ঘরের মাঠে তিন গোল হজম!
ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড এবং রুবেন আমোরিমের দলকে নিয়ে সমর্থকদের প্রত্যাশা ছিল এক নতুন উত্থানের। কিন্তু রবিবারের ফলাফলে সেই আশা গুঁড়ো হয়ে গেল। এক সপ্তাহ আগে যখন তারা ম্যাঞ্চেস্টার সিটিকে হারিয়ে ফিরে এসেছিল, তখন এই দলের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা ভাবা হচ্ছিল। কিন্তু আজ রবিবার, ঘরের মাঠে বোর্নমাউথের বিরুদ্ধে ০-৩ গোলে হেরে আরও একবার হতাশ করল তারা।
লিগের ১৩ নম্বরে থাকা ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড এদিন তাদের ১৭তম ম্যাচে মাত্র ২২ পয়েন্ট অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। প্রথমার্ধে তারা ১-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে, যেখানে বোর্নমাউথের ডিন হুইসেন ২৯ মিনিটে গোল করে দলকে এগিয়ে নিয়ে যান। দ্বিতীয়ার্ধে পেনাল্টি থেকে জাস্টিন ক্লুইভার্ট দলের পক্ষে দ্বিতীয় গোল করেন (৬১ মিনিটে), এবং এর ঠিক দুই মিনিট পর, ৬৩ মিনিটে আন্তোনিয়ো সেমেনিয়ো তৃতীয় গোলটি করেন। এই গোলগুলোকে মেনে নিতে পারেননি ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের সমর্থকরা, যারা খেলার শেষে ফুটবলারদের প্রতি কঠিন বিদ্রুপ করতে শুরু করেন।
এই পরাজয়ের পর, কোচ রুবেন আমোরিম হারের দায় পুরোপুরি সমর্থকদের উপর চাপিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, সমর্থকরা যে চাপ তৈরি করেছেন, তার ফলে ফুটবলাররা ভালোভাবে নিজেদের কাজ করতে পারেনি। তার মতে, মাঠে যদি দর্শকদের চিৎকার শুনে খেলোয়াড়রা মনোযোগ হারিয়ে ফেলে, তবে সেই চাপের মোকাবিলা করাই গুরুত্বপূর্ণ। আমোরিম বলেন, “আমাদের নিজেদের কাজের প্রতি মনোযোগ দিতে হবে। স্টেডিয়ামের চাপ নিয়ে খেলতে গেলে সবকিছু হারানো যাবে। আমরা গোল করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু খুব চাপের মধ্যে ছিলাম। এই ভয়কে জয় করতে হবে। পেনাল্টি থেকে দ্বিতীয় গোল খাওয়ার পর আমাদের আরও ভালোভাবে ম্যাচটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা উচিত ছিল। পরিস্থিতি কঠিন ছিল, তবে আমাদের এই ধরনের পরিস্থিতি সামলাতে শিখতে হবে।”
কোচের এই বক্তব্যে কিছুটা প্রতিরক্ষা ছিল, তবে প্রশ্ন উঠছে যে, মাঠে দলের পারফরম্যান্সে কেন এত অবনতি? সমর্থকরা যখন প্রথম থেকেই নিজেদের দলের সাফল্যের দিকে তাকিয়ে থাকেন, তখন এ ধরনের হারের পর তারা কিভাবে তাদের হতাশা প্রকাশ করবেন, তাও চিন্তা করা প্রয়োজন।
অন্যদিকে, বোর্নমাউথের বিরুদ্ধে এ হারটি ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের জন্য আরও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে, বিশেষ করে যখন তাদের পরবর্তী প্রতিপক্ষ আরও শক্তিশালী দল হবে। রুবেন আমোরিমের সামনে এখন এক কঠিন পরীক্ষা। তিনি যদি দলের মনোবল শক্ত করতে না পারেন, তবে তার কোচিং জীবনের জন্য এটি একটি বড় ধাক্কা হতে পারে।
এদিকে, বোর্নমাউথের এই বড় জয়ের পর তারা প্রথম পাঁচে উঠে এসেছে, যা তাদের জন্য এক বড় সাফল্য। তাদের খেলার মুগ্ধতায় যে কোনও দলকে ভয় দেখানোর শক্তি রয়েছে, তা এই জয় প্রমাণ করে। এর পাশাপাশি, ম্যাচের শেষে চেলসির বিপক্ষে গোলশূন্য ড্রয়ের পর লিভারপুল শীর্ষস্থানে তাদের অবস্থান ধরে রেখেছে।
এখন ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের সামনে সমর্থকদের আশাভরিত মনোভাবকে সম্মান জানিয়ে তাদের পারফরম্যান্সে ধারাবাহিকতা আনা প্রয়োজন। কোচ রুবেন আমোরিম যদি এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারেন, তবে দলের অদূর ভবিষ্যত আরও উজ্জ্বল হতে পারে। তবে তার আগে, দলকে কঠিন পরিস্থিতি সামলানোর জন্য আরও প্রস্তুত করতে হবে।