রবিচন্দ্রন অশ্বিনের
রবিচন্দ্রন অশ্বিনের অবসর ঘোষণাটি শুধু ক্রিকেটপ্রেমীদেরই নয়, তাঁর পরিবারকেও অবাক করে দিয়েছে। তাঁর অবসর ছিল একেবারে আকস্মিক, যা তাঁর পরিবারের সদস্যদের কাছে এক চরম বিস্ময় ছিল। এই সিদ্ধান্তের পর, যেখানে অশ্বিনের বাবা, রবিচন্দ্রন, তাঁর পুত্রের খেলা দেখতে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন, সেখানে শেষ মুহূর্তে সেই পরিকল্পনা বাতিল করতে হয়।
রবিচন্দ্রন অশ্বিন, ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম তারকা স্পিনার, যিনি দীর্ঘ সময় ধরে দেশের ক্রিকেটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন, তাঁর পুত্রের এই অবসর নিয়ে হতবাক হয়ে পড়েন তাঁর বাবা। কিছুদিন আগেই, বর্ডার-গাওস্কর ট্রফির শেষ দু’টি টেস্ট ম্যাচ দেখতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন রবিচন্দ্রন। মেলবোর্ন এবং সিডনি টেস্টে পুত্রের খেলা দেখতে সেখানে পৌঁছানোর জন্য টিকিটও কেটেছিলেন তিনি।
তবে অশ্বিনের অবসর ঘোষণা শোনার পর শেষ মুহূর্তে সেই টিকিট বাতিল করে দেন রবিচন্দ্রন। এমনকি তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, তাঁর পুত্র অবসর নিতে বাধ্য হয়েছে বারবার অপমানিত হওয়ার কারণে। পরিবারে এই ঘটনায় এক ধরণের অবাক করা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, এবং বিতর্কের ফলে অশ্বিন তাঁর বাবাকে বিরক্ত না করতে অনুরোধ করেছিলেন।
এদিকে, অশ্বিন যখন অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তখন তিনি ব্রিসবেনে দলের সঙ্গে ছিলেন। কিছুক্ষণ আগে অবসর ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত পরিবারের সদস্যদের জানিয়ে দেন। রবিচন্দ্রন সেই মুহূর্তে ঠান্ডা মাথায় ছেলেকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, তবে অশ্বিন জানান যে, তিনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এরপর তিনি জানিয়ে দেন, তিনি মেলবোর্নে দলের সঙ্গে থাকবেন না, এবং সরাসরি চেন্নাই ফিরবেন। ছেলের সিদ্ধান্তের পর, রবিচন্দ্রন আর কোনো কথা না বাড়িয়ে টিকিট বাতিল করে দেন।
অশ্বিনের এই অবসর ঘোষণা যে পুরো পরিবারকেই অবাক করেছে, তা স্পষ্ট। বাবা রবিচন্দ্রন, যিনি অশ্বিনের সঙ্গী হিসেবে অনেকগুলো ম্যাচে মাঠে ছিলেন, এবার তাঁর ছেলে শেষবারের মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নেবার সময় ওই মাঠে উপস্থিত থাকতে পারেননি। এই সিদ্ধান্ত শুধু অশ্বিনের পেশাদারী জীবনের জন্যই নয়, তাঁর পারিবারিক জীবনের জন্যও একটি বড় পরিবর্তন।
এমনকি অশ্বিনের বাবা, যিনি মনে করতেন তাঁর ছেলে হয়তো আরো কিছু সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলবেন, তাঁর অপ্রত্যাশিত এই সিদ্ধান্তকে নিয়ে শোকস্তব্ধ হয়েছেন। তবে এর মধ্যে বিশেষভাবে যে বিষয়টি নজর কাড়ে তা হলো, অশ্বিন নিজেই বুঝেছিলেন, খেলার জীবনে তাঁর কিছু সীমাবদ্ধতা এসেছে এবং নিজের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানানোই সেরা।
এই আকস্মিক অবসর ঘোষণায়, যেখানে অশ্বিনের পরিবার একে অপরকে সহানুভূতির সঙ্গে সমর্থন দিয়েছে, সেখানে তাঁর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারের সমাপ্তি এক নতুন দিগন্তের দিকে নিয়ে যাবে। পরিবার ও ভক্তদের কাছ থেকে অশ্বিনের প্রতি শ্রদ্ধা যেন আরও গভীর হয়ে ওঠে।