Friday, March 21, 2025

প্রাণ বাঁচানোর এয়ারব্যাগই প্রাণ কাড়ল ৬ বছরের শিশুর! বাবার গাড়িতে ফুচকা খেতে বেরিয়ে দুর্ঘটনা

Share

এয়ারব্যাগই প্রাণ কাড়ল ৬ বছরের শিশুর!

রবিবার সন্ধ্যায় মুম্বইয়ের এক খুদে, হর্স মাওজি আরেথিয়া, তার বাবার সঙ্গে বেড়াতে বেরিয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল ভাইবোনদের সঙ্গে ফুচকা খাওয়া। কিন্তু দুঃখজনকভাবে একটি দুর্ঘটনায় সে প্রাণ হারায়। পুলিশ জানিয়েছে, এয়ারব্যাগের কারণে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে, যা একটি নতুন এবং ভয়াবহ দিক তুলে ধরেছে।

হর্স মাওজি আরেথিয়া ও তার পরিবার একটি গাড়িতে চড়ে বের হয়েছিল। গাড়িটিতে ছিল তার তুতো ভাইবোনেরা এবং শিশুটির বাবা গাড়িটি চালাচ্ছিলেন। ঘটনাটি ঘটেছিল যখন তারা মুম্বইয়ের রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল। পথে একটি গাড়ি আচমকা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে সজোরে ধাক্কা মারে। দুর্ঘটনায় আক্রান্ত গাড়িটি তখন হর্সদের গাড়িটিকে আঘাত করে।

পুলিশ জানিয়েছে, সংঘর্ষের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, গাড়ির এয়ারব্যাগ দ্রুত খুলে যায়। এটি ছিল একটি জীবনরক্ষাকারী ব্যবস্থা, যা সাধারণত দুর্ঘটনায় শরীরকে অতিরিক্ত আঘাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। তবে এই এয়ারব্যাগের ধাক্কায় শিশুটি মারা যায়। এর আঘাত এতটা শক্তিশালী ছিল যে, গাড়ির চালকের পাশের আসনে বসা হর্স তা সামলাতে পারেনি।

হর্সকে দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, তবে চিকিৎসকরা তাঁর শরীরে কোনো গুরুতর আঘাতের চিহ্ন পাননি। চিকিৎসকরা জানায়, শিশুটির মৃত্যু ‘পলিট্রমা শক’-এর কারণে হয়েছে, অর্থাৎ, তার শরীরে কোন গুরুতর আঘাত না হলেও, সে এক গুরুতর শক-এর শিকার হয়েছিল, যার ফলস্বরূপ তার মৃত্যু ঘটে।

গাড়িটির ব্যাপারে তদন্তের পর পুলিশ জানায় যে, দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ির বনেট থেবড়ে গিয়েছিল এবং উইন্ডস্ক্রিনে ফাটল ছিল। পুলিশ সেই গাড়ির চালককে গ্রেফতার করেছে, যিনি গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ডিভাইডারে ধাক্কা মেরেছিল।

এয়ারব্যাগগুলি সাধারণত দুর্ঘটনার সময়ে মানুষের জীবন রক্ষা করে। এগুলি দ্রুত ফোলানোর মাধ্যমে শরীরের ক্ষতি কমানোর কাজ করে। তবে কখনও কখনও এর আঘাতও বিপজ্জনক হতে পারে। বিশেষ করে যখন গাড়ির সামনের আসনে বসা ব্যক্তি খুব ছোট এবং কোমল দেহের অধিকারী হয়, তখন এটি বিপদজনক হতে পারে। এমন অবস্থায় শিশুর শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের উপর এয়ারব্যাগের আঘাত অত্যন্ত মারাত্মক হতে পারে।

এটি একটি বিরল কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা, যা একেবারে নতুন একটি বিপদকে সামনে এনেছে। যদিও সাধারণত এয়ারব্যাগ শিশুদের রক্ষা করার জন্য ডিজাইন করা হয়নি, তবে এক্ষেত্রে শিশুটির বয়স এবং পরিস্থিতি একটি বড় কারণ হতে পারে।

এই ঘটনার পর থেকে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, শিশুর নিরাপত্তার জন্য গাড়ির নিরাপত্তা ব্যবস্থা কি আরও উন্নত করা প্রয়োজন? বিশেষত ছোট বয়সীদের জন্য আরও নিরাপদ ব্যবস্থা তৈরি করা উচিত কিনা? এর আগে এমন ঘটনা খুব বেশি ঘটেনি, কিন্তু এক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশ করছে।

এখন, পুলিশ এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আরও তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এই ঘটনাটি সম্পর্কে। তারা নির্ধারণ করতে চায় কীভাবে গাড়ির নিরাপত্তা ব্যবস্থা শিশুদের জন্য আরও কার্যকর হতে পারে।

এটি একেবারে হৃদয়বিদারক ঘটনা, এবং এর থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে শিশুর নিরাপত্তার জন্য নতুন ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হবে।

Read more

Local News