Saturday, February 8, 2025

গুলিচালনার আগে মানতে হবে একগুচ্ছ নিয়ম! পুলিশের বন্দুকে লাগাম পরাবে ইউনূসের বাংলাদেশ!

Share

গুলিচালনার আগে মানতে হবে একগুচ্ছ নিয়ম

বাংলাদেশে পুলিশ বাহিনীকে আরও নিয়ন্ত্রিত এবং দায়িত্বশীল করতে নতুন এক পদক্ষেপ নিয়েছে পুলিশ সংস্কার কমিশন। সম্প্রতি এই কমিশন একটি প্রস্তাবনা জমা দিয়েছে, যেখানে পুলিশের গুলি চালানোর ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে, পুলিশি ব্যবহারের ক্ষেত্রে আরও শৃঙ্খলা এবং মানবাধিকার রক্ষার উদ্দেশ্য। এই সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে, পুলিশের হাতে অস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে জারি করা হয়েছে একগুচ্ছ নতুন নিয়ম, যা বিশেষত শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ এবং প্রতিবাদের ক্ষেত্রে বলপ্রয়োগ সীমিত করবে।

বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে অতীতে বহুবার বিক্ষোভ দমনে পুলিশি শক্তির অপব্যবহার হয়েছে। বিশেষত, ২০২৩ সালের জুলাই মাসে নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর পুলিশ বাহিনীর নির্বিচারে গুলি চালানোর ঘটনায় সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছিল। এই ঘটনায় পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাসের ক্ষেত্রে বড় ধরনের ফাটল ধরেছিল। এর ফলস্বরূপ, পুলিশ সংস্কার কমিশন এই নতুন নিয়ম প্রণয়ন করার সিদ্ধান্ত নেয়।

কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, পুলিশ এখন থেকে কোনও পরিস্থিতিতে গুলি চালাতে গেলে তাকে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ অনুসরণ করতে হবে। প্রথমত, পুলিশের দায়িত্ব হবে জনতাকে কোনও শারীরিক শক্তি ছাড়াই, শুধুমাত্র কথার মাধ্যমে শান্ত করতে চেষ্টা করা। দ্বিতীয়ত, পুলিশের পক্ষ থেকে জনতার সঙ্গে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে তাদের আন্দোলন থামানোর চেষ্টা করা হবে। তৃতীয়ত, যদি বলপ্রয়োগ একান্ত প্রয়োজন হয়, তবে পুলিশকে গুলি চালানোর আগে অন্যান্য কৌশল প্রয়োগ করতে হবে। এই কৌশলগুলির মধ্যে রয়েছে জলকামান, কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড হ্যান্ড গ্রেনেড এবং পেপার স্প্রে। এর পরেও যদি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা না যায়, তবে তবেই পুলিশ শটগান বা ইলেকট্রিক পিস্তলের মতো শক্তিশালী অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবে। তবে, এই ব্যবহারের ক্ষেত্রে একমাত্র আত্মরক্ষা এবং সরকারি সম্পত্তি রক্ষার উদ্দেশ্যেই গুলি চালানো যাবে।

এই নতুন নিয়মের মাধ্যমে কমিশন চায়, পুলিশ বাহিনী যেন নিরীহ মানুষদের উপর ক্ষমতার অপব্যবহার না করে এবং জনগণের নিরাপত্তা সুরক্ষিত রাখতে পারি। রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তিরক্ষী বাহিনীর নীতি এবং ১৯৪৩ সালের পুলিশ আইনকে সামনে রেখে এই নিয়মগুলো আনা হয়েছে, যার মূল উদ্দেশ্য হল পুলিশকে আরও সংযত এবং মানবিকভাবে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করা।

কমিশনের সুপারিশের পর, এই নতুন নিয়ম কার্যকর হলে পুলিশের কাজকর্মে এক নতুন যুগের সূচনা হতে পারে। তবে, এসব নিয়ম কার্যকর করতে গেলে প্রয়োজন হবে যথাযথ প্রশিক্ষণ এবং পর্যবেক্ষণ। পুলিশের সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে যাতে তারা পরিস্থিতি অনুযায়ী সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে এবং একে অপরকে সহায়তা করতে পারে।

নতুন এই বিধিনিষেধের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের সাধারণ মানুষও আশা করছেন যে, পুলিশ বাহিনী আরও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে কাজ করবে এবং বিক্ষোভ বা প্রতিবাদগুলোতে নির্বিচারে গুলি চালানোর মতো পরিস্থিতি আর তৈরি হবে না।

গোটা রান্না: সরস্বতী পুজোয় পূর্ব বাংলার ঐতিহ্য, চচ্চড়ির স্বাদে নতুনত্ব

Read more

Local News