দেওরের বঁটির কোপে বৌদির মর্মান্তিক মৃত্যু!
পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরের নিউ টাউনশিপ থানার অন্তর্গত কালিগঞ্জ এলাকায় ঘটেছে এক নারকীয় ঘটনা। পারিবারিক বিবাদের জেরে নিজের বৌদিকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে বিষ্ণু রুইদাস নামে এক যুবককে। খুনের পর পালানোর চেষ্টা করলেও স্থানীয়রা তাকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন।
মর্মান্তিক ঘটনার বিবরণ
শনিবার সকালে বিন্দু রুইদাস (৩২) এবং তাঁর দেওর বিষ্ণু রুইদাসের মধ্যে পারিবারিক বিষয়ে বচসা শুরু হয়। স্থানীয়দের মতে, বিতর্ক চরমে পৌঁছালে বিষ্ণু ধারালো বঁটি নিয়ে এসে বিন্দুর গলায় আঘাত করেন। এরপর শরীরের বিভিন্ন অংশে বঁটির একাধিক কোপ মারেন। রক্তে ভেসে যায় পুরো ঘর।
বৌদিকে বাঁচাতে এগিয়ে এসেছিলেন নিরুপমা রুইদাস, যিনি মৃতার শাশুড়ি। কিন্তু বিষ্ণু তাঁকেও আঘাত করেন বলে অভিযোগ। তাঁর চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। ওই সময় বিষ্ণু পালানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু প্রতিবেশীরা তাকে আটকাতে সক্ষম হন।

প্রতিবেশীদের বক্তব্য
এক প্রতিবেশী বলেন, “চিৎকার শুনে গিয়ে দেখি, মাছ কাটার বঁটি দিয়ে বিন্দু বৌদিকে আঘাত করছে। এমন দৃশ্য দেখে হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। বাধা দিতে গেলে আমাকেও আঘাত করতে পারত।”
পুলিশি পদক্ষেপ ও তদন্ত
খবর পেয়ে নিউ টাউনশিপ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। তারা বিষ্ণুকে গ্রেফতার করে এবং মৃতদেহ উদ্ধার করে। আহত নিরুপমা রুইদাসকে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
দুর্গাপুর পুলিশের এসিপি সুবীর রায় বলেন, “বিষ্ণু রুইদাসকে আমরা গ্রেফতার করেছি। পারিবারিক বিবাদের জেরে খুন হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে ঘটনার পেছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ফরেন্সিক দল ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করবে। অভিযুক্তকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”
অভিযুক্তের অতীত ও স্থানীয়দের অভিযোগ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিষ্ণুর স্বভাব বরাবরই অশান্তিপূর্ণ ছিল। পরিবারের সদস্য এবং এলাকার মানুষদের সঙ্গে তার দুর্ব্যবহার নিত্যদিনের ঘটনা। এমনকি, পরিবারের এক সদস্যের সঙ্গে শারীরিক হেনস্থার অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা
যদিও প্রাথমিকভাবে পারিবারিক বিবাদকে মৃত্যুর কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, তবুও বিষয়টি নিয়ে আরও গভীর তদন্ত চলছে। পুলিশ নিশ্চিত করতে চাইছে যে, পারিবারিক ঝগড়ার আড়ালে অন্য কোনও ব্যক্তিগত বা আর্থিক বিবাদ রয়েছে কিনা।
সামাজিক প্রভাব ও সচেতনতার বার্তা
এই ঘটনায় শুধু দুর্গাপুর নয়, গোটা অঞ্চলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। পারিবারিক সমস্যার কারণে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সমাজকে আরও বেশি সচেতন হতে বাধ্য করছে।
পুলিশি তদন্ত শেষ হলে এই মর্মান্তিক ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটিত হবে। তবে এরই মধ্যে, এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড পারিবারিক সম্পর্কের ভঙ্গুরতার ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে।
‘কিসিক’ খ্যাত শ্রীলীলা এবার বলিউডে! কর্ণ জোহরের ছবিতে কার্তিকের সঙ্গে নতুন জুটি?

