন, কিন্তু কীভাবে বাস্তবায়ন?

ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু তাঁকে সমর্থন করেছেন। তিনি বলেন, “ট্রাম্প প্রচলিত ধ্যানধারণার বাইরে গিয়ে চিন্তা করছেন, যা মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যৎ বদলে দিতে পারে।” কিন্তু কীভাবে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে, তা নিয়ে এখনো কোনো সুস্পষ্ট রূপরেখা দেওয়া হয়নি। ট্রাম্প শুধু বলেছেন, “সময় এলেই জানতে পারবেন!”

মধ্যপ্রাচ্যে নতুন সংঘর্ষের আশঙ্কা?

গাজায় দীর্ঘদিন ধরে সংঘাত চলছে, যার ফলে সেখানকার পরিস্থিতি অত্যন্ত অস্থির। ইসরায়েল এবং হামাস একাধিকবার যুদ্ধবিরতি চুক্তি করলেও, তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতির পরও সেখানে বহু প্রাণহানি ঘটেছে, যার মধ্যে নিরীহ সাধারণ মানুষও রয়েছে।

বিশ্ব রাজনীতির বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এই ঘোষণা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে সংঘর্ষ উসকে দিতে পারে। ফিলিস্তিনিরা গাজা ছেড়ে যেতে নারাজ, হামাস ইতোমধ্যেই যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে, আর ইসরায়েল ও আমেরিকা কৌশলে এক হয়ে পরিস্থিতি নিজেদের অনুকূলে আনার চেষ্টা করছে।

গাজার ভবিষ্যৎ কী?

গাজার ভবিষ্যৎ এখন এক অনিশ্চিত অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। যদি আমেরিকা সত্যিই গাজার দখল নেয়, তাহলে সেটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক বড় মোড় হবে। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে গেলে বড় ধরনের সংঘাত অনিবার্য হয়ে উঠতে পারে।

মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেবে, তা এখনো অনিশ্চিত। তবে একথা স্পষ্ট, ট্রাম্পের এই ঘোষণা বিশ্ব রাজনীতিতে এক নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

বিয়ের মাস দুয়েকের মধ্যে স্বামীর সঙ্গে মন কষাকষি শোভিতার, কোথায় ভুল করেছিলেন নাগা চৈতন্য?

Read more

Local News