সোমবার সকালে দিল্লির ৪০টিরও বেশি স্কুলে বোমাতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তি ইমেলের মাধ্যমে জানায়, স্কুল চত্বরে ছোট ছোট বোমা লুকিয়ে রাখা হয়েছে। সেই বোমা নিষ্ক্রিয় করার জন্য দাবি করা হয়েছে ২৫ লাখ টাকার সমপরিমাণ অর্থ। ঘটনাটি দ্রুত পুলিশ ও দমকলের নজরে এলে শুরু হয় তদন্ত।
ঘটনাটির সূত্রপাত
রবিবার গভীর রাতে স্কুলগুলির ইমেল ঠিকানায় হুমকি পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, স্কুল চত্বরে বোমা লুকানো হয়েছে। ইমেল প্রেরক জানায়, বোমাগুলি ফাটলে স্কুল ভবনের বড় ক্ষতি না হলেও অনেকে আহত হবেন। বিষয়টি সোমবার সকালে স্কুল খোলার সময় কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। সঙ্গে সঙ্গেই অভিভাবকদের জানিয়ে পড়ুয়াদের বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়।
দুই স্কুলে সরাসরি প্রভাব
দিল্লির আরকে পুরম এবং পশ্চিম বিহারের দুটি স্কুলে বোমাতঙ্ক সবচেয়ে তীব্র ছিল। এই দুটি স্কুলে পড়ুয়াদের দ্রুত সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়, এবং নিরাপত্তার স্বার্থে ক্লাস বন্ধ রাখা হয়। স্কুল চত্বরে তল্লাশি চালাতে পুলিশ ও বম্ব স্কোয়াড মোতায়েন করা হয়।
তদন্তে পুলিশ
দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে যে ৪০টিরও বেশি স্কুলে একই ধরনের হুমকি ইমেল পাঠানো হয়েছে। যদিও এই তালিকার অধিকাংশ স্কুলের নাম এখনও প্রকাশ্যে আসেনি। পুলিশ ইমেলের আইপি অ্যাড্রেসের সূত্র ধরে প্রেরককে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।
প্রেরকের দাবি
ইমেলে হুমকি দেওয়া ব্যক্তির দাবি, ৩০ হাজার মার্কিন ডলার (প্রায় ২৫ লাখ টাকার সমপরিমাণ অর্থ) দেওয়া হলে বোমাগুলি নিষ্ক্রিয় করা হবে। অন্যথায় বোমা ফাটিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। তবে এই হুমকি সত্যি নাকি এটি ভুয়ো, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
অতীতের প্রেক্ষাপট
দিল্লিতে স্কুলে বোমা হুমকির ঘটনা নতুন নয়। কিছুদিন আগেই প্রশান্ত বিহারের একটি স্কুলে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল। সেই ঘটনার পর রোহিণীর একটি স্কুলেও বোমাতঙ্ক দেখা দিয়েছিল। যদিও পরে সেসব ক্ষেত্রে পুলিশ তল্লাশি চালিয়েও কোনও সন্দেহজনক বস্তু খুঁজে পায়নি।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে
বোমাতঙ্কের ঘটনায় দিল্লি জুড়ে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হলেও পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। স্কুলগুলিতে সতর্কতামূলক তল্লাশি চালানো হচ্ছে। পুলিশ নিশ্চিত করেছে, যতক্ষণ না তদন্ত শেষ হচ্ছে, ততক্ষণ কোনও ঝুঁকি নেওয়া হবে না।
অভিভাবকদের উদ্বেগ
এই ঘটনার পর অভিভাবকদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। অনেকেই তাঁদের সন্তানদের স্কুলে পাঠানো নিয়ে আতঙ্কিত। প্রশাসন স্কুলগুলিতে নিরাপত্তা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং অভিভাবকদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছে।
পরবর্তী পদক্ষেপ
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, ইমেলের প্রেরককে চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যেই সাইবার ক্রাইম শাখার বিশেষ দল তদন্তে নেমেছে। পাশাপাশি স্কুলগুলিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
দিল্লির এই ঘটনার ফলে শিক্ষাঙ্গনের নিরাপত্তা নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশ ও প্রশাসন এখন এই সংকট সামাল দিতে ব্যস্ত, তবে ঘটনাটির পেছনের আসল সত্য উদ্ঘাটন করতে আরও সময় লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।