পাতাল লোক ২’-এ নজর কাড়লেন প্রশান্ত তামাং
প্রশান্ত তামাং—একজন সাধারণ যুবকের অসাধারণ উত্থানের গল্প। দার্জিলিঙের এক ছোট্ট শহর থেকে উঠে এসে তিনি প্রথমে জয় করেন ‘ইন্ডিয়ান আইডল’-এর মঞ্চ, তারপর অভিনয়ে নিজেকে প্রমাণ করেন ‘পাতাল লোক ২’-এর মতো জনপ্রিয় ওয়েব সিরিজে। কিন্তু এই সাফল্যের পথ মোটেও সহজ ছিল না।
পুলিশের চাকরি থেকে সংগীতের জগতে প্রবেশ
১৯৮৩ সালে জন্ম প্রশান্তের। ছোটবেলায় বাবাকে হারানোর পর সংসারের দায়িত্ব এসে পড়ে তাঁর মা-র ওপর। পরিবারের আর্থিক চাপ সামলাতে মাত্র ১৮ বছর বয়সে কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল পদে যোগ দেন তিনি। তবে পুলিশের দায়িত্ব সামলানোর পাশাপাশি তাঁর গানের প্রতিও ছিল গভীর ভালোবাসা। কলকাতা পুলিশের অর্কেস্ট্রা দলে গান গাইতেন, সহকর্মীরাও তাঁকে উৎসাহ দিতেন বড় মঞ্চে যাওয়ার জন্য।
‘ইন্ডিয়ান আইডল’ জয়, তারকা হয়ে ওঠার শুরু
২০০৭ সালে, এক সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়ে ‘ইন্ডিয়ান আইডল’ গানের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন প্রশান্ত। অডিশনে উত্তীর্ণ হওয়ার পর একের পর এক ধাপ পেরিয়ে পৌঁছে যান চূড়ান্ত পর্যায়ে। দর্শকের ভোট এবং বিচারকদের প্রশংসায় তিনি হয়ে ওঠেন শো-এর বিজয়ী! এই জয় শুধু তাঁকে তারকা বানায়নি, বরং দার্জিলিং এবং গোর্খা সম্প্রদায়ের জন্যও ছিল গর্বের মুহূর্ত।
অভিনয়ের জগতে পা রাখা ও ‘পাতাল লোক ২’-এ সাফল্য
গানের জগতে জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর, প্রশান্ত শুধু সংগীতেই সীমাবদ্ধ থাকেননি। তিনি একাধিক নেপালি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘গোর্খা পল্টন’, ‘কিনা মায়া মা’, ‘নিশানি’ এবং ‘পরদেশি’।
সম্প্রতি, ‘পাতাল লোক ২’ ওয়েব সিরিজে এক রহস্যময় স্নাইপারের চরিত্রে দেখা গেছে তাঁকে। তাঁর চরিত্রে সংলাপ ছিল নামমাত্র, কিন্তু শুধুমাত্র অভিব্যক্তির মাধ্যমে দর্শকের মন জয় করেছেন তিনি। এটি তাঁর জন্য বলিউডে এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।
শেষ কথা
প্রশান্ত তামাং প্রমাণ করেছেন যে সাহস, অধ্যবসায়, আর কঠোর পরিশ্রম মানুষকে সাফল্যের শিখরে নিয়ে যেতে পারে। একসময় কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল হিসেবে কাজ করা এই তরুণ আজ সংগীত ও অভিনয় জগতে নিজের জায়গা পাকাপোক্ত করে ফেলেছেন। তাঁর ভবিষ্যৎ আরও উজ্জ্বল হতে চলেছে, আর আমরা অপেক্ষায় রইলাম তাঁর নতুন চমকের জন্য!