সল্টলেকে বর্ষবরণ-রাতে ডেলিভারি বয়কে পিটিয়ে খুন!
সল্টলেকের মহিষবাথানে বর্ষবরণের রাতে এক ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এক যুবককে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নিহত যুবক, যিনি একটি ডেলিভারি বয় হিসেবে কাজ করতেন, তাঁকে রাতের অন্ধকারে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে হত্যার শিকার করা হয়। পরিবারের অভিযোগ, এই হত্যাকাণ্ডে তার বন্ধুদের হাত রয়েছে। পুলিশ ইতোমধ্যে কয়েকজন বন্ধুদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে এবং এক ব্যক্তিকে গ্রেফতারও করেছে।
নিহত যুবকের নাম সুব্রত মাঝি (২৬)। তিনি সল্টলেকের মহিষবাথান এলাকার উদয়ন পল্লির বাসিন্দা ছিলেন। ১ জানুয়ারি, ২০২৫ তারিখে সুব্রতার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩১ ডিসেম্বর রাতে প্রায় সাড়ে ১০টা নাগাদ সুব্রতকে এক বন্ধু ফোন করে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। ওই সময় যুবক বাড়ি ফিরছিলেন না দেখে, পরিবারের সদস্যরা তাকে খুঁজতে শুরু করেন। তাঁরা অভিযোগ করেন যে, ফোনেও আর সুব্রতার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে, পরের দিন, ১ জানুয়ারি, পুলিশ সুব্রতকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। কিন্তু যুবকের অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে, দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে যে, সুব্রতকে পরিকল্পনা করে তাঁর বন্ধুরা বর্ষবরণের রাতে বাইরে ডেকেছিল। এর পর তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়, যার ফলস্বরূপ যুবক মারা যান।
বিধাননগর ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানার পুলিশ এই ঘটনার পর যুবকের কয়েকজন বন্ধুকে আটক করে এবং তদন্ত শুরু করে। এক ব্যক্তিকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। তবে, এখনও পর্যন্ত পুলিশ হত্যার কারণ সম্পর্কে কিছু স্পষ্ট করেনি। ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখার জন্য যুবকের ফোনের মাধ্যমে তদন্ত করা হচ্ছে। পুলিশ জানতে চাচ্ছে, কোন বন্ধুর ফোনে সুব্রত বেরিয়েছিলেন, কোথায় গিয়েছিলেন এবং কী কারণে তাঁকে মারধর করা হয়েছিল।
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, হত্যাকাণ্ডের পিছনে পুরনো শত্রুতার কারণে এই ঘটনা ঘটেছে। তবে, এ বিষয়ে আরও তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টও আসেনি, যা ঘটনার আসল কারণ খোলাসা করতে সাহায্য করতে পারে।
এই ঘটনার পর এলাকায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। বহু বাসিন্দা ও স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, কেন এমন একটি হত্যাকাণ্ড বর্ষবরণের রাতে ঘটল। বন্ধুদের হাতে এমন খুনের ঘটনায় এলাকায় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে এবং পুলিশের উপর চাপ বেড়েছে। একদিকে যেখানে মানুষের মধ্যে বর্ষবরণের আনন্দ ছিল, সেখানে এ ধরনের নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড এলাকায় শোকের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।
এদিকে, নিহত যুবকের পরিবারও তাদের প্রিয়জনের অকাল মৃত্যুর কারণ জানতে চাচ্ছে। পরিবারকে আশ্বস্ত করা হয়েছে যে, পুলিশ পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দ্রুত অভিযুক্তদের শাস্তি নিশ্চিত করবে। যুবকটি যে কাজে নিযুক্ত ছিলেন, তাও এলাকার মানুষের মধ্যে শোকের সৃষ্টি করেছে। এমন একটি ঘটনা সল্টলেকের মতো একটি শহরের মধ্যে ঘটানোর পর, এটি স্থানীয় নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলছে।
এখন, পুলিশ খতিয়ে দেখছে হত্যাকাণ্ডের পিছনে আসল উদ্দেশ্য কী, এবং কারা জড়িত।
জেলে বসেই জঙ্গি-জাল বিস্তার: রহস্যময় রহমানি ও মুর্শিদাবাদের যোগসূত্র