Thursday, January 30, 2025

মরক্কোয় ৩০ লক্ষ পথকুকুর নিধনের সিদ্ধান্ত বিশ্বকাপের আগে: অমানবিক অভিযোগে উত্তাল পশুপ্রেমীরা

Share

মরক্কোয় ৩০ লক্ষ পথকুকুর নিধনের সিদ্ধান্ত

২০৩০ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য মরক্কো, স্পেন এবং পর্তুগাল যৌথভাবে দায়িত্ব পেয়েছে। কিন্তু এই প্রস্তুতির অংশ হিসেবে মরক্কো কর্তৃপক্ষ ৩০ লক্ষ পথকুকুর মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বিশ্বজুড়ে প্রাণী অধিকার কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

ফুটবল বিশ্বকাপ ও বিতর্কিত সিদ্ধান্ত
১৯৩০ সালে প্রথম ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল উরুগুয়ে। ১০০ বছর পর, ২০৩০ সালের বিশ্বকাপ ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে স্মরণীয় করে রাখতে ছয়টি দেশকে আয়োজক হিসেবে নির্বাচন করেছে ফিফা। তবে মরক্কোর মতো একটি দেশে ফুটবল আয়োজনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে শহরগুলিকে “পরিষ্কার” করতে এই নৃশংস পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

অমানবিক পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মরক্কোয় পথকুকুরদের ধ্বংস করার জন্য বিষ প্রয়োগ, গুলি এবং ক্ল্যাম্পিং যন্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে। কিছু অভিযোগে বলা হয়েছে, “স্ট্রাইকাইন” নামের বিষ প্রয়োগ করে কুকুরদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। যারা এই পদ্ধতিতে মারা যাচ্ছে না, তাদের গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে।

পশুপ্রেমী সংস্থাগুলি আরও অভিযোগ করেছে, ক্ল্যাম্পিং যন্ত্রের সাহায্যে কুকুরদের ফাঁদে ফেলে নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়ে তাদের হত্যা করা হচ্ছে। প্রাণীদের এই অমানবিক নির্যাতন নিয়ে বিশ্বজুড়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে।

পশুপ্রেমীদের প্রতিবাদ
প্রাণী অধিকার নিয়ে কাজ করা বিখ্যাত সংরক্ষণবাদী জেন গুডঅল ফিফার সেক্রেটারি জেনারেল ম্যাটিয়াস গ্রাফস্ট্রমকে একটি চিঠি লিখেছেন। তিনি ফিফার উপর এই নৃশংস কাজকে উপেক্ষা করার অভিযোগ তুলে বলেছেন, এটি ফিফার সুনামকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। জেন গুডঅল আরও বলেছেন যে, কুকুর নিধনের মানবিক বিকল্পও রয়েছে, যা মরক্কো কর্তৃপক্ষ প্রয়োগ করতে পারে।

পথকুকুর

চিঠিতে জেন বলেছেন, “ফিফা যদি বিষয়টি তদন্ত না করে, তবে তাদের দুর্নাম হতে পারে। এছাড়াও, ফুটবল অনুরাগীদের মধ্যে যাঁরা পশুপ্রেমী, তাঁরা বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ হবেন।”

মিথ্যা আশ্বাসের অভিযোগ
গত বছরের অগাস্টে মরক্কোর কর্তৃপক্ষ দাবি করেছিল যে তারা পথকুকুর হত্যার কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। তবে বাস্তবে কুকুরদের উপর অত্যাচারের মাত্রা আরও বেড়েছে বলে জানিয়েছে প্রাণী অধিকার সংস্থাগুলি।

মানবিক সমাধানের দাবি
পশুপ্রেমী সংস্থাগুলি জানিয়েছে যে, পথকুকুর নিয়ন্ত্রণ করার জন্য টিকাদান ও নির্বীজন কর্মসূচি মতো মানবিক পদ্ধতি ব্যবহার করা সম্ভব। তারা ফিফা এবং মরক্কো কর্তৃপক্ষকে এই নৃশংস কর্মকাণ্ড বন্ধ করার জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।

ফিফার সুনামের হুমকি
বিশ্বব্যাপী ক্রীড়া ইভেন্টগুলির জন্য সুনামের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই পরিস্থিতিতে মরক্কোয় পথকুকুরদের এই অমানবিক নিধন ফিফার ভাবমূর্তিকে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। অনেক ফুটবল অনুরাগী ইতিমধ্যেই ফিফার বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় তুলছেন।

শেষ কথা
ফুটবল বিশ্বকাপের মতো আনন্দের মঞ্চে যদি নৃশংসতার ছায়া পড়ে, তবে তা কেবল আয়োজকদেরই নয়, গোটা বিশ্বের জন্য লজ্জার বিষয় হবে। পথকুকুরদের নিয়ে এই সিদ্ধান্ত শুধু অমানবিক নয়, এটি সমাজের মানবিক চেতনাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে। এখন দেখার বিষয়, ফিফা ও মরক্কো কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে কীভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

সইফ আলি খান: ৬টা কোপ, শিরদাঁড়ার পাশেই গভীর ক্ষত সইফের, অবস্থা কি আশঙ্কাজনক?

Read more

Local News