ডিসেম্বরে মহারাষ্ট্রে গ্রেফতার ৪৩ বাংলাদেশি
মহারাষ্ট্র পুলিশ সন্ত্রাসদমন শাখার (এটিএস) ধারাবাহিক অভিযান ও তল্লাশিতে গত ডিসেম্বরে ৪৩ জন বাংলাদেশি গ্রেফতার হয়েছেন, যারা ভারতে অবৈধভাবে বসবাস করছিলেন। তাঁদের মধ্যে কেউ বৈধ নথিপত্র না থাকায় গ্রেফতার হন, আবার কেউ জাল নথির মাধ্যমে দেশটিতে বসবাস শুরু করেছিলেন। এই গ্রেফতারির পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান জারি রয়েছে, যার ফলে পুলিশ এখনো ধরপাকড় চালাচ্ছে।
৪৩ বাংলাদেশির গ্রেফতার, ১৯টি মামলা রুজু
মহারাষ্ট্র পুলিশের সন্ত্রাসদমন শাখার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ডিসেম্বরে তাদের অভিযান চলাকালীন ৪৩ জন বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ঘটনায় ১৯টি আলাদা মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযানে পুলিশ মুম্বই, ঠাণে, নাসিক, এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে তল্লাশি চালায়। একযোগভাবে অভিযান পরিচালনা করে পুলিশের দল, যার মধ্যে ছিল মুম্বই, ছত্রপতি শম্ভাজিনগর (ঔরঙ্গাবাদ), নাসিক এবং নান্দেডের মতো শহরও।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে একজন মহিলা রয়েছেন। তাঁরা কোনও বৈধ নথি দেখাতে পারেননি এবং অবৈধভাবে ভারতে অবস্থান করছিলেন। এই গ্রেফতারির সময়, পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জাল নথি তৈরি করে আধার কার্ড সংগ্রহ করার অভিযোগও এনেছে।
দিল্লিতেও অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান
মহারাষ্ট্রের পাশাপাশি দিল্লিতেও অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। সম্প্রতি দিল্লি পুলিশ বিভিন্ন অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি অভিবাসীকে আটক করেছে। পুলিশের মতে, তারা জাল নথির মাধ্যমে ভারতে বসবাস করছিলেন। এমনকি পুলিশের সন্দেহ, অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের জন্য নথি জাল করার একটি চক্রও সক্রিয় হয়ে উঠেছে, যার ফলে দিল্লিতেও পুলিশি অভিযান তীব্রতর হয়েছে।
এদিকে, দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নরের সচিবালয় সম্প্রতি একটি নির্দেশিকা জারি করেছে, যা অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করার উদ্দেশ্যে ছিল। এর পরপরই দিল্লি পুলিশ নিজেদের তৎপরতা বৃদ্ধি করে এবং বিভিন্ন প্রান্তে চিরুনি তল্লাশি চালাতে শুরু করে। পুলিশ একাধিক দল গঠন করে এবং স্থানীয় থানাগুলির সাহায্যে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছে।
গ্রেফতারির পরবর্তী পদক্ষেপ
দিল্লি পুলিশ এক সংবাদ মাধ্যমকে জানায় যে, ২৫ জনেরও বেশি বাংলাদেশি অভিবাসীকে ইতিমধ্যে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। পুলিশি সুত্র থেকে জানা গেছে, এই গ্রেফতারির পর তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলমান। এর পাশাপাশি, পুলিশের তরফ থেকে সতর্কতা জারি করা হয়েছে যাতে অন্য কোনও অবৈধ অভিবাসী এই দেশটিতে প্রবেশ করতে না পারে।
অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে সরকারের পদক্ষেপ
ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এবং সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কিত কারণে সরকার অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। মহারাষ্ট্র ও দিল্লিতে পুলিশি অভিযান শুধু অবৈধ অভিবাসীদের আটক করতেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের কাজও শুরু হয়ে গেছে। এই ধরনের অভিযান ভবিষ্যতে আরও জোরালো হতে পারে, কারণ সরকার এবং পুলিশ চাইছে অবৈধভাবে বসবাসকারী অভিবাসীদের সংখ্যা কমিয়ে আনতে।
উপসংহার
মহারাষ্ট্র এবং দিল্লিতে অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ডিসেম্বরে ৪৩ জন বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করে মহারাষ্ট্র পুলিশ, এবং দিল্লিতেও ধরপাকড় চলছে। এই অভিযানে জাল নথির ব্যবহার ও অবৈধ বসবাসের অভিযোগ সামনে আসার ফলে পুলিশি তৎপরতা আরও তীব্র হয়েছে। সরকার এবং পুলিশের প্রচেষ্টা চলতে থাকবে, যাতে দেশের নিরাপত্তা এবং আইনের শাসন মজবুত হয়।

