তাইল্যান্ডে বেড়াতে গিয়ে হোটেলের বাথটাবে মিলল ভারতীয় বধূর দেহ!
তাইল্যান্ডের একটি হোটেলের বাথটাবে উদ্ধার হল ভারতের উত্তরপ্রদেশের প্রিয়ঙ্কা শর্মার দেহ। তাঁর মৃত্যুর পর পুলিশি তদন্ত শুরু হয়েছে, এবং পরিবারের অভিযোগ, এই মৃত্যু স্বামীর খুনের ফলস্বরূপ। তবে, এখনো পুরো ঘটনা পরিষ্কার হয়নি, এবং পুলিশের দাবি অনুযায়ী তদন্ত চলমান রয়েছে।
প্রিয়ঙ্কার স্বামী আশিস শ্রীবাস্তব, যিনি পেশায় একজন চিকিৎসক, বর্তমানে উত্তরপ্রদেশের ওরাই মেডিক্যাল কলেজে কর্মরত। কয়েকদিন আগে প্রিয়ঙ্কা ও আশিস তাদের ছুটি কাটানোর জন্য তাইল্যান্ডে গিয়েছিলেন। পটায়ার একটি হোটেলে তারা থাকছিলেন। হোটেলের বাথটাবে প্রিয়ঙ্কার দেহ উদ্ধার হওয়ার পর পুলিশ নিশ্চিত হতে পারেনি, এই মৃত্যু দুর্ঘটনাজনিত ছিল, নাকি এটি একটি পরিকল্পিত খুন।
প্রাথমিকভাবে, আশিস দাবি করেন যে, প্রিয়ঙ্কার মৃত্যু জলে ডুবে হয়েছে। কিন্তু, বাথটাবের মধ্যে এত কম জল থাকা সত্ত্বেও কীভাবে এমন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। এই ধরনের ঘটনাকে ঘিরে রহস্য আরও জটিল হয়ে উঠেছে। একইসঙ্গে, প্রিয়ঙ্কার পরিবারে সন্দেহের জন্ম নিয়েছে।
প্রিয়ঙ্কার বাবা, সত্যনারায়ণ শর্মা, অভিযোগ তুলেছেন যে তাঁর মেয়ে খুন হয়েছে। তাঁর দাবি, তাঁর জামাই আশিস পরিকল্পিতভাবে প্রিয়ঙ্কাকে তাইল্যান্ডে নিয়ে গিয়ে খুন করেছেন। তিনি জানান, প্রিয়ঙ্কা তার স্বামীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কথা জানার পর থেকেই তাদের মধ্যে অশান্তি চলছিল। আশিস প্রায়ই প্রিয়ঙ্কাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন। সত্যনারায়ণ শর্মা আরও দাবি করেন, ২০১৭ সালে বিয়ের পর থেকে প্রিয়ঙ্কার উপর অত্যাচার বাড়তে থাকে। বিশেষত, আশিসের ওই বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কথা জেনে যাওয়ার পর থেকেই তাদের দাম্পত্য জীবন খারাপ হয়ে যায়।
এদিকে, আশিসের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে প্রিয়ঙ্কা থানায় একটি হেনস্থা সংক্রান্ত অভিযোগও দায়ের করেছিলেন। তবে, সেই অভিযোগের পর কি কোনও তদন্ত হয়েছিল, সে সম্পর্কে এখন পর্যন্ত বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
প্রিয়ঙ্কার মৃত্যু নিয়ে বাড়ছে রহস্য, এবং পুলিশ আরও তদন্ত চালাচ্ছে। তাঁর মৃত্যুর পিছনে যদি সত্যিই খুনের সন্দেহ থাকে, তবে এটি একটি গভীর এবং পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে তদন্তকারী দল। এমন ঘটনা একটি সাধারণ ভ্রমণকে একটি ভয়াবহ ট্র্যাজেডিতে পরিণত করেছে। এখন প্রশ্ন উঠছে, আদৌ কি প্রিয়ঙ্কা নিজের জীবন শেষ করতে চেয়েছিলেন, নাকি এটি একটি কল্পিত মৃত্যুর চেষ্টা ছিল?
এদিকে, পুলিশ পুরো ঘটনার তদন্ত করছেন, এবং আশিসের বক্তব্য যাচাই করা হচ্ছে। সঠিক কারণ জানার জন্য প্রিয়ঙ্কার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত রিপোর্টও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব নয়, তবে প্রিয়ঙ্কার পরিবারের সন্দেহ যে খুনের দিকে যেতে পারে, তা আরও জোরালো হয়েছে।
এই ঘটনা যেন একটি সতর্কবার্তা দেয় যে, সম্পর্কের ভেতরে যে কোনও সমস্যা অথবা পারস্পরিক সন্দেহ এবং অশান্তি কখনও কখনও ভীষণ বিপদের দিকে ঠেলে দিতে পারে।