আরজি কর দুর্নীতি মামলা
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের আর্থিক দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত সন্দীপ ঘোষ ও অন্যরা কলকাতা হাই কোর্টের কাছে চার্জ গঠনের সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, সিবিআই যে ১০,০০০ পাতার চার্জশিট জমা দিয়েছে, তা সাত দিনের মধ্যে পর্যালোচনা করা সম্ভব নয়। তাই, নিজেদের বক্তব্য যথাযথভাবে উপস্থাপন করতে আরও সময় প্রয়োজন।
চার্জ গঠন পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন
শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে সন্দীপ ঘোষ এবং মামলার আরও এক অভিযুক্ত আশিস পাণ্ডের আইনজীবীরা এই আবেদন করেন। তাঁরা আদালতে জানান, এত বিশাল চার্জশিট বিশদভাবে পড়তে এবং প্রতিরক্ষা প্রস্তুত করতে আরও সময় দরকার।
জবাবে বিচারপতি ঘোষ জানান, কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেলকে নোটিস পাঠিয়ে আবেদন করতে হবে এবং নিম্ন আদালতে গিয়ে নিজেদের বক্তব্য পেশ করতে হবে। পাশাপাশি, বিচারপতি বলেন, ‘‘গত বছর নভেম্বরে চার্জশিট জমা দেওয়ার পরও বিচারপ্রক্রিয়া ধীর গতিতে চলছিল। তাই আদালত সাত দিনের মধ্যে বিচার শুরুর নির্দেশ দিয়েছিল।’’
দুর্নীতির তদন্ত ও সিবিআইয়ের অবস্থান
আরজি কর হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতির তদন্তের মূল সূত্রপাত হাসপাতালের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলির অভিযোগের ভিত্তিতে। এই মামলার তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই ও ইডি। সিবিআই হাই কোর্টকে জানিয়েছে, তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে এবং বিচার শুরুর জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতিও নেওয়া হয়েছে।
গত বছরের ২৩ অগস্ট কলকাতা হাই কোর্ট এই দুর্নীতির মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। এরপর ২৯ নভেম্বর আলিপুর আদালতে চার্জশিট জমা দেয় সিবিআই। তদন্তের অংশ হিসেবে এখন পর্যন্ত ২২টি জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়েছে এবং একাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
দুর্নীতির অভিযোগ ও গ্রেফতার
অভিযোগ রয়েছে যে, দীর্ঘ তিন বছর ধরে আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতি চলছিল। হাসপাতালের চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনার নামে টেন্ডার দুর্নীতি হয়েছে বলে দাবি তদন্তকারীদের। সিবিআইয়ের চার্জশিটে সন্দীপ ঘোষের নাম রয়েছে, যিনি হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’দের টেন্ডার পাইয়ে দিয়েছিলেন।
এ মামলায় সন্দীপ ঘোষের পাশাপাশি আরও চারজন গ্রেফতার হয়েছেন—বিপ্লব সিংহ, আফসার আলি, সুমন হাজরা এবং আশিস পাণ্ডে। সন্দীপ ঘোষকে টানা কয়েক দিন জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয়, এবং বর্তমানে তাঁরা সবাই জেলবন্দি।
এগোবে কি বিচারপ্রক্রিয়া?
সিবিআই এবং ইডির তদন্তের ভিত্তিতে দ্রুত বিচার শুরুর পক্ষে আদালত। তবে, অভিযুক্তদের দাবি, নিজেদের সঠিকভাবে প্রতিরক্ষা প্রস্তুত করতে সময় প্রয়োজন। এখন দেখার বিষয়, আদালত তাঁদের আবেদন মঞ্জুর করবে কি না, নাকি আগের নির্দেশ অনুযায়ী সাত দিনের মধ্যেই চার্জ গঠন শুরু হবে।
ত্রিবেণী সঙ্গম থেকে পুণ্যার্থীদের সরাতে কঠোর পদক্ষেপ, ঘোড়সওয়ার পুলিশ নামাল যোগী সরকার