পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনে বাস দুর্ঘটনা
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাঁতন থানা এলাকায় রবিবার সকালে একটি বেসরকারি বাস উল্টে যাওয়ার ঘটনায় অন্তত ২২ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে, বাকি আহতরা প্রাথমিক চিকিৎসার পর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। এই দুর্ঘটনা স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় উদ্ধার কাজ সম্পন্ন হয়। দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
দুর্ঘটনার বর্ণনা
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রবিবার সকালে মোহনপুর থেকে মেদিনীপুরের দিকে যাচ্ছিল একটি বেসরকারি বাস। দাঁতন থানা এলাকা অতিক্রম করার সময় আচমকা বাসটির চালক নিয়ন্ত্রণ হারান এবং বাসটি উল্টে যায়। বাসে অন্তত ২২ জন যাত্রী ছিলেন, যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের শরীরে গুরুতর আঘাত লাগে। দুর্ঘটনার পর, স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করেন এবং একে একে আহত যাত্রীদের উদ্ধার করা হয়।
চিকিৎসা ও সহায়তা
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দাঁতন থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং প্রথমে আহতদের স্থানীয় গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তিনজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকরা জানান, এই তিনজনের আঘাত খুবই গুরুতর এবং তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। অন্যদিকে, অন্যান্য আহত যাত্রীদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে বলা হয়েছে। স্থানীয় জনগণের সহযোগিতা এবং উদ্ধারকাজে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপের ফলে বড় ধরনের ক্ষতি রোধ করা সম্ভব হয়েছে।
দুর্ঘটনার কারণ
রাস্তার অবস্থা খারাপ থাকার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে ওই রাস্তা সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। দুর্ঘটনার পর, স্থানীয়রা রাস্তার দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন। জানা গেছে, বছরখানেক আগে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ওই এলাকায় একটি সভা করতে আসেন এবং সেসময় রাস্তা সংস্কারের দাবি তোলা হয়েছিল। সেই সময় জেলা প্রশাসন রাস্তা সারানোর জন্য উদ্যোগও নেয়, তবে তা এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণ হয়নি। স্থানীয়দের মতে, রাস্তার খারাপ অবস্থা এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী।
প্রশাসনের পদক্ষেপ
এখন প্রশ্ন উঠেছে, দুর্ঘটনার পর কেন রাস্তার সংস্কারের উদ্যোগ জারি রাখা হয়নি এবং কেন এলাকার জনগণের দুর্ভোগের সঠিক সমাধান করা হয়নি। স্থানীয়রা দাবী করছেন, প্রশাসন যদি সময় মতো রাস্তা সংস্কার করত, তাহলে হয়তো এই দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হত। যদিও পুলিশ ও জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে এবং তারা দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে চাচ্ছে।
উপসংহার
এটি একটি বড় দুর্ঘটনা, যা পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন থানার জনগণের জন্য একটি বড় সতর্কবার্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাস্তার সংস্কারের অভাব এবং প্রশাসনিক উদাসীনতার ফলে যে কোনও সময় আরও বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সরকার এবং প্রশাসনকে এখনই পদক্ষেপ নিয়ে এই রাস্তাটি সঠিকভাবে সংস্কার করা উচিত, যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো যায় এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।