এলঅ্যান্ডটি চেয়ারম্যানের মন্তব্যে বিতর্ক
বিগত কিছু সময় ধরে কর্মক্ষেত্রের ‘ওয়ার্ক লাইফ ব্যালান্স’ এবং মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা বেড়ে গিয়েছে। সম্প্রতি এলঅ্যান্ডটি সংস্থার চেয়ারম্যান এসএন সুব্রহ্মণ্যন যে মন্তব্য করেছেন, তা নিয়ে সমাজমাধ্যমে তীব্র বিতর্কের ঝড় উঠেছে। তাঁর বক্তব্য, কর্মীরা যেন রবিবারও কাজ করেন, এমনকি সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা কাজের প্রস্তাবও দিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে, মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে একাধিক বার সরব হওয়া দীপিকা পাড়ুকোনও এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে নিজের মতামত প্রকাশ করেছেন।
সুব্রহ্মণ্যনের বিতর্কিত মন্তব্য
এলঅ্যান্ডটি সংস্থার চেয়ারম্যান এসএন সুব্রহ্মণ্যন সম্প্রতি একটি রেডিট ভিডিওতে কর্মজীবনের ভারসাম্য নিয়ে নিজের মতামত জানিয়েছেন। তিনি বলেছিলেন, “যদি সব কিছু আমার নিয়ন্ত্রণে থাকত, তাহলে আমি কর্মীদের রবিবারও কাজ করতে বলতাম। আমি নিজে রবিবার কাজ করি, কারণ বাড়িতে বসে মানুষ কী করবে? একজন স্বামী বা স্ত্রী কতক্ষণ একে অপরের মুখ দেখবে? বাড়িতে বসে থাকার চেয়ে অফিসে কাজ করা অনেক ভাল, কারণ তাতে জীবনে উন্নতি হবে।”
এলঅ্যান্ডটির চেয়ারম্যানের এই মন্তব্য দ্রুতই বিতর্কের ঝড় তুলে দেয়। অনেকেই তাঁর বক্তব্যকে সমর্থন না করে, কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্য এবং ব্যক্তিগত জীবনের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। দীপিকা পাড়ুকোনও এই বিতর্কে নিজেকে যুক্ত করেন।

দীপিকার মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ
দীপিকা পাড়ুকোনও একাধিক বার মানসিক স্বাস্থ্য এবং অবসাদ নিয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। ২০১৫ সালে তিনি প্রথমবার তাঁর অবসাদের কথা প্রকাশ্যে এনেছিলেন এবং সেই সময় থেকে নিয়মিতই এই বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করছেন। দীপিকা তাঁর অনুরাগীদের মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব বুঝিয়ে দিয়েছেন এবং কাউন্সেলিং এবং সহায়তার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কথা বলেছেন।
অতএব, যখন সুব্রহ্মণ্যন কর্মীদের রবিবারও কাজ করার পরামর্শ দেন, তখন দীপিকা নিজের মতামত প্রকাশ করতে দেরি করেননি। তিনি তাঁর সমাজমাধ্যমের পাতায় একটি পোস্ট করেন, যেখানে সুব্রহ্মণ্যনের মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন। দীপিকা লেখেন, “এক সংস্থার উচ্চ পদাধিকারীর এমন মন্তব্য সত্যিই চমকে দেওয়ার মতো। এটি শুধু ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে না, বরং মানসিক স্বাস্থ্যের উপরও বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।”
‘ওয়ার্ক লাইফ ব্যালান্স’ এবং মানসিক স্বাস্থ্য
বর্তমান সমাজে ‘ওয়ার্ক লাইফ ব্যালান্স’ এবং মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক বেশ গুরুত্ব পাচ্ছে। গবেষণায় প্রমাণিত যে, অতিরিক্ত কাজের চাপ মানুষের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করার ফলে মানুষদের মধ্যে অবসাদ, উদ্বেগ এবং হতাশা বাড়ে। দীপিকা নিজেই এর এক উদাহরণ, যিনি এক সময় অবসাদের শিকার হয়ে চিকিৎসার সহায়তা নিয়েছিলেন।
অতএব, কাজের পরিমাণ এবং সময়ের সঙ্গে ব্যক্তিগত জীবন এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি। দীপিকা যেমন বলেছিলেন, “নিজের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রথমে গুরুত্ব দিন, কারণ আপনি সুস্থ না থাকলে, কোনো কাজই করতে পারবেন না।”
সমর্থন ও বিরোধিতা
দীপিকার এই মন্তব্যের পর, সমাজমাধ্যমে অনেকেই তাঁর সমর্থনে আসেন। একাধিক মানুষের মতামত, যেখানে তাঁরা জানিয়ে দেন যে, কর্মীদেরও জীবন আছে, তাঁদেরও বিশ্রাম এবং ব্যক্তিগত সময় প্রয়োজন। তবে কিছু মানুষ সুব্রহ্মণ্যনের বক্তব্যে সহমত পোষণ করেছেন, যারা মনে করেন যে, দীর্ঘ সময় কাজ করা তাদের উন্নতির পথে সহায়ক হতে পারে।
তবে, দীপিকা বার বার বলছেন, একজন ব্যক্তির শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত। তাই কর্মক্ষেত্রে ‘ওয়ার্ক লাইফ ব্যালান্স’ বজায় রাখার পাশাপাশি, মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব অগ্রাহ্য করা উচিত নয়।
উপসংহার
এলঅ্যান্ডটি চেয়ারম্যানের মন্তব্য এবং দীপিকার প্রতিবাদ এক নতুন ধরনের বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এই বিতর্ক কেবল কর্মক্ষেত্রের নিয়ম এবং নীতি নিয়ে নয়, বরং মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য এবং জীবনযাত্রার ভারসাম্য নিয়ে। দীপিকা যেমন বলেছেন, “কর্মক্ষেত্রে সফলতা না আসলেও, যদি আপনি মানসিকভাবে সুস্থ না হন, তা হলে সে সফলতা কোন কাজে আসবে?” কর্মজীবনে সাফল্য লাভের পাশাপাশি, মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান হওয়া প্রত্যেকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রভাস থেকে শাহরুখ: ২০২৬ সালে বক্স অফিস মাতাতে পারে কোন তারকাদের ছবি?

