আদালত চত্বরে বিচারকের দেহরক্ষীর রক্তাক্ত দেহ!
কলকাতার সিটি সিভিল কোর্টের প্রাঙ্গণে বুধবার সকালে ঘটে গেল এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। আদালত চত্বরে এক বিচারকের ব্যক্তিগত দেহরক্ষীর রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। স্থানীয়দের চোখে প্রথমে ধরা পড়ে মর্মান্তিক দৃশ্যটি। মাথায় গুলির চিহ্ন স্পষ্ট, পাশে পড়ে ছিল একটি ৯এমএম সার্ভিস রিভলভার। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে—এটি আত্মহত্যা নাকি পরিকল্পিত খুন?
সকালের নীরবতা ভেঙে চাঞ্চল্য
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বুধবার সকাল আনুমানিক ৭টা নাগাদ আদালতের ভবনের নিচতলায় দেহটি পড়ে থাকতে দেখা যায়। তখনও চেয়ারে বসা অবস্থায় ছিলেন ওই দেহরক্ষী, রক্তে ভেসে যাচ্ছিল চারপাশ। দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি—তিনি ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারিয়েছেন।
খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পুলিশ, তদন্ত শুরু
দেহরক্ষীর মৃত্যুর খবর পাওয়া মাত্রই তৎপর হয় পুলিশ। দ্রুত আদালত চত্বরে পৌঁছায় হেয়ার স্ট্রিট থানার আধিকারিকরা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের তদন্তকারীরাও। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের ডেকে পাঠানো হয়। ঘটনাস্থল ঘিরে চলে ফিঙ্গারপ্রিন্ট পরীক্ষা, জিজ্ঞাসাবাদ এবং অন্যান্য প্রাথমিক তদন্তের কাজ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দেহরক্ষীর পাশেই পড়ে ছিল একটি ৯এমএম পিস্তল, যা তাঁরই সার্ভিস রিভলভার বলে অনুমান করা হচ্ছে। এটি আত্মহত্যার ঘটনা নাকি কেউ কাছ থেকে গুলি চালিয়েছে, সেটাই এখন তদন্তের মূল বিষয়।
আত্মহত্যার তত্ত্ব না কি পরিকল্পিত হত্যা?
এখনও পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, পুলিশের সন্দেহের কেন্দ্রে রয়েছে দুটি বিষয়—
- আত্মহত্যার সম্ভাবনা: সার্ভিস রিভলভার দিয়ে নিজেই গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেছেন, এমনটা হতে পারে। মানসিক চাপ, ব্যক্তিগত সমস্যার মতো কারণও থাকতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
- হত্যার সম্ভাবনা: যদি এটি খুন হয়, তাহলে হত্যাকারী ঠিক কীভাবে পালিয়ে গেল? ঘটনাস্থল আদালত চত্বরের মতো নিরাপদ এলাকায়, যেখানে সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। খুন হলে খুনির কী উদ্দেশ্য ছিল, তা বোঝার চেষ্টা করছে পুলিশ।
ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় তদন্তকারীরা
পরিস্থিতির সঠিক বিশ্লেষণ করতে এবং মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট হাতে এলেই জানা যাবে, এটি আত্মহত্যা নাকি পরিকল্পিত হত্যা।
এদিকে, দেহরক্ষীর সহকর্মী ও ঘনিষ্ঠদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। তাঁর কোনো ব্যক্তিগত শত্রু ছিল কিনা, সাম্প্রতিক সময়ে তিনি কোনো হুমকি পেয়েছিলেন কিনা—এসব দিকও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আইনজীবী ও আদালতের কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক
এই ঘটনায় আইনজীবী থেকে শুরু করে আদালতের কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বিচারকের দেহরক্ষীর মতো গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা কর্মীর মৃত্যু কীভাবে ঘটল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আদালত চত্বরের মতো নিরাপদ জায়গায় এমন ঘটনা ভাবিয়ে তুলেছে সকলকে।
এখন সকলের নজর পুলিশের তদন্তের দিকে। এটি আত্মহত্যা নাকি খুন—সত্যিটা কী, তা জানতে অপেক্ষা করছে গোটা শহর।
বিয়ের মাস দুয়েকের মধ্যে স্বামীর সঙ্গে মন কষাকষি শোভিতার, কোথায় ভুল করেছিলেন নাগা চৈতন্য?