শোভাবাজারে মেট্রো লাইনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা!
রবিবার ছুটির দিনে কলকাতার শোভাবাজার মেট্রো স্টেশনে আবারও মেট্রো লাইনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় ব্লু লাইন (দক্ষিণেশ্বর থেকে কবি সুভাষ) মেট্রো পরিষেবা ব্যাহত হয়, এবং প্রায় ৩৫ মিনিটের জন্য দমদম ও সেন্ট্রালের মধ্যে মেট্রো চলাচল বন্ধ ছিল। ঘটনাটি ঘটার পর, দ্রুত মেট্রো কর্তৃপক্ষ স্টেশনটি খালি করে দেয় এবং উদ্ধারকার্য শুরু করে।
মেট্রো রেল সূত্রে জানা গেছে, রবিবার বিকেল ৪টা ১০ মিনিট নাগাদ শোভাবাজার স্টেশনে ডাউন লাইনে এক ব্যক্তি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এর ফলে, মেট্রো পরিষেবায় তীব্র বিঘ্ন ঘটে। স্টেশন থেকে উদ্ধারকর্মীরা তৃতীয় লাইনে বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন করে উদ্ধারকাজ শুরু করেন। ডাউন লাইনে পরিষেবা স্থগিত রাখা হয়, তবে আপ লাইনে মেট্রো চলাচল অব্যাহত ছিল। এই অবস্থায় দমদম ও সেন্ট্রালের মধ্যে প্রায় ৩৫ মিনিট মেট্রো পরিষেবা বন্ধ ছিল, তবে পরবর্তীতে ধীরে ধীরে পরিষেবা স্বাভাবিক হয়।
এ বছর শোভাবাজার মেট্রো স্টেশনে এমন আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনা বেশ কয়েকবার ঘটেছে। এর আগে ১৪ অক্টোবরেও শোভাবাজার স্টেশনে মেট্রো লাইনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন এক ব্যক্তি, যার ফলে ৩০ মিনিট মেট্রো পরিষেবা ব্যাহত হয়। এর পরের মাসেই, ৮ নভেম্বর, শোভাবাজার স্টেশনে আবারও এক ব্যক্তি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন, এবং তখন ৪৫ মিনিটের জন্য দমদম থেকে সেন্ট্রাল স্টেশন পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা বন্ধ ছিল।
মেট্রো কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি কালীঘাট স্টেশনের ডাউন প্ল্যাটফর্মে পাকাপোক্ত গার্ডরেল বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে, যাতে মেট্রো লাইনে আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনা রোধ করা যায়। তবে যাত্রীদের একাংশের দাবি, গার্ডরেলের মধ্যে ব্যবধান এত বেশি, যে তার দ্বারা এই উদ্দেশ্য সফল হওয়া কঠিন। তারা প্রশ্ন তুলেছেন, যদি কেবল কালীঘাট স্টেশনেই গার্ডরেল বসানো হয়, তবে এই পরিকল্পনা কতটা কার্যকরী হবে।
এমন একাধিক আত্মহত্যার চেষ্টা মেট্রো কর্তৃপক্ষের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং মনোরোগ সংক্রান্ত সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। শুধু শারীরিক বাধা নয়, বরং মানসিক সহায়তা ও সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এই ধরনের বিপদজনক ঘটনা রোধ করা সম্ভব হতে পারে।
কলকাতার মেট্রো লাইনে এমন ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় পরিবহন ব্যবস্থা এবং যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। মেট্রো কর্তৃপক্ষ চেষ্টা চালাচ্ছে, কিন্তু এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান পেতে আরও ব্যাপক উদ্যোগের প্রয়োজন।

