জাল পাসপোর্ট কাণ্ডে কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন এসআই !
কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন এক এসআই জাল পাসপোর্ট তৈরির চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন। শুক্রবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অশোকনগর থানা এলাকার হাবড়ার কামারপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তির নাম আব্দুল হাই, বয়স ৬১ বছর। তিনি কলকাতা পুলিশের পাসপোর্ট বিভাগে এসআই পদে কর্মরত ছিলেন। এর মাধ্যমে এই জাল পাসপোর্ট কাণ্ডে গ্রেফতারির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ জনে।
কলকাতা পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর ভবানীপুর থানায় এক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল, যার ভিত্তিতে পাসপোর্ট জালিয়াতি চক্রের তদন্ত শুরু হয়। তদন্তকারীরা জানায়, ওই সময়ে অভিযোগ করা হয়েছিল যে, কিছু অসাধু ব্যক্তি ভুয়ো নথি তৈরি করে জাল পাসপোর্ট বানিয়ে দিচ্ছিল। এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় ছিল এবং কলকাতা ও শহরতলির একাধিক এলাকায় এর বিস্তার ছিল।
শুক্রবার রাতে আব্দুল হাইয়ের গ্রেফতারের পর, তদন্তকারীরা জানিয়েছেন যে, আব্দুল কলকাতা পুলিশের সিকিউরিটি কন্ট্রোল অর্গানাইজেশনের (এসসিও) সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, যা পাসপোর্টের জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র যাচাই করে দেখত। পুলিশের অনুমান, আব্দুল তাঁর পদবি এবং অবস্থান কাজে লাগিয়ে পাসপোর্ট জালিয়াতির চক্রে সহায়তা করতেন। তিনি জাল পাসপোর্ট তৈরির কাজে একাধিক কৃত্রিম পদ্ধতি ব্যবহার করতেন এবং তার মাধ্যমে অন্যদের সুবিধা প্রদান করতেন। তদন্তকারীরা এখন তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করছেন।
পুলিশের ধারণা, আব্দুলকে দিয়ে বিভিন্ন কাজ করানো হতো, এবং তার মাধ্যমে তদন্তকারীরা চক্রের অন্যান্য সদস্যদের খোঁজ পেতে পারেন। তদন্তকারীরা তাঁর কাছ থেকে আরও বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে চান, যা এই জালিয়াতি চক্রের বিস্তার এবং এর সঙ্গে জড়িত অন্য অভিযুক্তদের সম্পর্কে তথ্য দিতে পারে।
এদিকে, গত কয়েক মাসে কলকাতা পুলিশ একাধিক অভিযান চালিয়েছে এবং সন্দেহভাজনদের গ্রেফতার করেছে। বিশেষত উত্তর ২৪ পরগনা থেকে একাধিক গ্রেফতারি হয়েছে, এবং পুলিশ বলছে, এই চক্রটি আরও বড় হতে পারে। পাসপোর্ট জালিয়াতি চক্রের খোঁজে লালবাজারের পুলিশ দল কাজ করছে, এবং এর সঙ্গে আরও বেশি সংখ্যক অভিযুক্ত জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই ঘটনার তদন্ত প্রক্রিয়া যতই এগোচ্ছে, ততই চক্রের জাল আরও ছড়াতে দেখা যাচ্ছে। এর ফলে কলকাতা পুলিশের সুনাম এবং পাসপোর্ট বিভাগের নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তারা আশাবাদী যে, আব্দুল হাইয়ের গ্রেফতারি এই চক্রের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উন্মোচন করতে সাহায্য করবে এবং আরও অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে সহায়ক হবে।
এখন পর্যন্ত এই জাল পাসপোর্ট কাণ্ডে মোট ৯ জন গ্রেফতার হয়েছেন এবং পুলিশ তাদের থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আরও অভিযান চালাচ্ছে। পাসপোর্ট সংক্রান্ত এই ধরনের জালিয়াতি সমাজে অজানা চক্র তৈরি করে, যা দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি স্বরূপ। তাই, পুলিশ সবদিক থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য পূর্ণ উদ্যমে কাজ করছে।
প্রাণভিক্ষা পাবেন নিমিশা? ‘ব্লাড মানি’ কি বাঁচাতে পারবে ইয়েমেনে আটক ভারতীয় তরুণীকে?