ক্যানসার আক্রান্ত যুবরাজকে দল থেকে ছেঁটে ফেলেছিলেন কোহলি!
ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে যুবরাজ সিংহের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে তাঁর বিশ্বকাপ জয়ী কীর্তিতে। তবে, তাঁর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের শেষটা স্মরণীয় হয়নি, এবং এই ঘটনা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। যুবরাজ সিংহ যখন ক্যানসারের সাথে লড়াই করছিলেন, তখন তৎকালীন অধিনায়ক বিরাট কোহলির কিছু কঠোর সিদ্ধান্ত তাঁর ক্যারিয়ারের শেষের দিকে প্রভাব ফেলেছিল। প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার রবীন উথাপ্পা সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন যে, কোহলি যুবরাজকে সঠিক সহানুভূতি দেখাননি এবং তার জন্য নিয়মও শিথিল করতে রাজি হননি।
যুবরাজ সিংহ, যিনি ভারতের দু’টি বিশ্বকাপ জয়ী দলের অমূল্য সদস্য, তার ক্যারিয়ার কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়েছিল ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার পর। দীর্ঘ চিকিৎসার পর, তিনি সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরে আসেন। তবে, যুবরাজ দলে ফেরার পর কোহলির কঠোর ফিটনেস নীতি তাকে ফিরতে সাহায্য করেনি। উথাপ্পার দাবি অনুযায়ী, যুবরাজ ক্যানসার থেকে সুস্থ হওয়ার পর ফিটনেস পরীক্ষায় কিছুটা ছাড় চেয়েছিলেন, তবে কোহলি সেই অনুরোধ মেনে নেননি এবং যুবরাজকে দলে ফেরানোর ক্ষেত্রে কঠোর ছিলেন।
উথাপ্পা আরও জানান, যুবরাজকে কখনও কোহলির অধীনে দলের সিনিয়র খেলোয়াড়দের লিডারশিপ গ্রুপে জায়গা দেওয়া হয়নি। কোহলির নেতৃত্বে সব কিছুই তাঁর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলত এবং দল বা অন্যান্য সদস্যরা এর বিরুদ্ধাচরণ করতে সাহস পেত না। কোহলির ব্যক্তিত্ব অত্যন্ত শক্ত এবং জোরালো ছিল, এবং এই কারণে দলীয় পরিবেশে অনেকেই নিজেদের মতামত প্রকাশে বাধাগ্রস্ত হতেন।
উথাপ্পা বলেন, “কোহলির মানসিকতা ছিল খুব কঠোর। তার চিন্তাভাবনা ছিল, ‘আমার পথে চলো, নতুবা নিজের রাস্তা খুঁজে নাও’। এটা সবার পছন্দের ছিল না, বিশেষ করে যখন কেউ তাঁর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কথা বলার চেষ্টা করতেন।” তাঁর মতে, কোহলির অধীনে দলের মধ্যে কোনো ধরনের আলোচনা বা মতবিনিময় হতো না, বরং সব কিছুই কোহলির ইচ্ছার ওপর নির্ভর করত।
যুবরাজ সিংহের ক্ষেত্রে, এই মানসিকতা এবং কঠোর নীতি তাঁকে দলের বাইরে থাকতে বাধ্য করেছিল। যুবরাজ সুস্থ হওয়ার পর দলের জন্য খেলতে চেয়েছিলেন, তবে কোহলির নেতৃত্বে তাঁর আরেকটি সুযোগ পাওয়া কঠিন হয়ে উঠেছিল। উথাপ্পার মতে, এই কঠোর সিদ্ধান্তের কারণে যুবরাজের ক্যারিয়ারের শেষটা স্বাভাবিকভাবে সুষ্ঠু হয়নি।
এখন, বিরাট কোহলির নিজের ক্রিকেট ক্যারিয়ারও চ্যালেঞ্জের মুখে। দীর্ঘ সময় ধরে তাঁর ব্যাটিংয়ে দুর্বলতা দেখা যাচ্ছে, বিশেষ করে অফ স্টাম্পের বাইরের বলের বিরুদ্ধে। কোহলির এই অবস্থা এবং তাঁর ফর্মের পতন ভারতীয় ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে আরও অনেক প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারে। তবে, কোহলির নেতৃত্বের এই কঠোর শৈলী এবং তার সিদ্ধান্ত গ্রহণের পদ্ধতি ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে এক আলোচিত বিষয় হয়ে থাকবে।
যুবরাজ সিংহ এবং কোহলির এই সম্পর্কের ঘটনা, বিশেষ করে ক্যানসার পরবর্তী সময়ে, একজন দলের নেতা হিসেবে কোহলির নেতৃত্বের প্রতি সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। কোহলির কঠোর মনোভাব অনেক সময় ক্রিকেটারদের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, এবং এটি ভারতীয় ক্রিকেটের নেতৃত্বের একটি বড় শিক্ষাও হতে পারে।