চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রস্তুতি নিয়ে বিতর্ক!
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরু হতে আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। কিন্তু পাকিস্তানে এখনও স্টেডিয়াম সংস্কারের কাজ চলছে পুরোদমে। স্বাভাবিকভাবেই, প্রস্তুতি নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। এই চাপের মুখে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান মহসিন নকভি ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগের সুর তুললেন। সরাসরি ভারতের নাম না নিলেও বোঝাতে চাইলেন, পাকিস্তানের প্রস্তুতি নিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
প্রস্তুতি ঘিরে চাপে পাকিস্তান, ক্ষোভ উগরে দিলেন নকভি
শুক্রবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন নকভি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই স্পষ্ট বিরক্তি ধরা পড়ে তাঁর কণ্ঠে। পাকিস্তানের তিনটি প্রধান ভেন্যু— করাচি, লাহোর ও রাওয়ালপিন্ডির সংস্কারের কাজ এখনও শেষ হয়নি। যদিও আইসিসিকে ১১ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই স্টেডিয়াম হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে পিসিবি, বাস্তবে কাজের অগ্রগতি যথেষ্ট ধীরগতির।
নকভি বলেন, “সীমান্তের ওপারের কিছু মানুষ এবং আরও কয়েকজন বলছেন যে, পাকিস্তান থেকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি সরিয়ে নেওয়া হতে পারে। তারা বলছে, সময় মতো স্টেডিয়ামের কাজ শেষ হবে না। আমি স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই— আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত। শুধু চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নয়, তার আগের ত্রিদেশীয় সিরিজও পাকিস্তানেই হবে।”
এই বক্তব্য থেকেই বোঝা যাচ্ছে, পাকিস্তানের প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় তিনি সরাসরি ভারতকেই দায়ী করছেন। তবে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) ভূমিকা নিয়েও তাঁর ক্ষোভ রয়েছে।
হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, ভারতের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক
পাকিস্তানে খেলতে যেতে রাজি নয় ভারত। নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে বিসিসিআই জানিয়েছিল, তারা দল পাঠাবে না। সেই কারণেই বাধ্য হয়ে হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজন করতে হচ্ছে, যেখানে ভারতের ম্যাচগুলো অন্য দেশে হতে পারে। এটি পিসিবির জন্য বড় ধাক্কা।
এই পরিস্থিতির মধ্যেই পাকিস্তানের স্টেডিয়ামগুলির সংস্কার নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেছে। কয়েক দিন আগেই লাহোরের গদ্দাফি স্টেডিয়ামের একটি ভিডিও সামনে আসে, যেখানে দেখা যায়, স্টেডিয়ামের মূল ভবন, গ্যালারি ও সাজঘরের সংস্কার কাজ চলছে। সেই ভিডিওতে নকভিকে কিছুটা হতাশও দেখা গিয়েছিল। শুধু লাহোর নয়, করাচি ও রাওয়ালপিন্ডির স্টেডিয়ামের অবস্থাও বিশেষ ভালো নয়। ফলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সংস্কারের কাজ শেষ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে নকভি আরও উত্তেজিত হয়ে পড়েন। প্রস্তুতি নিয়ে চাপের মুখে ভারতের ভূমিকা নিয়েই সরব হন তিনি। বোঝাতে চান, পরিকল্পিতভাবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
সময়ে প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে তো?
পাকিস্তানের স্টেডিয়ামগুলো ১১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আইসিসির হাতে তুলে দেওয়ার কথা। তারপর আইসিসি নিজস্ব ব্যবস্থা অনুযায়ী শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সেরে নেবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সংস্কারের কাজ প্রায় অর্ধেক বাকি।
বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি নিশ্চয়ই চাইবে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হোক। কিন্তু কাজের গতি নিয়ে এখনই প্রশ্ন উঠছে।
আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। কিন্তু তার আগে পাকিস্তান কতটা প্রস্তুত হতে পারবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েই যাচ্ছে। আর সেই অস্বস্তিই যেন ক্ষোভের রূপ নিচ্ছে পিসিবির শীর্ষ কর্তাদের মধ্যে।
অন্যদিকে, পাকিস্তানের ক্রিকেটভক্তদের মধ্যেও বাড়ছে উদ্বেগ। সময়মতো সব ঠিকঠাক না হলে, আইসিসি কি আদৌ পাকিস্তানেই পুরো প্রতিযোগিতা আয়োজন করতে দেবে? নাকি কোনো বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে? প্রশ্নগুলো এখন আরও জোরালো হচ্ছে।
শেষ পর্যন্ত, পাকিস্তান কি সময়মতো প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পারবে? নাকি এই বিতর্ক চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজন নিয়েই ছায়া ফেলবে? আপাতত উত্তর খোঁজার অপেক্ষা।
মধ্যবিত্তদের জন্য সুখবর! ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে আর কোনও আয়কর নয়