খাদান’ নিয়ে দেবের লড়াই
বাংলা সিনেমার সুপারস্টার দেবের (Dev) বহুল প্রতীক্ষিত ছবি ‘খাদান‘ মুক্তির আগে থেকেই চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে। শো-এর অভাব নিয়ে দুপুরে দেবের ক্ষোভ আর রাতের সাফল্যের হাসি যেন এক নাটকীয় গল্পকেই ফুটিয়ে তোলে। দেবের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট এবং তার প্রতিক্রিয়া বাংলা সিনেমাপ্রেমীদের মনে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে।
দেবের ক্ষোভ
বুধবার দুপুরে দেব তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে একটি পোস্ট করেন যা তাঁর ভক্তদের মাঝে আলোড়ন সৃষ্টি করে। দেব লেখেন, “আমি আমার দর্শকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। এখনও ‘খাদান’-এর অগ্রিম বুকিং শুরু করা যায়নি। দয়া করে বিশ্বাস করুন, আমি লড়াই করছি। ছবির শো পাওয়ার জন্য এবং অগ্রিম বুকিং পরিষেবা খুলে দেওয়ার জন্য নিরন্তর চেষ্টা করছি।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলায় অন্যান্য ভাষার ছবির জন্য ‘খাদান’ পর্যাপ্ত প্রেক্ষাগৃহ পাচ্ছে না। তবে আমি কথা দিচ্ছি, আমি চেষ্টা থামাব না। একটু ধৈর্য ধরুন।” দেবের এই পোস্ট বাংলা সিনেমা জগতে প্রেক্ষাগৃহ বিতরণের সংকটের দিকে আঙুল তোলে।
রাতের উত্থান
বিকেলের মধ্যেই পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। দেবের দুপুরের ক্ষোভের জায়গায় রাতে দেখা গেল একটি উচ্ছ্বাসপূর্ণ পোস্ট। তিনি তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করেন, যেখানে দেখা যাচ্ছে ‘খাদান’ ট্রেন্ডিং লিস্টে জায়গা করে নিয়েছে। দেব লেখেন, “সকালে আমি শো-এর জন্য লড়াই করছিলাম। আর রাতে ‘খাদান’ ট্রেন্ডিং। মাত্র ৩ ঘণ্টায় ট্রেন্ডিংয়ে উঠে এসেছে এই ছবি। এটা একটা নতুন যুগের সূচনা। সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।”
‘খাদান’-এর শো-এর পরিস্থিতি
দেবের এই উদ্যোগে বেশ কিছু সিঙ্গল স্ক্রিন এবং মাল্টিপ্লেক্সে ‘খাদান’ জায়গা করে নেয়। উত্তর এবং দক্ষিণ কলকাতার প্রিয়া সিনেমা হল, স্টার থিয়েটার, অশোকা সিনেমা বেহালা, মেনকা সিনেমা, সোনালী-ডানলপসহ বেশ কিছু সিঙ্গল স্ক্রিনে ছবিটির প্রদর্শন শুরু হয়। তবে ‘নন্দন’-এ ছবিটি জায়গা পায়নি, যা কিছু দর্শকের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করেছে।
মাল্টিপ্লেক্সেও ছবিটি ভালো সাড়া পেয়েছে। একাধিক শো-তে জায়গা করে নেয় ‘খাদান’। একটি মাল্টিপ্লেক্সে সর্বাধিক তিনটি শো বরাদ্দ করা হয়।
বাংলা ছবির লড়াই
দেবের ‘খাদান’ এবং যীশু সেনগুপ্ত অভিনীত ‘সন্তান’-এর শো নিয়ে বিতর্ক বাংলা সিনেমার প্রেক্ষাগৃহ সংকটের বিষয়টিকে আরও একবার সামনে নিয়ে আসে। ‘সন্তান’ ছবিটিও দক্ষিণ কলকাতার কোনো সিঙ্গল স্ক্রিনে জায়গা পায়নি। তবে দেবের লড়াই এবং দর্শকদের ভালোবাসা বাংলা ছবির জন্য একটি নতুন দিশার বার্তা বহন করছে।
দেবের বার্তা
এই ঘটনার মাধ্যমে দেব স্পষ্ট করে দেন যে বাংলা সিনেমা তার নিজস্ব জায়গা পাওয়ার জন্য লড়াই করতে প্রস্তুত। তাঁর কথায়, “দর্শকরা যদি পাশে থাকেন, বাংলা ছবি আরও এগিয়ে যাবে। আমাদের লড়াই চলবেই।”
দেবের এই লড়াই এবং ‘খাদান’-এর সাফল্য প্রমাণ করে যে বাংলা সিনেমার প্রতি দর্শকের ভালোবাসা এবং সমর্থন যথেষ্ট। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা, ‘খাদান’ দর্শকদের মনে কতটা জায়গা করে নিতে পারে।

