শীতে কাঁপছে উত্তর ভারত
উত্তর ভারতে চলছে হাড়কাঁপানো শৈত্যপ্রবাহ। শীতের প্রকোপ এবং ঘন কুয়াশায় রাজধানী দিল্লি, হিমাচল, হরিয়ানা, জম্মু-কাশ্মীরসহ একাধিক রাজ্যে সৃষ্টি হয়েছে বিপর্যয়। ২৫ ও ২৬ ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে, দিল্লি ও আশপাশের এলাকায় তাপমাত্রা নেমে এসেছে ৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তীব্র শীতে কাঁপছে অঞ্চলটি, সঙ্গে বেড়েছে কুয়াশার দাপট।
বৃহস্পতিবার ভোরে দিল্লির তাপমাত্রা ছিল ৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা শীতকালীন গড় তাপমাত্রার কাছাকাছি হলেও, সঙ্গত কারণে বাতাসের গুণমান অত্যন্ত খারাপ হয়েছে। মৌসম ভবনের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ২৭ ডিসেম্বর থেকে দিল্লির তাপমাত্রা আরও কমবে। দিল্লি এবং আশপাশের এলাকায়, বিশেষ করে রাজধানী এক্সপ্রেস, দুরন্ত এক্সপ্রেস, দক্ষিণ এক্সপ্রেসের মতো দূরপাল্লার ট্রেনগুলির সময়সূচি পরিবর্তিত হয়েছে। কুয়াশার কারণে বিমান পরিষেবার ক্ষেত্রেও বিঘ্নিত হয়েছে। দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কুয়াশার সতর্কতা জারি করা হয়েছে এবং সেখানে দৃশ্যমানতা নেমে গেছে মাত্র ৫০০ মিটারে। এর ফলে, প্রায় ৮৩টি বিমান বাতিল বা তার সময়সূচি পরিবর্তন করা হয়েছে।
এই সময় দিল্লির এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) ছিল ৩৭২, যা ‘খুব খারাপ’ শ্রেণিতে পড়ে। শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে একিউআই এর সূচক ছিল ভিন্ন, যেমন আনন্দ বিহারে ছিল ৩৭২, অশোক বিহারে ৩৬২ এবং বাওয়ানায় ৩৭৬। ঘন কুয়াশার কারণে রাজধানী দিল্লির দৃশ্যমানতা অনেকটাই কমে গেছে, বিশেষত ভোরের দিকে কিছু জায়গায় দৃশ্যমানতা ১০০ মিটারেরও নিচে নেমে গিয়েছিল। এছাড়া, বড়দিনের সকালে দিল্লি আরও বেশি কুয়াশায় ঢাকা পড়েছিল, যার ফলে ভোগান্তি হয় সাধারণ মানুষ ও যাত্রীদের।
শুধু দিল্লি নয়, উত্তর ভারতের অন্যান্য রাজ্যেও একই পরিস্থিতি। মৌসম ভবন জানিয়েছে, ২৭ ডিসেম্বর থেকে পাঁচটি রাজ্যে শিলাবৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। হিমাচল প্রদেশে তীব্র তুষারপাতের ফলে ২০০টিরও বেশি সড়ক বন্ধ হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ সরবরাহের সঙ্গেও বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। তুষারপাতের কারণে চারজনের মৃত্যুও হয়েছে। শৈত্যপ্রবাহ এবং ঘন কুয়াশার কারণে এলাকায় জরুরি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পর্যটকরা সমস্যায় পড়েছেন, বিশেষত যারা শীতকালীন সী পর্যটন উপভোগ করতে এসেছেন।
হরিয়ানা এবং জম্মু-কাশ্মীরেও তাপমাত্রা অতি নিম্নে নেমে গেছে। হরিয়ানার কিছু অঞ্চলে তাপমাত্রা শূন্যের কাছাকাছি পৌঁছেছে এবং কুয়াশার দাপট প্রচণ্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরে শ্রীনগরের তাপমাত্রা হিমাঙ্ক ছুঁয়েছে এবং বেশ কিছু অঞ্চলে পারদ অনেক নিচে নেমে গিয়েছে। এর ফলস্বরূপ, সেখানে জনজীবন অত্যন্ত অস্বস্তিকর হয়ে উঠেছে।
এমন পরিস্থিতিতে, শীতকালীন পোশাক পরা, স্বাস্থ্য সাবধানতা নেওয়া, এবং নিরাপদে চলাফেরা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে। শৈত্যপ্রবাহ এবং কুয়াশার কারণে যাত্রীদের সময়মতো রেল এবং বিমান পরিষেবার বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

