কীর্তি সুরেশ
দক্ষিণী চলচ্চিত্রের এক সুপরিচিত নাম কীর্তি সুরেশ, যিনি মাত্র সাত বছর বয়স থেকে অভিনয়ের জগতে পা রেখেছিলেন। ছোটবেলা থেকেই টেলিভিশন এবং সিনেমায় কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। কিন্তু সম্প্রতি বলিপাড়ায় তাঁর পা রাখা এবং তার সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে নতুন চমক সামনে এসেছে।
প্রথম থেকেই অভিনয়ে আগ্রহ
১৯৯২ সালের ১৭ অক্টোবর তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ে জন্মগ্রহণ করা কীর্তি সুরেশের বাবা জি সুরেশকুমার, দক্ষিণী চলচ্চিত্রের একজন নামকরা প্রযোজক এবং মা মেনকা সুরেশ একজন অভিনেত্রী। শৈশব থেকেই চলচ্চিত্র জগতে কীর্তির আগ্রহ জন্মেছিল। মাত্র সাত বছর বয়সে তিনি বিভিন্ন দক্ষিণী ধারাবাহিক এবং ছবিতে শিশুশিল্পী হিসেবে কাজ শুরু করেন। ‘পাইলটস’, ‘কুবেরান’-এর মতো মালয়ালম ছবিতে তাঁকে শিশু অভিনেত্রী হিসেবে দেখা যায়।
কীর্তির পরিবার ছিল চলচ্চিত্রের জগতে গভীরভাবে জড়িত, এবং বাবা-মায়ের সান্নিধ্যে বড় হয়ে উঠতে তিনি অভিনয়ের প্রতি আগ্রহী হন। তবে, অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি পড়াশোনাতেও ভালো ফলাফল অর্জন করেন। চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত চেন্নাইয়ে পড়াশোনা করার পর, কীর্তি তাঁর পরিবারসহ কেরলের তিরুঅনন্তপুরমে চলে যান।
অভিনয়ের পাশাপাশি ফ্যাশনও
স্কুল জীবনে কীর্তি সাঁতারেও পারদর্শী ছিলেন এবং বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে বিজয়ীও হয়েছেন। তবে তার পরবর্তী পথ ছিল অভিনয়ের দিকে। কীর্তি ফ্যাশন ডিজাইনিং নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেছিলেন এবং পরে লন্ডন ও স্কটল্যান্ডে ফ্যাশন প্রশিক্ষণও নেন। কিন্তু অভিনয় তার সত্যিকারের ভালোবাসা, এবং ২০১৩ সালে ‘গীতাঞ্জলি’ ছবিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তার বড় পর্দায় আত্মপ্রকাশ ঘটে।
দক্ষিণী চলচ্চিত্রে সফলতা
‘রজিনী মুরুগান’, ‘নেমো’, ‘রিং মাস্টার’, ‘মহানতি’-র মতো একাধিক সুপারহিট ছবির মাধ্যমে কীর্তি সুরেশ দক্ষিণী চলচ্চিত্র জগতে নিজের শক্ত অবস্থান তৈরি করেন। তামিল, তেলুগু এবং মালয়ালম চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।
বলিউডে আত্মপ্রকাশ
চলতি বছরের শুরুতে বলিউডে ‘বেবি জন’ ছবির মাধ্যমে কীর্তির অভিষেক ঘটে। ছবিতে তিনি অভিনেতা বরুণ ধওয়ানের বিপরীতে অভিনয় করেন। যদিও ছবিটি বক্স অফিসে সেভাবে সফল না হলেও, কীর্তির অভিনয় এবং নৃত্যের প্রশংসা পেয়েছে দর্শকদের। তার অভিনয়ের পাশাপাশি নাচের দক্ষতাও প্রশংসিত হয়েছে।
গোপন সম্পর্ক
অভিনয়ের পাশাপাশি, কীর্তি সুরেশের ব্যক্তিগত জীবনও সম্প্রতি আলোচনায় এসেছে। অনেকদিন ধরে গোপন সম্পর্ক থাকার খবর প্রকাশ পেয়েছে। ১৫ বছর ধরে তাঁর প্রেমিক অ্যান্টনি থাত্তিলের সঙ্গে তিনি সম্পর্কে ছিলেন। অ্যান্টনি একজন ব্যবসায়ী এবং চলচ্চিত্রের জগতে যুক্ত নন।
কীর্তি ও অ্যান্টনি ২০০৮-’০৯ সাল থেকে একে অপরকে ডেট করছেন। সেই সময় কীর্তি স্কুলে পড়াশোনা করতেন এবং অ্যান্টনি কলেজে পড়তেন। তবে এই সম্পর্ক সম্পর্কে কখনও প্রকাশ্যে কিছু বলেননি কীর্তি। নভেম্বর মাসে, কীর্তি ইনস্টাগ্রামে একটি ছবি শেয়ার করে জানান, তিনি ১৫ বছর ধরে অ্যান্টনির সঙ্গে সম্পর্কে রয়েছেন।
বিয়ের পরও কাজ চালিয়ে যাওয়া
ডিসেম্বর মাসে, গোয়ায় পরিবারের সদস্য এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের উপস্থিতিতে কীর্তি তাঁর দীর্ঘকালীন প্রেমিক অ্যান্টনিকে বিয়ে করেন। বিয়ের পরেও কীর্তির কাজের প্রতি অঙ্গীকার বদলায়নি। ‘বেবি জন’ ছবির প্রচারে মঙ্গলসূত্র পরেও তিনি উপস্থিত হন, যা তার নতুন জীবনের সূচনা হয়ে দাঁড়ায়।
কীর্তির ভবিষ্যৎ
এখন কীর্তি সুরেশের ইনস্টাগ্রামে দেড় কোটিরও বেশি অনুগামী রয়েছে, এবং তিনি দ্রুতই বলিউডে নিজের জায়গা শক্ত করছেন। তার অভিনয়, নাচ, এবং ব্যক্তিগত জীবনের গোপনতা যেন তার ক্যারিয়ারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে। ভবিষ্যতে তাকে আরও অনেক নতুন প্রকল্পে দেখতে পাওয়া যাবে, এমনটাই আশা করছেন তার অনুরাগীরা।

